চট্টগ্রামের আনোয়ারায় গরুচোর সন্দেহে গণপিটুনিতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার সকালে উপজেলার পরৈকোড়া ইউনিয়নের পাঠনীকোটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত যুবকের নাম ফজল করিম (৩৫)। তিনি বাঁশখালী উপজেলার জলদি ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফাতেমা বাপের বাড়ির মফজল আহমদে ছেলে।

স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, আজ ভোরে পরৈকোড়া ইউনিয়নের পাঠনীকোটা এলাকায় একটি বাড়িতে গরুচোর হানা দেয়। ওই সময় চোরদের উপস্থিতি টের পেলে স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে এবং একজনকে পেয়ে গণপিটুনি দেন। ঘটনাস্থলেই ফজল করিম নামের ওই ব্যক্তি মারা যান।

ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠায় এবং রাতে তাঁর পরিচয় শনাক্ত করে।

আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

মনির হোসেন বলেন, ‘এভাবে আইন হাতে তুলে পিটিয়ে মানুষ মারা অন্যায়। আমরা এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছি।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাবিতে প্রতিবাদী বাউল সন্ধ্যা

বাউল শিল্পীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) ‘প্রতিবাদী বাউল সন্ধ্যা’ শীর্ষক এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির পায়রা চত্বরে এই কর্মসূচি শুরু হয়। রাত ১০টা পর্যন্ত এই অনুষ্ঠান চলে।

আরো পড়ুন:

ঢাবিতে হল ছেড়েছেন বেশিরভাগ শিক্ষার্থী, রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া 

হল খালির বিষয়ে ঢাবি প্রক্টরের জরুরি বার্তা

অনুষ্ঠানে বাউল শিল্পীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামিল খ্যাপা, আকাশ গাইন, জয়ন্ত দা, কানন মোল্লা। তারা বিভিন্ন বাউল গান পরিবেশনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান। 

অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন প্রান্ত গানের ফাঁকে বলেন, “বাংলার লোকসংস্কৃতি, মানবতাবাদ ও সাম্যের প্রতীক বাউল দর্শন। এই ভূখণ্ডের মুক্তচিন্তার ধারাকে শত শত বছর ধরে সমৃদ্ধ করেছে। ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের ঊর্ধ্বে দাঁড়িয়ে মানুষের অন্তর্দর্শন ও সাম্যের যে শিক্ষা বাউল সাধকেরা দিয়ে আসছেন, তা আমাদের সমাজকে আরও সহনশীল ও সমবায়ী করে তুলেছে।”

তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে বাউল শিল্পীদের ওপর সংঘটিত হামলার ঘটনা আমাদেরকে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করেছে। এ ধরনের আক্রমণ কেবল একজন শিল্পীর ওপর নয়, এটি আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং সামাজিক সম্প্রীতির ওপর স্পষ্ট আঘাত।”

অন্যতম আয়োজক সদস্য স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ফেরদৌস সিদ্দিক সায়মন বলেন, “গণতান্ত্রিক সমাজে শিল্প-সংস্কৃতির ওপর আক্রমণ কাম্য নয়। আমরা বাংলাদেশে সব নাগরিকের সমান মর্যাদা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং সাংস্কৃতিক নিরাপত্তার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা নয়, সংস্কৃতি ও মানবিক মূল্যবোধই একটি স্থিতিশীল ও অগ্রসর রাষ্ট্রের ভিত্তি।”

সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আবিদুর রহমান মিশু বলেন, “বাউল দর্শন কেবল একটি শিল্পধারা নয়; এটি মুক্তচিন্তা, সাম্য ও মানবতার পথ। এই পথ রক্ষায় রাষ্ট্র, সমাজ ও রাজনৈতিক অঙ্গন সবাইকে একসাথে দাঁড়াতে হবে।”

আয়োজকরা অনুষ্ঠানে চারটি দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- হামলার ঘটনাগুলোর দ্রুত, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত, দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা, বাউল ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং ঘৃণা, উস্কানি ও সহিংসতার বিরুদ্ধে সমন্বিত সামাজিক উদ্যোগ।

ঢাকা/সৌরভ/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