২৫ বছরে ৪৭তম ইনিংস ব্যবধানে হার বাংলাদেশের
Published: 28th, June 2025 GMT
তৃতীয় দিনেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল কলম্বো টেস্টের সাম্ভাব্য ফল। বাংলাদেশ আরেকটি ইনিংসটি ব্যবধানে হারের দ্বারপ্রান্তে। শনিবার চতুর্থ দিন কতটুকু লড়াই করতে পারে, পরাজয়ের ব্যবধান কমাতে পারে সেটাই ছিল দেখার।
এজন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি অবশ্য। অসহায় আত্মসমর্পণে শ্রীলঙ্কাকে সাত সকালেই জিতিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। লিটন, নাঈম, ইবাদত, তাইজুলদের আসা-যাওয়ার মিছিলে শ্রীলঙ্কা তুলে নিয়েছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ চক্রের প্রথম সাফল্য। মাত্র ৩৪ বলেই ম্যাচের ফল নিজেদের করে নেয় শ্রীলঙ্কা।
বাংলাদেশ পেয়েছে আরেকটি ইনিংস ব্যবধানে হারের বিব্রতকর অভিজ্ঞতা। দুদিন আগেই বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাস প্রাপ্তির ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বড় আয়োজনে টেস্ট স্ট্যাটাস প্রাপ্তির রজতজয়ন্তী উদযাপন করেছে।
আরো পড়ুন:
শ্রীলঙ্কার ওয়ানডে দল ঘোষণা, চমক হিসেবে নতুন মুখ
চতুর্থ দিনেই ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কায় বাংলাদেশ
দুদিন পরই বিব্রতকর হারকে সঙ্গী করলেন শান্ত, মুশফিকুর, লিটনরা। সব মিলিয়ে ২৫ বছরে এটি বাংলাদেশের ৪৭তম ইনিংস ব্যবধানে হার। ইনিংস ব্যবধানে তিনটি জয়ের রেকর্ড আছে বাংলাদেশের।
টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তির প্রথম ২৫ বছরে বাংলাদেশের জয় মাত্র ২৩টি। এখন পর্যন্ত ১৫৫ ম্যাচে ১১২টিই হেরেছে তারা। জয়-পরাজয়ের বিচারে বাংলাদেশের অবস্থা নাজুক। সেখানে ইনিংস ব্যবধানে হার এখন ৪৭টি।
ইনিংস ব্যবধানে পরাজয়ের তালিকায় বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে চারটি দেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪৮, নিউ জিল্যান্ড ৫০ এবং ইংল্যান্ড ৬৬ ম্যাচে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে। বাংলাদেশের উপরে আছে ছয় দেশ। জিম্বাবুয়ে ৩০, পাকিস্তান ৩৪, দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৯, শ্রীলঙ্কা ৪২, অস্ট্রেলিয়া ৪৬ এবং ভারত ৪৬ ম্যাচে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে।
টেস্ট খেলুড়ে ১১টি প্রতিপক্ষের মধ্যে নয়টির বিপক্ষেই ইনিংস ব্যবধানে হারের নজির আছে বাংলাদেশ দলের। শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বোচ্চ নয়বার ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সংখ্যাটা গিয়ে ঠেকেছে আটে।
এছাড়া পাকিস্তানের কাছে ছয়বার ও ভারতের কাছে পাঁচবার এই অভিজ্ঞতা হয়েছে লাল সবুজের প্রতিনিধিদের। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ তিনবার করে ইনিংস ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ে একবার বাংলাদেশকে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়েছে। কেবল দুই নতুন সদস্য আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের বিপরীতে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত অভিজ্ঞতা নেই তাদের।
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ২৫ বছর যবধ ন
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন বন্ধ করতে হবে
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে রাজনৈতিক কর্মসূচি করা নতুন নয়। বিগত সময়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এমন দলীয় কর্মসূচি আমরা দেখেছি। এ নিয়ে একাধিকবার সম্পাদকীয়ও প্রকাশ করেছে প্রথম আলো। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও সেই নেতিবাচক সংস্কৃতি পাল্টাল না। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রেখে বিএনপি রাজনৈতিক কর্মসূচি করেছে। এমন রাজনৈতিক আচরণ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, চার ইউনিয়নের বিএনপির সম্মেলনের জন্য মঙ্গলবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ রাখা হয়। বক্সগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপি সম্মেলনের জন্য একই আঙিনায় থাকা তিনটি প্রতিষ্ঠান বক্সগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়, বক্সগঞ্জ আলিম মাদ্রাসা ও বক্সগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ ছিল। আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের সম্মেলনের জন্য ভোলাইন বাজার স্কুল অ্যান্ড কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এই সম্মেলনের মাইকের আওয়াজের কারণে পাশের ভোলাইন বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদানও বন্ধ ছিল। বটতলী ইউনিয়নের সম্মেলনের জন্য বটতলী এম এ মতিন উচ্চবিদ্যালয় ও বটতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ ছিল। আর জোড্ডা ইউনিয়নের সম্মেলনের জন্য জোড্ডা বাজার পাবলিক উচ্চবিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ ছিল।
এ ঘটনার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁদের বক্তব্য হচ্ছে, বিকল্প কোনো জায়গায় চাইলে এ রাজনৈতিক কর্মসূচি করা যেত। কিন্তু রাজনৈতিক নেতাদের কাছে শিশুদের শিক্ষার অধিকারের বিষয়টি উপেক্ষিতই থেকে গেছে। বলতেই হচ্ছে, রাজনৈতিক সম্মেলনের জন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা মানে সরাসরি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার অধিকারে হস্তক্ষেপ করা। মাইকের উচ্চ শব্দ, বিপুলসংখ্যক নেতা–কর্মীর আনাগোনা এবং নিরাপত্তার অভাবের মতো কারণ দেখিয়ে ছুটি ঘোষণা করা হলেও এর মূল কারণ রাজনৈতিক চাপ এবং প্রভাব। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা দায় এড়াতে তাঁদের হাতে থাকা ‘বিশেষ ছুটি’ প্রয়োগের কথা বললেও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বক্তব্য থেকে বোঝা যায় যে এটি কোনো নিয়মতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত ছিল না। এটি প্রমাণ করে, রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষায় শিক্ষা ও নিয়মনীতিকে সহজেই উপেক্ষা করা হয়।
এমন রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে শিক্ষার্থীদের মনেও একটি ভুল বার্তা যায় যে তাদের পাঠদানের চেয়ে রাজনীতি গুরুত্বপূর্ণ। রাজনীতি থেকে শিক্ষা গুরুত্ব হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টিও এমন ঘটনায় প্রতীয়মান হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মানসিকতার পরিবর্তন আসবে, এমনটিই আমাদের প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে রাজনৈতিক কর্মসূচি চালানোর মতো ঘটনা আমাদের হতাশ করে। আমরা আশা করব, বিএনপি এ ব্যাপারে দলীয় ব্যবস্থা নেবে। আর সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান থাকবে, এ ব্যাপারে সবাই সচেতন হবে।