জব্দ বালু প্রকাশ্যে লুট পাল্টাপাল্টি দোষারোপ
Published: 28th, June 2025 GMT
অবৈধভাবে উত্তোলন করা বালু জব্দের পর প্রশাসনের হেফাজতে থাকা সেই বালুও প্রকাশ্যে লুট করা হচ্ছে। সেটি নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট তৎপরতা নেই দায়িত্বশীলদের। জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার এ ঘটনা সম্পর্কে স্থানীয়রা জানান, প্রশাসনের চোখের সামনে জব্দ করা বালু লুটে নিচ্ছে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী একটি চক্র।
অভিযোগ রয়েছে এই চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা বিএনপির এক নেতা। পরে খোঁজ নিতে গিয়ে দলটির অপর এক নেতার বরাতে তথ্য মেলে, চক্রের নেতৃত্বে থাকা সেই ব্যক্তি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক রাজু আহমেদ। তাঁর বলয়ের প্রভাব খাটিয়েই চক্রটি সরকারি বালু লুটে নিচ্ছে কোনো বিধিনিষেধ গ্রাহ্য না করে।
এদিকে এমন অভিযোগের কথা অস্বীকার করে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক রাজু আহমেদ বলেন, ‘এসব অভিযোগ সত্য নয়। বরং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দলের ভেতরের বা বাইরের কেউ অবৈধ কিছু করতে গেলে বাধা দিচ্ছি। সেজন্যই উল্টো আমাকে বিতর্কিত করতে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।’
অভিযোগকারীরা জব্দের বালু উত্তোলনে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়কের ঘনিষ্ঠ উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক সৈয়দ রমিজ উদ্দিন ও তাঁর আত্মীয়স্বজনের নামও জানান। সৈয়দ রমিজ উদ্দিন বলেন, জব্দের বালু ওখানে আছে বলেই জানি না আমি। আমার আত্মীয়স্বজন কেউ এই কাজেও জড়িত নয়।
সূত্রের তথ্যমতে, প্রশাসনের হেফাজতে থাকা ১ লাখ ৮০ হাজার ঘনফুট বালুর বাজার মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। তথ্য অনুসারে সুনামগঞ্জ জেলাধীন এই উপজেলা পরিদর্শনে গিয়ে পাহাড়ি নদী ধামালিয়ার তীর থেকে অনুমোদনহীন বেপরোয়া বালু উত্তোলনের দৃশ্য নজরে পড়ে।
উপজেলার এই নদীটির বড় একটি অংশ ভরাট হয়ে গেছে আগেই। সেই অংশটি পরিণত হয়েছে বালুর খনিতে। নদীর কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভরাট ওই অংশে কয়েক কোটি টাকার বালুর মজুত রয়েছে বলে ধারণা স্থানীয় বাসিন্দাদের।
এ ছাড়া নদীর যে অংশটুকু এখনও অস্তিত্ব ধরে রেখেছে শুষ্ক মৌসুমে সেটিও শুকিয়ে যায়। তলদেশ শুকিয়ে যাওয়ায় সেখানে বালুর স্তূপ জমে। নদী-তীরবর্তী জলিলপুরসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা অবৈধভাবে সেই বালু উত্তোলন করে স্তূপ করে রেখেছেন। প্রতিটি স্তূপে রয়েছে কয়েক লাখ ঘনফুট বালুর মজুত।
দুই মাস আগে উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে এসব বালু জব্দ করে। সরকারি হিসাবে জব্দকৃত এই বালুর পরিমাণ এক লাখ ৮০ হাজার ঘনফুট। টাকার অঙ্কে এই বালুর দাম দেড় কোটি টাকারও বেশি বলে জানানো হয়। তবে জব্দকৃত বালু নিলামের কোনো উদ্যোগ নেয়নি প্রশাসন।
সম্প্রতি নদীতে পানি এলে স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায় বালুখেকো চক্রের সদস্যরা বাল্কহেড, ট্রলার, ট্রাক ভরাট করে এসব বালু নিতে শুরু করে। এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, গ্রামের লোকজন বালু বহনকারী নৌকা-বাল্কহেড আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলেও তাদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। গত সপ্তাহে উপজেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ প্রসঙ্গে সরব হন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছবাব মিয়া। তিনি বালু বিক্রিতে নিলামের ব্যবস্থা না করায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
বুধবার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা জানা যায়, ২২ জুন চারটি বাল্কহেডে করে জব্দের বালু নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা বালুখেকোদের আটক করতে পুলিশে খবর দেন। পরে বিশ্বম্ভরপুর থানার এসআই মুজিবুর রহমান ঘটনাস্থলে এসে এই বাল্কহেডগুলো জব্দ করেন। পরে বসন্তপুর গ্রামের বকুল মিয়ার হেফাজতে দেওয়া হয় সেগুলো। জিম্মাদার হিসেবে বকুলের স্বাক্ষরও নেয় পুলিশ। এর কিছুক্ষণ পরেই চক্রের লোকজন এসে বালুসহ বাল্কহেড নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় বকুল মিয়া জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, তাঁকে আটককরা বালুসহ বাল্কহেডের জিম্মাদার করে পুলিশ। এরপর পুলিশের সামনে দিয়েই সেগুলো নিয়ে যাওয়া হয়। বকুল মিয়া বলেন, ভরাট হওয়া ধামালিয়ার পারের জলিলপুর গ্রামের প্রতিটি বাড়ির পেছনে বালু স্তূপ করে রাখা আছে। এসব বালু উপজেলা প্রশাসন জব্দও করেছে। একটি চক্র এই বালু নদীপথে নিয়ে যাচ্ছে।
হালাবাদি গ্রামের বাসিন্দা আল-আমিনসহ অন্যদের প্রশ্ন, প্রশাসনের হেফাজতে থাকা বালু কীভাবে লুট হয়? এটি বন্ধে কার্যকর কোনো উদ্যোগও দেখা যাচ্ছে না তাদের। উল্টো সিন্ডিকেটের হুমকি-ধমকি সহ্য করতে হচ্ছে।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম খন্দকার বলেন, জব্দকৃত বালু লুটপাটের প্রতিবাদ করায় তাঁকে হুমকি দিয়েছেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক রাজু আহমেদ। কয়েকদিন আগে বালুবোঝাই কয়েকটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা আটকিয়ে পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন তিনি। পরে জানতে পারেন সেগুলো উপজেলা বিএনপি নেতা রাজু আহমেদের।
এর জবাবে রাজু আহমেদ বলেন, বালু লুটপাটসহ সব অবৈধ কাজ বন্ধে তিনি প্রশাসনকে সহযোগিতা করেন। এখানে রাজনীতির কাটাকাটি চলছে। নদী থেকে যারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করেছে, তারা আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তারাই বিএনপির সুবিধাভোগীদের সঙ্গে সিন্ডিকেট গড়ে বালু লুট করছে।
