কক্সবাজারে এতিমখানার ছাত্রকে অপহরণ, লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি
Published: 24th, November 2025 GMT
কক্সবাজার শহরের বার্মিজ মার্কেট এলাকা থেকে মো. ত্বকী তাযওয়ার (১২) নামে এক শিশুকে অপহরণ করা হয়েছে। গত শনিবার বিকেলে শিশুটিকে অপহরণ করা হলেও আজ সোমবার সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত সময়েও উদ্ধার করা যায়নি। দুর্বৃত্তরা শিশুটির পরিবারের কাছে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছে। অন্যথায় হত্যার পর লাশ গুম করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
অপহৃত শিশুর বাড়ি চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের ফতেহ আলী সিকদার পাড়ায়। বাবার নাম মৃত মোহাম্মদ নোমান। শিশুটি কক্সবাজার শহরের বৌদ্ধমন্দির সড়কের বায়তুশশরফ জব্বারিয়া এতিমখানাতে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে।
এ ঘটনায় গতকাল রোববার রাতে অপহৃত শিশুর চাচা মাওলানা মো.
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াস খান প্রথম আলোকে বলেন, শিশুর বিষয়ে নানা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। মুক্তিপণ দাবির বিষয়েও নানা খবর আসছে। কিন্তু বাদীকে (মনিরুল) খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অপহরণ চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করতে বার্মিজ মার্কেট এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। শিশুকে উদ্ধারের কাজ চলছে।
শিশুর মা আফরোজা বেগম বলেন, বায়তুশশরফ এতিমখানায় থেকে ত্বকী লেখাপড়া করছে। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে। গত শনিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে এতিমখানা থেকে বেরিয়ে ত্বকী পাশের বার্মিজ মার্কেট এলাকার সড়কের মোড়ে গিয়ে দাঁড়ায়। এ সময় কয়েকজন লোক কালো রঙের একটি মাইক্রোবাসে এসে ত্বকীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। এরপর আর ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
শিশুর চাচা মনিরুল ইসলাম বলেন, আজ সকালে চক্রের এক সদস্য কল দিয়ে এক লাখ টাকা নিয়ে রামুর বাইপাস এলাকায় যেতে বলে। ত্বকীর মা সেখানে গেলে বলা হয় সাত কিলোমিটার দূরে গর্জনিয়া এলাকাতে যেতে। দুপুরে গর্জনিয়াতে গেলে এক লাখ টাকা দিতে বলে, নয়তো ত্বকীর লাশ পড়বে। টাকা পাঠানোর জন্য একটি বিকাশ নম্বরও দেওয়া হয়।
মনিরুল ইসলাম বলেন, বিকেলে ওই বিকাশ নম্বরে ৩০ হাজার টাকা পাঠানো হয়। এরপর ত্বকীকে ছেড়ে দিতে বললে আরও ২০ হাজার টাকা দাবি করে। এতিমখানার ছাত্র, গরিব পরিবার, এত টাকা কোথায় পাব জানালে চক্রের সদস্য টাকা ছাড়া ত্বকীর মুক্তি হবে না জানিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। ছেলের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে আরও ২০ হাজার টাকা বিকাশ নম্বরে পাঠানো হয়। কিন্তু সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ত্বকীকে ছেড়ে দেওয়া হয়নি। ঘটনার বিষয়টি জানাতে মাকে নিয়ে কক্সবাজার সদর থানায় যাচ্ছেন বলে জানান মনিরুল ইসলাম।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত বক ক
এছাড়াও পড়ুন:
সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে চার জেলে অপহৃত, মুক্তিপণ দিয়ে বাড়ি ফিরেছেন একজন
সুন্দরবনের লোনাজলে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে চার জেলে অপহরণের স্বীকার হয়েছেন। তাঁদের ছাড়তে মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে বনদস্যুরা। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা রেঞ্জের আঠারবেকি এলাকার একটি খালে কাকড়া ধরার সময় তাঁদের অপহরণ করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, দস্যু আলিম বাহিনীর সদস্যরাই জেলেদের অপহরণ করেন। অপহৃত জেলেদের মধ্যে একজন মুক্তিপণ দিয়ে গতকাল রোববার বাড়ি ফিরেছেন।
শ্যামনগর উপজেলার বড়ভেটখালী গ্রামের ইউসুফ গাজী বলেন, তিনি ২০ নভেম্বর কৈখালী স্টেশন থেকে অনুমতিপত্র (পাস) নিয়ে নিজের নৌকায় মরগাং গ্রামের ইব্রাহিম শেখ ও আনিস শেখকে নিয়ে বনে প্রবেশ করেন। একইভাবে পাস নিয়ে মরগাং গ্রামের হাসান শেখ ও বড়ভেটখালী গ্রামের আবদুল গাজীও বনে ঢোকেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় আঠারবেকি ভাইজো খালে কাঁকড়া ধরার সময় দস্যুরা তাঁদের নৌকা আটকে দেয়। তিনটি নৌকা থেকে তারা চারজনকে তুলে নেয়। পরে জানায়, মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা দিলে ছাড়া পাওয়া যাবে। গতকাল ভোরে ৫০ হাজার টাকা পরিশোধের পর দস্যুরা হাসান শেখকে একটি নৌকায় তুলে দেয়। সকাল ৯টার দিকে তিনি বাড়ি পৌঁছান।
শ্যামনগর মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কাসেম মোরেল জানান, সুন্দরবনে দস্যুতা আবারও বেড়ে উঠেছে। ভেটখালী ও মরগাং গ্রামের বেশ কয়েকজন জেলে সম্প্রতি আঠারবেকি এলাকা থেকে অপহৃত হয়েছেন বলে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়েছেন।
সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা হক বলেন, ‘জেলেরা আমাদের কিছুই জানায় না। মহাজন বা পরিবারের লোকজন মুক্তিপণ দিয়ে তাঁদের ছাড়িয়ে আনে, পরে আমরা খবর পাই। দুর্গম বনাঞ্চলে দ্রুত অভিযান চালানোও কঠিন। বনদস্যু দমনে একটি স্মার্ট পেট্রোল টিম ও দুটি বিশেষ দল মাঠে রয়েছে। সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেলে অপহৃত জেলেদের উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হবে।’