‘সাহস নিয়ে সত্য তুলে ধরা বর্তমান সময়ে খুবই কঠিন। তারপরও প্রথম আলো ২৭ বছর পথ চলে সত্যই সাহস নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তারা সমাজের অবহেলিত মানুষের কথা বলে, ভালো কাজের পাশে থাকে। সব খবরের মধ্যে প্রথম আলোর খবরটি সত্য তথ্য দেয়।’

আজ সোমবার ঝিনাইদহে প্রথম আলো আয়োজিত সুধী সমাবেশে এসব কথা বলেন সরকারি কেশবচন্দ্র মহাবিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যক্ষ বি এম রেজাউল করিম। পত্রিকাটির ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শহরের এইচ এস এস রোডের ফুড সাফারীর হলরুমে এই সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে শিক্ষক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী, সাংস্কৃতিক কর্মী, উন্নয়নকর্মী, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নেন।

বিকেল চারটায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে অবসরপ্রাপ্ত কলেজশিক্ষক এম এন শাহজালাল বলেন, তাঁর পরিবারে সদস্যদের জন্য যখন পত্রিকা রাখার সিদ্ধান্ত নেন, তখনই বাজারের বহুল প্রচারিত পত্রিকাগুলো যাচাই করতে থাকেন। একটি সময় সিদ্ধান্ত নেন প্রথম আলোই সেরা। পত্রিকাটির সবগুলো বিভাগ পরিবারের সবার কথা চিন্তা করে করা হয়েছে। সেই থেকে বাসায় প্রথম আলো রাখেন। আজও প্রথম আলো পড়ছেন। তিনি প্রথম আলোর কাছে আরও বেশি আঞ্চলিক খবর তুলে ধরার আশা করেন।

শহরের ওয়াজির আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাহিদ আক্তার বলেন, ‘প্রথম আলো নানা অনুষ্ঠান করে, এটা আজকের সমাজে খুবই প্রয়োজন। শিশু-কিশোরদের নিয়ে গণিত উৎসব, বিজ্ঞান উৎসবসহ উৎসাহমূলক নানা অনুষ্ঠান করে, যা শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করে। আমরা চাই এই জাতীয় কর্মসূচি আরও বেশি করে করবে তারা।’

জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুল আলিম বলেন, ‘আমরা চাইব আগামী দিনেও একটি সুন্দর জাতি গঠনে সত্যের পক্ষে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখবে প্রথম আলো। আগামী নির্বাচন যেন সুষ্ঠু ও নিরেপেক্ষ হয়, সে ব্যাপারে তাদের বলিষ্ঠ লেখনীতে ভূমিকা থাকবে।’

ঝিনাইদহের সংবাদকর্মী মিজানুর রহমান বলেন, প্রথম আলো সত্য উদ্‌ঘাটন ও প্রকাশে ২৭ বছর সংগ্রাম করে যাচ্ছে। এটা খুব কঠিন কাজ, কিন্তু প্রথম আলো সেটি করে যাচ্ছে। আগামী দিনেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে, এটাই তাদের কাছে প্রত্যাশা।
বন্ধুসভার সাকিব মোহাম্মদ আল হাসানের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর ঝিনাইদহের নিজস্ব প্রতিবেদক আজাদ রহমান। সমাবেশে প্রথম আলো নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন সমাজকর্মী শিবুপদ বিশ্বাস, শিক্ষক রাশেদ সাত্তার, ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান আনিচুর রহমান, উন্নয়নকর্মী হাবিবুর রহমান, সাংস্কৃতিক কর্মী শাহীনুর আলম প্রমুখ।

পাঠকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সব বাধা উপেক্ষা করে সত্য তথ্য প্রকাশ করে চলেছি। সব সরকারের সময় আমাদের ওপর চাপ ছিল, তারপরও আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করে গেছি। গত বছর আমাদের দেশে একটি বড় আন্দোলন হয়ে গেছে, এ সময় ইন্টারনেট লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারপরও প্রথম আলো তার দায়িত্ব পালন করে গেছে। যার কারণে চলতি বছর দুটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছে।’

শওকত হোসেন বলেন, ‘আমরা নতুন করে দেশ গড়তে কাজ করতে চাই। এ জন্য আপনাদের পরামর্শ নিতে এসেছি। আপনাদের পরামর্শ আমাদের পথ চলতে সাহস জোগাবে।’

আরও পড়ুন‘প্রথম আলো সব সময় নিপীড়িত মানুষের পাশে রয়েছে’২৩ নভেম্বর ২০২৫আরও পড়ুনপ্রথম আলোকে সত্য বলার সাহস ধরে রাখতে হবে২১ নভেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল র ন প রথম আল অন ষ ঠ ন ঝ ন ইদহ আম দ র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

ধর্মেন্দ্রকে কেন ‘সুপারস্টার’ বলা হয়নি?

