বাউলদের ওপর হামলাকারী ও উসকানিদাতাদের আইনের আওতায় আনতে হবে: এনসিপি
Published: 24th, November 2025 GMT
মানিকগঞ্জে বাউলশিল্পী আবুল সরকারের সমর্থকদের ওপর সংঘটিত হামলা, ধাওয়া ও ভীতি প্রদর্শনের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ধর্ম ও সম্প্রীতি সেল। তারা বলেছে, মানিকগঞ্জের ঘটনার নিরপেক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত নিশ্চিত করে হামলাকারী ও উসকানিদাতাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। অভিযোগ বা মতভিন্নতার সমাধান হবে আইন, ন্যায়বিচার ও শান্তিপূর্ণ সংলাপের মাধ্যমে, কোনোভাবেই জনতা বা গোষ্ঠীর হাতে নয়।
আজ সোমবার এক বিবৃতিতে এনসিপির পক্ষ থেকে এ কথা বলা হয়। দলের পক্ষ থেকে এই বিবৃতি পাঠিয়েছেন এনসিপির ধর্ম ও সম্প্রীতি সেলের সম্পাদক তারেক রেজা।
এনসিপির ধর্ম ও সম্প্রীতি সেলের বিবৃতিতে বলা হয়, মানিকগঞ্জে বাউলশিল্পী আবুল সরকারকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে তাঁর সমর্থকদের ওপর সংঘটিত হামলা, ধাওয়া ও ভীতি প্রদর্শনের ঘটনাকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ধর্ম ও সম্প্রীতি সেল গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করেছে এবং দৃঢ়ভাবে নিন্দা জানাচ্ছে। যে মতবিরোধ বা অভিযোগই থাকুক—সহিংসতা, হয়রানি বা আইনহীনতার কোনো বৈধতা নেই৷
এনসিপি বলেছে, ‘বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যে বাউল, ফকির, সুফি, তাসাউফপন্থীসহ বিভিন্ন ধারার সমৃদ্ধ অবদান রয়েছে। এই বৈচিত্র্য রক্ষা করা মানে আমাদের মানবিক রাষ্ট্রচিন্তা ও ঐতিহাসিক সম্প্রীতির ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। বাংলাদেশটা সবার—এখানে ভিন্নমতকে দমন নয়, বরং শোনা ও বোঝার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
এনসিপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘ধর্মীয় মত বা ব্যাখ্যা নিয়ে ভিন্নতা থাকতেই পারে এবং কখনো কখনো তা বিতর্কেরও সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু তার উত্তরের পথ কখনোই সহিংসতা বা প্রতিশোধ হতে পারে না। এ দেশের দায়িত্বশীল আলেম সমাজ যুগের পর যুগ যে শান্তিপূর্ণ দাওয়াত, ধৈর্য, প্রজ্ঞা ও সদাচরণের মাধ্যমে দ্বীনের শিক্ষা মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে আসছেন, এটি আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য। সমাজে উত্তেজনা বা ভুল ব্যাখ্যা দেখা দিলে এই শান্তিপ্রিয় আলেম সমাজই মানুষকে সংযম, শান্তি ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধার পথে রাখার দায়িত্ব পালন করে থাকেন। ধর্ম ও সমাজের প্রশ্নে সহিংসতার কোনো স্থান নেই—এই নীতিতে যাঁরা অবিচল থেকেছেন, আমরা তাঁদের এই অবস্থানের সঙ্গে একাত্ম। শান্তিপূর্ণ দাওয়াত ও জ্ঞানভিত্তিক সংলাপই দ্বীনের প্রকৃত রাহবারি, এ কথা আজ আরও বেশি দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া প্রয়োজন।’
বাউল-ফকির-তাসাউফপন্থীসহ সব সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার রাষ্ট্রীয়ভাবে নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘উসকানি, বিভাজন ও সহিংসতার রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করে ধর্মীয় নেতা, নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সম্প্রীতি, সংযম ও পারস্পরিক সম্মানের পথ আরও শক্তিশালী করতে হবে৷ অন্যায়ের প্রতিকার কখনোই অন্যায় দিয়ে হয় না। সহিংসতা প্রতিস্থাপিত হয় ন্যায়, ধৈর্য ও মানবিক আচরণে। আমরা শান্তি, সংহতি ও আইনের শাসনের পক্ষে সব সময়। বাংলাদেশটা সবার; এটিকে নিরাপদ, মানবিক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজে রূপান্তর করতে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ধর্মেন্দ্রর সেরা পাঁচ চরিত্র
আজ পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা ধর্মেন্দ্র। ৬ দশকের বেশি সময়ের অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য সিনেমা উপহার দিয়েছেন। তার হিট সিনেমার তালিকা মোটেও ছোট নয়। পাশাপাশি দর্শক-সমালোচকদেরও ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছেন এই বরেণ্য অভিনেতা। তবে তার ক্যারিয়ারে এমন কিছু চরিত্র যুক্ত হয়েছে, যা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এমন পাঁচ চরিত্র নিয়ে সাজানো হয়েছে এই প্রতিবেদন—
অশোক (অনুপমা)
হৃষিকেশ মুখার্জি নির্মিত অন্যতম সাড়া জাগানো সিনেমা ‘অনুপমা’। ১৯৬৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ সিনেমায় ‘অশোক’ চরিত্রে অভিনয় করেন ধর্মেন্দ্র। এটি চিন্তাশীল কোমল ও শান্ত স্বভাবের চরিত্র। ক্ল্যাসিক্যাল এই সিনেমায় বিশেষ আবেগময় সৌন্দর্য যোগ করেছেন ধর্মেন্দ্র। তার সংবেদনশীল ও হৃদয়ছোঁয়া অভিনয় স্মরণীয় ও মর্মস্পর্শী প্রেমকাহিনি গড়ে তুলেছে। সিনেমাটির বিভিন্ন চরিত্রে আরো অভিনয় করেছেন—শর্মিলা ঠাকুর, তরুণ বোস, দুলারি প্রমুখ।
আরো পড়ুন:
ধর্মেন্দ্রকে কেন ‘সুপারস্টার’ বলা হয়নি?
