নাটোরের বড়াইগ্রামে শিশুর লাশ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রহস্য উদ্ঘাটনের তথ্য দিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে মিনহাজ হোসেন আবির (১০) নামে ওই শিশুটির লাশ উদ্ধার হয়। উপজেলার মহিষভাঙ্গা ইউনিয়নের বনপাড়া পাটোয়ারী ফিলিং স্টেশনের কাছে নির্মাণাধীন মসলা মিলের ফাঁকা মাঠে পড়ে ছিল তার লাশ। 

শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশ জানিয়েছে, মোবাইল ফোনে ফ্রি ফায়ার গেম নিয়ে দ্বন্দ্বের একপর্যায়ে শিশুটিকে মাথায় আঘাত করে তারই বন্ধু। এতেই মারা যায় সে।
 
নিহত মিনহাজ হোসেন আবির মহিষভাঙ্গার কাতার প্রবাসী মিলন হোসেনের একমাত্র সন্তান। সে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তো বনপাড়া আদিব ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে। অভিযুক্ত শিশুটিও (১২) একই গ্রামের বাসিন্দা। সে স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।

আবিরের স্বজনরা জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে আবির তার বাবার স্মার্টফোন ও বাইসাইকেল নিয়ে বের হয়। সন্ধ্যার পরও সে না ফেরায় বড়াইগ্রাম থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি  করেন তার বাবা মিলন হোসেন। পরে রাতেই স্বজনরা বনপাড়া পাটোয়ারী ফিলিং স্টেশনের কাছে নির্মাণাধীন মসলা মিলের মাঠে রক্তমাখা সাইকেল ও স্যান্ডেল দেখতে পান। পরে তল্লাশি চালিয়ে গাছের শুকনো পাতা দিয়ে লুকিয়ে রাখা মরদেহ পাওয়া যায়।

নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) শোভন চন্দ্র হোড় শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে আবির তার ওই বন্ধুর (১২) সঙ্গে বসে মোবাইল ফোনে ফ্রি ফায়ার গেম খেলছিল। খেলাকে কেন্দ্র করে দু’জনের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ওই শিশুটি রেগে উঠে পাশে থাকা ইট দিয়ে আবিরের মাথায় বারবার আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় আবির। এ সময় পাশেই থাকা শুকনা গাছের পালার নিচে মরদেহ লুকিয়ে মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় ওই শিশু। শুক্রবার সকালে পুলিশ তাকে আটক করে। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদে সে আবিরকে হত্যার কথা স্বীকার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়।

এ বিষয়ে বড়াইগ্রাম থানার ওসি গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে পুলিশ অভিযুক্ত শিশুটিকে গ্রেপ্তার করেছে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আবিরের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে শুক্রবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে বনপাড়া পৌরসভার মহিষভাঙ্গা কবরস্থানে আবিরের দাফন সম্পন্ন হয়। তার বাবা মিলন হোসেন ঈদের ছুটিতে দেশে ফিরেছিলেন। এভাবে একমাত্র সন্তান হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন তিনি। মিলন বলেন, ‘বছরখানেক পর ছেলেকে জড়িয়ে সময় কাটানোর জন্য দেশে ফিরেছিলাম। বৃহস্পতিবার বিকেলে সে আমার মোবাইল ফোন আর সাইকেল নিয়ে বের হয়েছিল। ভাবিনি, এটাই হবে আমাদের শেষ দেখা।’

মিলন বলেন, ‘আমার আবির কোনো অন্যায় করেনি– শুধু মোবাইল ফোনে একটা গেম খেলত। একটা গেম, সামান্য রাগ, আর এক মুহূর্তের ভুল–আমার বুক থেকে ওকে চিরতরে কেড়ে নিল। আমি কিছুই চাই না আর, শুধু চাই– আর কোনো বাবার বুক যেন খালি না হয়। মোবাইলের আসক্তি থেকে আমাদের সন্তানদের রক্ষা করা এখনই সবচেয়ে জরুরি। সন্তানকে সময় দিন, ভালোবাসুন। কারণ সুযোগ হারালে কিছুই আর ফিরে আসে না।’
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ক রব র বনপ ড়

এছাড়াও পড়ুন:

মাগুরায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-মেয়ের মৃত্যু

মাগুরা সদর উপজেলার টিলা গ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। 

বুধবার (২৫ জুন) সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন—টিলা গ্রামের বাসিন্দা আওয়াল মিয়ার স্ত্রী সেতু খাতুন (৩৫) ও তাদের ৮ মাস বয়সী কন্যা আনিসা।

স্বজনরা জানিয়েছেন, সেতু খাতুন বৈদ্যুতিক রাইস কুকারে ভাত রান্না করছিলেন। হঠাৎ করে তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। এ সময় পাশে থাকা শিশু আনিসা কাছে গেলে সেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। স্বজনরা দুজনকে উদ্ধার করে দ্রুত মাগুরা সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন।

আরো পড়ুন:

রামেক হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু

ডোমারে বজ্রপাতে স্কুলছাত্র নিহত, আহত ৩

মাগুরা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ওমর ফারুক বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ঢাকা/শাহীন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাগুরায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-মেয়ের মৃত্যু