দুর্গাপুরের দৃষ্টিনন্দন তাল সড়ক
Published: 25th, November 2025 GMT
২ / ৯তাল সারির সড়কে রোদ আর ছায়ার খেলা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দিনাজপুরে মৃত প্রাণীদের জাদুঘর
স্থিরদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ‘মাছরাঙা’। এই বুঝি ছোঁ মেরে পানি থেকে তুলে আনবে কাঙ্ক্ষিত শিকার। গাছের মধ্যে ঠোকর দেওয়ার ভঙ্গিতে দাঁড়ানো ‘কাঠঠোকরা’। মাথা ঝুঁকিয়ে খাবার খাচ্ছে দুটি ‘চড়ুই’। গলা উঁচিয়ে দাঁড়ানো ‘ধলা বালিহাঁস’। আর ওদিকে গুটি গুটি পায়ে হাঁটার ভঙ্গিমায় ‘দেশি কানিবক’। হঠাৎ ‘ভুবনচিলের’ আগমনে মুহূর্তেই যেন স্থির হলো সবকিছু।
এমন বিভিন্ন প্রজাতির ১৬৬টি পাখি নিজের ভঙ্গিমায় বসে কিংবা দাঁড়িয়ে আছে। দেখে মনে হতে পারে, পাখিদের মেলা বসেছে। পাশে দাঁড়ানো কুকুর, শিয়াল ও বেজি দেখে একটুও ভয় পাচ্ছে না পাখিগুলো। কারণ, কারও মধ্যেই প্রাণ নেই!
এমন চার শতাধিক মৃত প্রাণীর দেখা মিলবে দিনাজপুর সরকারি কলেজে। তাদের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের একটি কক্ষে করা হয়েছে ট্যাক্সিডার্মি জাদুঘর। এর অর্থ হলো এখানে মৃত প্রাণীর চামড়া রাসায়নিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করে একটি কৃত্রিম কাঠামোর ওপর জীবন্ত প্রাণীর মতো উপস্থাপন করা হয়। বলা চলে, এটি মৃত প্রাণীর জাদুঘর।
১৯৫৭ সালে ধর্ম প্রচারের কাজে দিনাজপুরে আসেন ইতালির নাগরিক গিওভ্যানি বারবে। তিনি দিনাজপুরে মিশনারি পরিচালিত সেন্ট যোসেফ স্কুলের পরিচালকের দায়িত্ব পান। তিনি ছিলেন ধর্মযাজক ও শৌখিন প্রকৃতিবিদ।
দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক বছর পর গিওভ্যানি বারবে দিনাজপুর শহরের সেন্ট ফিলিপস হাইস্কুলের বিশপ হাউসে ট্যাক্সিডার্মি জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠা করেন। সহকর্মী ও স্থানীয় সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে তিনি ফিলিপাইন, পাকিস্তানের করাচি ও বাংলাদেশের পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুরের বীরগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে জাদুঘরে সংরক্ষণ করেন। ১৯৭২ সালে তিনি ইতালিতে ফিরে যান। এরপর অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকে জাদুঘরটি।
ট্যাক্সিডার্মি জাদুঘর হলো যেখানে মৃত প্রাণীর চামড়া রাসায়নিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করে একটি কৃত্রিম কাঠামোর ওপর জীবন্ত প্রাণীর মতো উপস্থাপন করা হয়। বলা চলে, এটি মৃত প্রাণীর জাদুঘর।১৯৮৬ সালে সেন্ট ফিলিপস হাইস্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের। এত দুর্লভ ও মূল্যবান সম্পদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যাওয়ার খবরটি পান দিনাজপুর সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের তৎকালীন শিক্ষক ও অধ্যক্ষ রেজাউল হক। তিনিসহ অন্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আপত্তি তোলেন। নিয়ে আসেন দিনাজপুর সরকারি কলেজে।
জাদুঘরের পশ্চিম দেয়াল ঘেঁষে আছে একটি আলমারি। উচ্চতা ২২ ফুট, দৈর্ঘ্য ৩০ ফুট। এখানে পরিচিত পাখির পাশাপাশি বিলুপ্ত তিলানাগ, বড় কুবো, নীল শির, গৃহবাসী বাতাসি, মেটে লটোড়া, তিলা মুনিয়া, আবাবিল, মোহনচূড়া, নিরলঠুঁটি ধনেশ, নীলকণ্ঠসহ বিভিন্ন প্রজাতির ১৬৬টি পাখি আছে।
পাখির পাশাপাশি জাদুঘরে কাঁচের বোতলে ফরমালিন দিয়ে রাখা হয়েছে বিভিন্ন প্রাণী। দিনাজপুর সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগে ট্যাক্সিডার্মি জাদুঘরে