বিএনপির আহ্বায়ক রাজু আহমেদ বলেন, বিশ্বম্ভরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ জব্দের বালু ছাড়াতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন। সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ জানান, জব্দের বালু লুট নয়, নিলাম দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
বিশ্বম্ভরপুর থানার এসআই মজিবুর রহমান বলেন, ২২ জুন রাতে অন্য ডিউটিতে ছিলেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জানতে পারেন বসন্তপুর এলাকায় কিছু লোক বালুভর্তি নৌকা নিয়ে যাচ্ছেন। পরে ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। সেগুলো আটক করে বকুল মিয়ার জিম্মায় দিয়ে চলে আসেন। পরে জানতে পারেন নৌকাগুলো চলে গেছে।
বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ছবাব মিয়া বলেন, এক লাখ ৮০ হাজার ঘনফুট বালুর দাম কমপেক্ষ দেড় কোটি টাকা। সরকারি এই বালু লুটপাট যাতে না হয়, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা সভায় কথা বলেছেন। ইউএনও মফিজুর রহমান বলেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাতৃত্বকালীন ছুটিতে। জানতে পেরেছেন জব্দ করা বালু কারা নিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বক ল ম য় উপজ ল র ন উপজ ল এই ব ল ব দ কর ঘনফ ট আহম দ
এছাড়াও পড়ুন:
রেহানা, টিউলিপ, আজমিনা ও রাদওয়ানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু
পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিন মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের (ববি) বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
দুর্নীতির দমন কমিশনের (দুদক) করা এই তিন মামলায় আজ বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এ এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) তরিকুল ইসলাম।
টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি)। তিনি দেশটির সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’। তিনি এখন বাংলাদেশে বিচারের মুখোমুখি।
এর আগে গত ১১ আগস্ট প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের অপর তিন মামলায় শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।
পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের করা পৃথক ছয় মামলায় শেখ হাসিনা, তাঁর পরিবারের সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে গত ৩১ জুলাই অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার দুই বিশেষ জজ আদালত। এর মধ্যে তিন মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১১ আগস্ট তারিখ ধার্য করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন। বাকি তিন মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১৩ আগস্ট তারিখ ধার্য করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মো. রবিউল আলম।
আরও পড়ুনপ্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু১১ আগস্ট ২০২৫মামলায় শেখ হাসিনা পরিবারের বাইরে যে ১৬ জন অভিযুক্ত হয়েছেন, তাঁরা হলেন জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, গণপূর্তের তৎকালীন সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিয়া, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য কবির আল আসাদ, সদস্য তন্ময় দাস, সদস্য নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার।
আরও পড়ুনটিউলিপের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব রয়েছে১১ ঘণ্টা আগেদুদকের পিপি খান মো. মইনুল হোসেন সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, রাজউকের সংশ্লিষ্ট বিধান অনুযায়ী, ঢাকায় যাঁদের প্লট-গাড়ি-বাড়ি কিছুই নেই, তাঁরা মূলত সংস্থার প্লট বরাদ্দের জন্য আবেদন করতে পারেন। কিন্তু শেখ হাসিনার পরিবার রাজউকের কাছে মিথ্যা হলফনামা দেয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, তাঁদের ঢাকা শহরে জমি-বাড়ি কোনো কিছুই নেই। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, শেখ হাসিনা পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের নামে বাড়ি-জমি-গাড়ি সবই আছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাঁরা রাজউকের ৬০ কাঠার প্লট নিয়েছেন, যা অপরাধ। অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গসহ অন্যান্য অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
আরও পড়ুনশেখ হাসিনা-রেহানা-টিউলিপসহ ২৩ জনকে আদালতে হাজিরে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির নির্দেশ০১ জুলাই ২০২৫দুদকের পিপি মীর আহমেদ আলী সালাম সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের ছয় মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্যদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পরে মামলাগুলো বিচারের জন্য দুটি বিচারিক আদালতে বদলির আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত।
শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে ২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ছয় মামলায় গত ১০ মার্চ অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে: দুদক চেয়ারম্যানআমাকে হয়রানির জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে: টিউলিপটিউলিপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ আদালতের বিষয়, তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ নয়: মুহাম্মদ ইউনূস