৫০ হাজার টন চাল কিনবে সরকার, ভারত থেকে সরবরাহ করবে সিঙ্গাপুরের কোম্পানি
Published: 24th, November 2025 GMT
বিভিন্ন দেশ থেকে আতপ চাল ও সেদ্ধ চাল কিনছে বাংলাদেশ। কখনো আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে, কখনো সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পর্যায়ে আমদানি করা হচ্ছে এসব চাল। ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড—এসব দেশ থেকেই বাংলাদেশ সাধারণত চাল আমদানি করে থাকে।
এরই ধারাবাহিকতায় এবার আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর থেকে ৫০ হাজার টন নন বাসমতী সেদ্ধ চাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সিঙ্গাপুরের এস অ্যাগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে এ চাল কিনতে ব্যয় হবে প্রায় ২১৬ কোটি টাকা।
আজ সোমবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ–বিষয়ক প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। বৈঠক শেষে এ তথ্য সাংবাদিকদের জানান অর্থ উপদেষ্টা।
অর্থ উপদেষ্টা চাল কেনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, কিছুটা স্থিতিশীল হলেও চালের দাম আবার বাড়ছে। আর যেন না বাড়ে, সে জন্যই চাল আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিযোগিতামূলক দামে এই চাল ভারত থেকে আসবে। তবে সরবরাহকারী কোম্পানি সিঙ্গাপুরের।
এদিকে সাত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনার নতুন দর ঠিক করেছে সরকার। তবে নতুন দর কত, তা প্রকাশ করা হয়নি। যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষেত্রে নতুন দর ঠিক করা হয়েছে, সেগুলো চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও ফেনী জেলায় অবস্থিত। এ কেন্দ্রগুলোর মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা ৭৩০ মেগাওয়াট। সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে নতুন দর প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।
বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মধ্যে গাজীপুরেই রয়েছে চারটি। গাজীপুরের কড্ডায় ২০ বছর মেয়াদে রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (আরপিসিএল) মাধ্যমে স্থাপিত ১০৫ মেগাওয়াটের একটি ও ৫২ দশমিক ১৯ মেগাওয়াটের আরেকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র। এ ছাড়া বি-আর পাওয়ার জেন লিমিটেডের (বিআরপিএল) মাধ্যমে গাজীপুরের কড্ডায় ১৪৯ দশমিক ৩৫ মেগাওয়াটের একটি ও গাজীপুরের শ্রীপুরে বিআরপিএলের মাধ্যমে স্থাপিত ১৬০ মেগাওয়াটের আরেকটি কেন্দ্র।
আরপিসিএলের মাধ্যমে স্থাপিত চট্টগ্রামের রাউজানে ২৫ দশমিক ৫ মেগাওয়াটের একটি ও বিআরপিএলের মাধ্যমে স্থাপিত একই জেলার মিরসরাইয়ে ১৬৩ মেগাওয়াটের আরেকটি কেন্দ্র। এ ছাড়া ফেনীর সোনাগাজীতে ৭৫ মেগাওয়াটের রয়েছে সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র আরেকটি।
চার প্রস্তাব প্রত্যাহার
সভায় ‘বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) বৈদ্যুতিক বিতরণব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন (ঢাকা-ময়মনসিংহ বিভাগ) বিশেষ সংশোধিত’ শীর্ষক প্রকল্পের নকশা, সরবরাহ, স্থাপনা, পরীক্ষা, কমিশনিংসহ ভূমি উন্নয়নের জন্য উপস্থাপিত চারটি প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নিয়েছে ক্রয় কমিটি। বিদ্যুৎ বিভাগের অনুরোধেই প্রস্তাবগুলো প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। লট ১ ও ২–এর আওতায় ৩৩/১১ কেভি সাবস্টেশনের কাজ করার জন্য উপস্থাপিত চার প্রস্তাবে ছিল ৬৭৩ কোটি টাকা। প্রতিটি প্রস্তাবের সুপারিশ করা দরদাতা ছিল আইডিয়াল ইলেকট্রিক্যাল এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড।
ক্রয় কমিটিতে এ ছাড়া রাশিয়া ও সৌদি আরব থেকে ৭৫ হাজার টন সার কেনার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। এতে মোট ব্যয় হবে ৩৯৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সৌদি আরবের সাবিক অ্যাগ্রো নিউট্রিশন কোম্পানি থেকে ৪০ হাজার টন ব্যাগ গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার এবং রাশিয়ার জেএসসি অর্থনৈতিক করপোরেশন (প্রোডিন্টর্গ) থেকে কেনা হবে ৩৫ হাজার টন এমওপি সার।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র প রস ত ব হ জ র টন উপদ ষ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
উড়ালসড়কের পাইলিংয়ের সময় তিতাসের পাইপলাইনে ফাটল, গ্যাস সরবরাহ বন্ধ
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় পঞ্চবটী-মুক্তারপুর উড়ালসড়কের পাইলিংয়ের সময় আবারও তিতাস গ্যাসের প্রধান পাইপলাইন ফেটে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে উপজেলার এনায়েতনগর ইউনিয়নের শাসনগাঁও এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আজ রোববার সকাল ১০টা পর্যন্ত ১৬ ঘণ্টাতেও এ লাইন মেরামত করা সম্ভব হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, গতকাল বিকেলে ১২ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপলাইন ফেটে শোঁ শোঁ শব্দে গ্যাস বের হতে থাকলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল অঞ্চল থেকে সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় জেলার বেশির ভাগ আবাসিক গ্রাহক ভোগান্তিতে পড়েছেন। শিল্পকারখানার উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে।
পঞ্চবটী-মুক্তারপুর উড়ালসড়কের পাইলিংয়ের কাজ শুরুর পর থেকে ফতুল্লায় অন্তত ২৫ বার তিতাসের প্রধান পাইপলাইন ফাটার ঘটনা ঘটেছে। এতে অগ্নিকাণ্ডসহ বহুবার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। সেই সঙ্গে শিল্প উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে।
আজ সকালে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলের ব্যবস্থাপক মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, উড়ালসড়কের পাইলিংয়ের সময় প্রধান পাইপলাইন ফেটে গেছে। ২০ থেকে ২৫ ফুট গভীরে পাইপ থাকা অবস্থায় মাটি খুঁড়তে গিয়ে বারবার মাটি ভেঙে পড়ছে। মাটি যাতে ভেঙে না পড়ে সে জন্য চারদিকে লোহার পাত দিয়ে সুরক্ষা তৈরির কাজ চলছে। মাটি খোঁড়াসহ পাইপলাইন মেরামতে আরও পাঁচ–ছয় ঘণ্টা সময় লাগবে। মেরামতকাজ সম্পন্ন হলে দ্রুত গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করা হবে।
উড়ালসড়ক প্রকল্পের পরিচালক মো. ওয়াহিদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, শাসনগাঁও এলাকায় পাইলিংয়ের সময় তিতাসের পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেটি দ্রুত মেরামত করার কাজ চলছে।