অবশেষে গুঞ্জনই সত্যি হয়ে ধরা দিয়েছে। সোমবার (২৪ নভেম্বর) মুম্বাইয়ের বাসভবনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বলিউডের বরেণ্য অভিনেতা ধর্মেন্দ্র। তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। আজই মুম্বাইয়ের পবন হংসে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই, ইন্ডিয়া টুডে, এনডিটিভি এ খবর প্রকাশ করেছে।  

১৯৩৫ সালের ৮ ডিসেম্বর পাঞ্জাবের লুধিয়ানা জেলার সাহনেওয়াল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ধর্মেন্দ্র কেওয়াল কৃষণ দেওল। ছোটবেলায় সিনেমার পর্দা ছিল তার কাছে জাদুর জানালা। সেই গ্রাম থেকে, কাদামাখা রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তিনিও একদিন বড় পর্দায় আলো ছড়াবেন। ফিল্মফেয়ার ম্যাগাজিনের ‘ট্যালেন্ট কনটেস্ট’-এ জয়ী হন। ১৯৬০ সালে ‘দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন ধর্মেন্দ্র। প্রথম সিনেমা মুক্তির পরই  নজর কাড়েন। তবে প্রকৃত সাফল্য আসে তারও কয়েক বছর পর। বিশেষ করে ‘শোলা আউর শবনম’ (১৯৬১), ‘বন্দিনী’ (১৯৬৩), ‘ফুল আউর পাথর’ (১৯৬৬) ও ‘সত্যকাম’ (১৯৬৯) সিনেমার মাধ্যমে।  

আরো পড়ুন:

বরেণ্য অভিনেতা ধর্মেন্দ্র মারা গেছেন

থমকে গেছে ক্রিকেটার-গায়কের বিয়ে: বাবার পর স্মৃতির হবু বর হাসপাতালে

‘ফুল আউর পাথর’ ধর্মেন্দ্রকে বক্স অফিস সফল তারকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। সত্তরের দশকের শেষ অবধি, ধর্মেন্দ্র ধারাবাহিকভাবে বলিউডের শীর্ষস্থানীয় তারকাদের একজন ছিলেন। ‘অনুপমা’, ‘আদমি আউর ইনসান’, ‘মেরা গাঁও মেরা দেশ’, ‘সীতা অর গীতা’, ‘শোলে’, ‘লোফার’, ‘ইয়াদো কি বারাত’, ‘ধর্ম বীর’ এর মতো হিট সিনেমা উপহার দেন।  

আশির দশকে অ্যাকশন ঘরানার চলচ্চিত্রে মন দেন ধর্মেন্দ্র। ‘বদলে কি আগ’, ‘গুলামি’, ‘লোহা’, ‘এয়লান’ এর মতো মতো স্বল্প-বাজেটের সিনেমা সাফল্য পায় তার কাঁধে ভর করে। ৬৪ বছরের ক্যারিয়ারে, ধর্মেন্দ্র ৭৫টি হিট সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন; যা কোনো হিন্দি চলচ্চিত্র অভিনেতার প্রধান চরিত্রে সর্বাধিক। এ তালিকায় যথাক্রমে রয়েছেন—অমিতাভ বচ্চন (৫৭টি), রাজেশ খান্না (৪২টি), শাহরুখ খান (৩৫টি), সালমান খান (৩৮টি)। 

ধর্মেন্দ্র তার সমসাময়িক এবং জুনিয়রদের চেয়ে বেশি হিট সিনেমা উপহার দিয়েছিলেন। তারপরও কখনো ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষ তারকা ছিলেন না। ধর্মেন্দ্র যখন তার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন, তখন এই ট্যাগটি দিলীপ কুমারের কাছে ছিল; পরে সত্তরের দশকে রাজেশ খান্না, পরবর্তীতে অমিতাভ বচ্চন খানিকটা লাইমলাইট কেড়েছিলেন। কিন্তু দর্শক মনে রাজত্ব করে গিয়েছেন গরম-ধরম।  

‘ইয়াদো কি বারাত’, ‘মেরা গাঁও মেরা দেশ’, ‘ধরম বীর’ দুজন নায়কের সিনেমা ছিল। অন্যান্য নায়কেরা তখন নিয়মিত একক হিট উপহার দিচ্ছিলেন। আশির দশকে যখন ধর্মেন্দ্র একক হিট সিনেমা দিয়েছিলেন, তখন চলচ্চিত্রগুলো অমিতাভ বচ্চন, বিনোদ খান্না বা ঋষি কাপুর অভিনীত সিনেমার চেয়ে কম বাজেটের ছিল। ৬টি ব্লকবাস্টার ও ৭টি সুপার হিট সিনেমার মালিক ধর্মেন্দ্র।  

বিস্ময়কর বিষয় হলো— এ নায়কের ১৫০টি সিনেমা ফ্লপ হয়েছিল, যা কোনো বলিউড তারকার জন্য দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এ কারণেই হয়তো ধর্মেন্দ্র কখনো ‘সুপারস্টার’ তকমা পাননি। তারপরও ধর্মেন্দ্র তথাকথিত ‘বি-গ্রেড’ অ্যাকশন ঘরানার সিনেমায় অভিনয়ের সিদ্ধান্তে অনুশোচনা করেননি।  

আশির দশকের শেষের দিকে এইচটিকে দেওয়া একটি সাক্ষাত্কারে ধর্মেন্দ্র বলেছিলেন, “আমার বয়স পঞ্চাশের বেশি। আমি আজকাল হেলিকপ্টার থেকে লাফ দিচ্ছি। এটি অবশ্যই একটি কীর্তি (হাসি)। কিন্তু কেউ বেছে নেওয়ার সামর্থ্য রাখে না। পুরোনো অভ্যাসগুলো মরে যায়। আমি সিনেমা খুব ভালোবাসি। আমি সুযোগ পেলেই সিনেমায় স্বাক্ষর করতে চাই; যদি জানিও যে, সিনেমাটি চলবে না, তবু আমি সেরাটি দেওয়ার চেষ্টা করি। এক বছরে এমন অনেক সিনেমা করি, যার গল্প একই; যার মধ্যে তিনটি খুব ভালো চলে।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ধর্মেন্দ্রকে কেন ‘সুপারস্টার’ বলা হয়নি?