হবিগঞ্জের মাধবপুরে সরকারি মাধ্যমিক ও দাখিল মাদ্রাসার মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে ‘এসএম ফয়সল শিক্ষাবৃত্তি’ দেওয়া হয়েছে। শনিবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার সায়হাম কটন মিলের মাল্টিপারপাস হলরুমে এই শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এ দিন বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মেধা তালিকা অর্জনকারী ৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৯ লাখ টাকা আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হয়।

আয়োজকরা জানান, দেশের অন্যতম বৃহৎ পরিবেশ বান্ধব সায়হাম শিল্প কারখানার চেয়ারম্যান শিল্পপতি সৈয়দ মো.

ফয়সলের উদ্যোগে গত কয়েক বছর ধরে মাধবপুর উপজেলার মাধ্যমিক ও দাখিল মাদ্রাসার মেধাবী গরিব শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। এর ধারাবাহিতায় শনিবার সকাল ১১টায় নোয়াপাড়া সায়হাম মাল্টিপারপাস হলরুমে এসএম ফয়সল শিক্ষাবৃত্তি প্রদান-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়। মাধবপুর মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সায়হাম গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. ফয়সল। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. শাহজাহান, সায়হাম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সৈয়দ মো. ঈশতিয়াক আহমেদ, ইউপি চেয়ারম্যান পারভেজ হোসেন চৌধুরী ও ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ আতাউল মোস্তাফা সোহেল।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে এসএম ফয়সল মেধাবৃত্তির স্বপ্নদ্রষ্টা সৈয়দ মো. ফয়সল বলেন, ‘আধুনিক বিশ্বায়নের যুগে এখন মেধা ও কর্মের প্রতিযোগিতা হচ্ছে। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে মাথা উঁচু করে ঠিকে থাকতে হলে মানসম্পন্ন লেখাপড়া করতে হবে। কোনো মেধাবী ও দরিদ্র ছেলেমেয়ের যাতে অর্থের অভাবে পড়াশোনা বন্ধ না হয় সেদিকে আমাদের সহায়তা অব্যাহত থাকবে। আমরা চাই, বর্তমান প্রজন্মের হাত ধরে বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে। অসৎ সঙ্গ ও মাদক থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ, মাদক জীবন ধ্বংস করে দেয়, এটি জাতির শক্র।’ এ সময় সবকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিনি খেলাধুলার সামগ্রী প্রদানের ঘোষণা দেন।

মো. ফয়সল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, ‘জনগণের সম্পদ লুট করা যাবে না। দুর্নীতি-চাঁদাবাজিকে বয়কট করতে হবে।’

আজ ৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ৯ লাখ টাকা শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করা হয়। এবার উপজেলার ৩২ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বৃত্তির জন্য সর্বমোট ৩২ লাখ টাকা প্রদান করা হচ্ছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম ধবপ র ফয়সল শ ক ষ ম ধবপ র ম ফয়সল উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