Prothomalo:
2025-11-25@03:57:06 GMT

১১ উপজেলায় ৯৭টি অবৈধ ইটভাটা

Published: 25th, November 2025 GMT

কক্সবাজার ও বান্দরবানের ১১ উপজেলায় ইটভাটা আছে ১৩১টি। এর মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র কিংবা জেলা প্রশাসনের লাইসেন্স নেই ৯৭টির। অবৈধ এসব ভাটায় বছরের পর বছর ধরে বনের কাঠ পুড়িয়ে চলছে শতকোটি টাকার ইট-বাণিজ্য। ফসলি জমির টপসয়েল ও পাহাড় কাটার মাটি দিয়ে চলছে ইট তৈরি।

একদিকে বনাঞ্চল উজাড়, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে, অন্যদিকে ভাটার কালো ধোঁয়ায় মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, অধিকাংশ অবৈধ ইটভাটার মালিক আওয়ামী লীগের নেতা-সমর্থক হলেও গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকারের পতনের পর ইটভাটাগুলোর পরিচালনা করছে অন্য রাজনৈতিক দলের কয়েকজন নেতা। এখন অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ করতে গেলেই পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানে হামলা, যানবাহন ভাঙচুর ও ট্রাক রেখে রাস্তা অবরোধ করার মতো ঘটনা ঘটছে।

জেলা প্রশাসন, বন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, কক্সবাজারের ৯ উপজেলায় ২০২২ সালে ইটভাটা ছিল ১০৪টি। ২০২৩ সালে অভিযান চালিয়ে ২০টি ইটভাটা উচ্ছেদ ও ৩৩ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে পরিবেশ অধিদপ্তর। বর্তমানে কক্সবাজারের ৯ উপজেলায় ইটভাটা আছে ৮৪টি। এর মধ্যে ৫৪টিতে পরিবেশ ছাড়পত্র ও লাইসেন্স নেই। যার মধ্যে ৩১টি ইটভাটা তৈরি হয়েছে বনাঞ্চলের আশপাশ ও ভেতরে। অবৈধ বাকি ইটভাটাগুলো বান্দরবানের লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ির সংরক্ষিত বনের পাশে নির্মিত হয়েছে। ভাটাগুলোয় দৈনিক অন্তত ৭ লাখ ইট উৎপাদন হচ্ছে বলে জানা গেছে।

একটা সময় অবৈধ ইটভাটাগুলো পরিচালনা করতেন আওয়ামী লীগ নেতারা। পটপরিবর্তনের পর রাতারাতি ইটভাটাগুলোর মালিক বনে গেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কতিপয় নেতা। অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ অভিযানে গেলে রাজনৈতিক দলের নেতারা লোকজন নিয়ে অভিযানকারী দলের ওপর হামলা চালাচ্ছে। সড়ক অবরোধ করে গাড়ি ভাঙচুর করে অভিযান ভন্ডুল করে দিচ্ছে।মো.

জমির উদ্দিন, আঞ্চলিক পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর—চট্টগ্রাম

পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পরিচালক মো. জমির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, একটা সময় অবৈধ ইটভাটাগুলো পরিচালনা করতেন আওয়ামী লীগ নেতারা। পটপরিবর্তনের পর রাতারাতি ইটভাটাগুলোর মালিক বনে গেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কতিপয় নেতা। অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ অভিযানে গেলে রাজনৈতিক দলের নেতারা লোকজন নিয়ে অভিযানকারী দলের ওপর হামলা চালাচ্ছে। সড়ক অবরোধ করে গাড়ি ভাঙচুর করে অভিযান ভন্ডুল করে দিচ্ছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে পরিবেশ অধিদপ্তরের এই অভিযান চলমান রাখা হবে।

মো. জমির উদ্দিন বলেন, চকরিয়া ও লামার মধ্যবর্তী ফাইতং মৌজার একটুকরো বনাঞ্চলে কয়েক বছর আগে তৈরি হয়েছে ৩৮টি ইটভাটা। কোনোটির পরিবেশ ছাড়পত্র নেই। বনের কাঠ পুড়িয়ে এসব ভাটায় কোটি টাকার ইট তৈরি হচ্ছে। তাতে বৈধ ইটভাটার মালিকেরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।

চকরিয়ার মানিকপুর-সুরাজপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত বনে ইটভাটা আছে ১২টি। এর মধ্যে কয়েক একর সরকারি পাহাড় কেটে নির্মাণ করা হয় এফসি নামের একটি ইটভাটা। সম্প্রতি সেখানে দেখা গেছে, ২০-২৫ জন শ্রমিক পাহাড় কাটার মাটি দিয়ে তৈরি করছেন ইট। ইট পোড়ানোর জন্য চিমনির পাশে স্তূপ করে রাখা হয় গাছের গুঁড়ি। কিছুটা দূরে লামার ফাইতং মৌজার সংরক্ষিত বনে ইটভাটা রয়েছে ৪০টি। সেখানে ৩২টি ভাটায় ইট তৈরি হচ্ছে। কয়েকটি ভাটার চিমনি থেকে কালো ধোঁয়া বেরোচ্ছে।

