ফেনীর ফুলগাজীতে প্রতিবেশীর করা মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশের আতঙ্কে প্রবাসী এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত দুইটার দিকে উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নের উত্তর শ্রীপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মৃত ব্যক্তির নাম নুর হোসেন (৫৪)। তিনি উত্তর শ্রীপুর গ্রামের মৃত মীর হোসেনের ছেলে। নুর হোসেন দীর্ঘদিন ধরে সৌদিপ্রবাসী। পরিবারে তাঁর স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক কন্যাসন্তান রয়েছে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রোববার সকালে উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নের উত্তর শ্রীপুর গ্রামে কয়েকজনের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মর্জিনা আক্তার (২৩) নামের এক গৃহবধূর মাথা ফেটে যায়। আহত গৃহবধূ ওই রাতেই বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে ফুলগাজী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার বাদী তাঁর প্রতিবেশী প্রবাসী নুর হোসেনকে আসামি করেন। মামলার পর রোববার রাত দুইটার দিকে ফুলগাজী থানা-পুলিশের সদস্যরা আসামি নুর হোসেনকে গ্রেপ্তার করতে তাঁর বাড়িতে যান।

পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নুর হোসেন ঘরের দরজা বন্ধ করে রাখেন। পরে পুলিশ স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আবুল খায়েরের সহযোগিতায় নুর হোসেনের ঘরের দরজা খোলে। এ সময় আতঙ্কিত হয়ে নুর হোসেন জ্ঞান হারান। রাতেই তাঁকে উদ্ধার করে বাড়ি থেকে ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক নুর হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর মরদেহ সোমবার সকাল পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছিল।

এদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা সাবেক ইউপি সদস্য আবুল খায়ের জানান, রাত দুইটার দিকে পুলিশ তাঁকে ডেকে নুর হোসেনের বাড়িতে নিয়ে যায়। তিনি নুর হোসেনকে দরজা খুলতে বললে তিনি দরজা খোলেন। এ সময় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে গেলে নুর হোসেন জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.

গোলাম কিবরিয়া বলেন, রাতে নুর হোসেনকে হাসপাতালে আনা হলেও তার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

ফুলগাজী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম জানান, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নুর হোসেনের বোন রাজিয়া সুলতানা অভিযোগ করে বলেন, ‘দিনে মারামারির ঘটনা হয়েছে বলে দাবি করছে পুলিশ। রাতে মামলা হয়েছে, মধ্যরাতে আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ বাড়ি এসেছে। আমার ভাই কি খুনি না দাগি আসামি যে পালিয়ে যাবে। রাতের বেলা কেন তাঁকে গ্রেপ্তার করতে হবে।’

নুর হোসের স্ত্রী রিমা আক্তার বলেন, ‘প্রতিবেশীদের মারামারি মধ্যে আমার স্বামী উপস্থিত ছিলেন না। তবু কেন আমার স্বামীকে আসামি করা হয়েছে? পুলিশ দিনের বেলা আসামি ধরতে না এসে রাতের বেলা কেন এল? আমার স্বামী তো প্রায় এক বছর ধরে বাড়িতেই রয়েছে। পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’

ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) নিশাত তাবাসসুম বলেন, কী কারণে প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে তা জানতে মরদেহের ময়নাতদন্ত প্রয়োজন। তাতে পরবর্তী সময়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কেউ অভিযোগ করলে আইনগত জটিলতা থাকবে না।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র করত আম র স ব ম প রব স উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ভূমিকম্প ও দুর্ঘটনার আশঙ্কায় মধ্যপাড়া খনি থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ

ভূমিকম্পজনিত ঝুঁকি ও সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়াতে দিনাজপুরের মধ্যপাড়া খনি থেকে পাথর উত্তোলন কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মধ্যপাড়া পাথরখনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী ডি এম জোবায়েদ হোসেন। 

আরো পড়ুন:

ভূমিকম্প আতঙ্কে জবিতে এক সপ্তাহ ক্লাস–পরীক্ষা বন্ধ, হল ছাড়ার নির্দেশ

ভূমিকম্প যেভাবে পৃথিবী পাল্টে দিতে পারে

তিনি জানান, পেট্রোবাংলার নির্দেশে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে রবিবার রাত ১০টা থেকে দুই দিনের জন্য খনিতে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

ডি এম জোবায়েদ হোসেন আরো জানান, সাম্প্রতিক দেশব্যাপী ভূমিকম্পের পর খনির ভেতরে দুর্ঘটনা এড়াতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর পুনরায় কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

খনির কার্যক্রম হঠাৎ বন্ধ হওয়ায় শ্রমিক ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। তবে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এ সাময়িক বিরতি বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা/মোসলেম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