বরেণ্য অভিনেতা ধর্মেন্দ্র মারা গেছেন
শাকা (ফুল আউর পাথর)
বলিউডের আলোচিত ও হিট সিনেমা ‘ফুল আউর পাথর’। ও. পি. রালহান পরিচালিত এই সিনেমা ১৯৬৬ সালে মুক্তি পায়। সিনেমাটিতে ‘শাকা’ চরিত্রে অভিনয় করেন ধর্মেন্দ্র। এই সিনেমা ধর্মেন্দ্রকে রাতারাতি তারকা বানিয়ে দেয়। শক্তপোক্ত কিন্তু ভেতরে নরম হৃদয়ের ‘শাকার’ ভূমিকায় দুর্দান্ত ভারসাম্য বজায় রেখেছেন ধর্মেন্দ্র। পর্দায় তার শক্তিশালী উপস্থিতি ও স্মরণীয় অভিনয়ের কারণে প্রথম ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে মনোনয়ন লাভ করেন ধর্মেন্দ্র। সিনেমাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন—মীনা কুমারি, মদন পুরি, ললিতা প্রমুখ।
সত্যপ্রিয়া আচার্য (সত্যকাম)
ধর্মেন্দ্র অভিনীত ‘সত্যকাম’ সিনেমাও পরিচালনা করেন হৃষিকেশ মুখার্জি। সিনেমাটিতে ‘সত্যপ্রিয়া আচার্য’ চরিত্রে অভিনয় করেন ধর্মেন্দ্র। ইমোশনাল-ড্রামা ঘরানার এই সিনেমায় ধর্মেন্দ্র তার অন্যতম শক্তিশালী অভিনয় দর্শকদের উপহার দিয়েছেন। দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজে সততা ধরে রাখার সংগ্রাম করা এক সৎ লোকের চরিত্র আন্তরিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছেন ধর্মেন্দ্র। এই চরিত্রে অভিনয় করে সমালোচক ও দর্শকদের কাছ থেকে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ান ধর্মেন্দ্র। ১৯৬৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন—শর্মিলা ঠাকুর, সঞ্জীব কুমার, অশোক কুমার প্রমুখ।
বিরু (শোলে)
বলিউডের আলোচিত চলচ্চিত্র ‘শোলে’। রমেশ সিপ্পি নির্মিত সিনেমাটি শুধু চলচ্চিত্রই নয়, এটি ভারতীয় সিনেমার মিথ। ভারতীয় চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী এই সিনেমায় ‘বিরু’ চরিত্রে অভিনয় করেন ধর্মেন্দ্র। ‘বিরু’ চরিত্রে অভিনয় করে দেশজুড়ে সাড়া ফেলেছিলেন এই অভিনেতা। তার উদ্যম, হাস্যরস, সাহসিকতা এবং আইকনিক সংলাপগুলো তাকে ভারতীয় সিনেমার অন্যতম চরিত্রে পরিণত করে। অমিতাভ বচ্চন ও হেমা মালিনীর সঙ্গে তার দৃশ্যগুলো এখনো দর্শকদের মনে দাগ কেটে আছে। ১৯৭৫ সালে মুক্তি পায় সিনেমাটি।
প্রফেসর পরিমল ত্রিপাঠি (চুপকে চুপকে)
হৃষিকেশ মুখার্জি নির্মিত আলোচিত সিনেমা ‘চুপকে চুপকে’। ১৯৭৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ সিনেমায় ‘প্রফেসর পরিমল ত্রিপাঠি’ চরিত্রে অভিনয় করেন ধর্মেন্দ্র। এই ক্ল্যাসিক কমেডি ঘরানার চলচ্চিত্রে ধর্মেন্দ্রকে অত্যন্ত সহজভাবে দর্শকদের হাসাতে দেখা যায়। ড্রাইভার সেজে মজার কাণ্ড ঘটানো এক অধ্যাপকের চরিত্রে তার অভিনয় বলিউডের সেরা কৌতুকাভিনয়ের মধ্যে অন্যতম। সিনেমাটিতে আরো অভিনয় করেছেন—অমিতাভ বচ্চন, শর্মিলা ঠাকুর, জয়া বচ্চন, ওম প্রকাশ প্রমুখ।
ঢাকা/শান্ত