সরকারি অভিযানে বাধা দেওয়ার ঘটনায় ১৭ নভেম্বর লামা থানায় মামলা করেন পরিবেশ অধিদপ্তর বান্দরবান কার্যালয়ের পরিদর্শক মোহাম্মদ নুর উদ্দিন। মামলায় এবি পার্টির কেন্দ্রীয় পর্যটনবিষয়ক সহসম্পাদক এবি ওয়াহিদ, এনসিপির চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী এরফানুল হকসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও ৪০০ জনকে।

কক্সবাজার সদর, রামু, ঈদগাঁও ও চকরিয়ায়ও কাঠ পুড়িয়ে ইট তৈরি হচ্ছে আরও ২৭টি ভাটায়। সম্প্রতি রামুর কাউয়ারখোপ বাজারের পাশে  (বনাঞ্চলের কাছাকাছি)  দুটি ভাটায় গিয়ে দেখা গেছে, বনের কাঠ পুড়িয়ে ইট উৎপাদন হচ্ছে। কোনোটির পরিবেশ ছাড়পত্র নেই। একটি ইটভাটার মালিক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ছাড়পত্রের জন্য কয়েক বছর আগে পরিবেশ অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু বনাঞ্চলের পাশে ভাটা স্থাপন করা হয়েছে—এই অজুহাতে পরিবেশ অধিদপ্তর ছাড়পত্র দিচ্ছে না। তারপরও স্থানীয় চাহিদা পূরণের জন্য ভাটা চালু রাখতে হচ্ছে। বন বিভাগের তথ্যমতে, রামু উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ইটভাটা আছে ৪০টি। এর মধ্যে পরিবেশ ছাড়পত্র নেই ২৫টির।

২০১৩ সালের ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সীমারেখা থেকে দুই কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ। আইনে বলা আছে, সরকারি বা ব্যক্তিমালিকানাধীন বন, অভয়ারণ্য, বাগান, জলাভূমি ও কৃষিজমিতে ইটভাটা করা যাবে না। ইট উৎপাদনের জন্য কৃষিজমি, পাহাড় ও টিলা থেকে মাটি কেটে কাঁচামাল এবং জ্বালানি হিসেবে কাঠের ব্যবহারও নিষিদ্ধ করা হয়।

কক্সবাজার সদর উপজেলার জালালাবাদ এলাকায় একটি ইটভাটা থেকে বের হচ্ছে কালো ধোঁয়া। সম্প্রতি তোলা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ক দল র ইটভ ট গ ল ব ধ ইটভ ট র উদ দ ন উপজ ল য় ইট ত র র জন য ন র জন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কমিউনিটি ব্যাংক ও হোটেল আগ্রাবাদের মধ্যে নতুন সহযোগিতা চুক্তি

কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি ও হোটেল আগ্রাবাদের মধ্যে ব্যবসায়িক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। 

সম্প্রতি চট্টগ্রামে হোটেল আগ্রাবাদ এর কনফারেন্স রুমে এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমিউনিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) কিমিয়া সাআদত।

অনুষ্ঠানে কমিউনিটি ব্যাংকের হেড অব কার্ডস, জাহির আহমেদ এবং হোটেল আগ্রাবাদের নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

এ সময় কমিউনিটি ব্যাংকের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন হেড অব করপোরেট ব্যাংকিং ও হেড অব বিজনেস (ব্রাঞ্চ) ড. মো. আরিফুল ইসলাম; হেড অব এডিসি ও হেড অব এমডি’স কো-অর্ডিনেশন টিম মো. মামুন উর রহমান; অগ্রাবাদ ব্রাঞ্চের ম্যানেজার মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন; আন্দরকিল্লা ব্রাঞ্চের ম্যানেজার আবদুল্লাহ-আল-মামুনসহ অন্যরা।

এছাড়া, হোটেল আগ্রাবাদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার মো. হাসানুল ইসলাম; হেড অব সেলস সঞ্জয় ভৌমিক; ডেপুটি চিফ অ্যাকাউন্ট্যান্ট মো. জামাল হোসেনসহ উর্ব্ধতন কর্মকর্তারা।
 
চুক্তিনুযায়ী হোটেল আগ্রাবাদ, কমিউনিটি ব্যাংকের ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডধারীরা সকল আউটলেট ও পার্টনার সেবাসমূহে বিশেষ ছাড় পাবে। কার্ডধারীরা রুম ভাড়ায় ৬০ শতাংশ; মল্লিকা রেস্টুরেন্টে ১৫ শতাংশ; সোহো, বেকারী এবং লন্ড্রিতে ১০ শতাংশ আর সুইমিং পুল ও জিমের বাৎসরিক সদস্য পদের পাশাপাশি স্পাতে পাবেন ২০ শতাংশ ছাড়।

এই চুক্তি উভয় প্রতিষ্ঠানের সেবা পরিসরকে আরও সমৃদ্ধ করবে এবং গ্রাহক অভিজ্ঞতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। 

ঢাকা/ইভা   

সম্পর্কিত নিবন্ধ