জিনপিংয়ের সঙ্গে ফোনালাপ, বেইজিং যাচ্ছেন ট্রাম্প
Published: 25th, November 2025 GMT
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপরই তিনি জানিয়েছেন, আগামী বছরের এপ্রিলে বেইজিং সফরে যাবেন তিনি। একইসঙ্গে চীনা প্রেসিডেন্টকেও ওয়াশিংটন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
আরো পড়ুন:
ইউক্রেন ও মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হওয়ার দাবি যুক্তরাষ্ট্রের
যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বিশ্ব চলতে পারে: কানাডার প্রধানমন্ত্রী
প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবারের ফোনালাপে দুই রাষ্ট্রনেতা বাণিজ্য ও তাইওয়ানের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছেন।
ফোনালাপের কয়েক ঘণ্টা পরে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট দুই দেশের ‘অত্যন্ত শক্তিশালী’ সম্পর্কের প্রশংসা করেন। ট্রাম্প জানান, তিনি এবং জিনপিং ‘খুব ভালো’ একটি ফোনালাপের সময় ইউক্রেন যুদ্ধ, ফেন্টানাইল পাচার এবং কৃষকদের জন্য একটি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছেন, যার মধ্যে একে অপরের দেশে আমন্ত্রণ বিনিময়ও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “এখন আমরা বৃহৎ চিত্রের উপর আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে পারি.
ট্রাম্প জানান, তিনি এপ্রিলে চীন সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন, জিনপিং বছরের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন।
ট্রাম্প তাইওয়ান নিয়ে কোনো আলোচনার কথা উল্লেখ করেননি। তবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, জিনপিং ট্রাম্পকে বলেছেন, দ্বীপটি চীনের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া ‘যুদ্ধোত্তর আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার’ একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা ‘ফ্যাসিবাদ ও সামরিকবাদের’ বিরুদ্ধে মার্কিন-চীন যৌথ লড়াইয়ে তৈরি হয়েছিল।
জিনপিংয়ের এই প্রস্তাব এমন এক সময়ে এসেছে যখন স্বায়ত্তশাসিত তাইওয়ানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চীনকে জাপানের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। চীন তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে মনে করে। জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানে তাকাইচি সম্প্রতি বলেছেন যে, জাপানের সামরিক বাহিনী তাইওয়ানের উপর যেকোনো আক্রমণে সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, ট্রাম্প শিকে বলেছেন, “চীনের কাছে তাইওয়ান ইস্যুটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা ওয়াশিংটন বোঝে।”
যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে তাইওয়ানকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দিলেও, তাইওয়ান সম্পর্ক আইন অনুসারে দ্বীপটিকে আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করে। এই আইনের অধীনে, তাইওয়ানের নিরাপত্তা বা সামাজিক ব্যবস্থা বিপন্ন হলে বলপ্রয়োগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বজায় রাখা উচিত বলে মনে করা হয়। ফলে, যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার এবং অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করে।
সোমবারের ফোনালাপটি ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের সর্বশেষ প্রচেষ্টার সাথেও মিলে যায়। চীন নিজেকে সংঘাতে একটি নিরপেক্ষ পক্ষ হিসেবে অবস্থান নিয়েছে। সোমবারের ফোনালাপে জিনপিং বলেছেন, তিনি ‘শান্তির জন্য সহায়ক সব প্রচেষ্টা’ সমর্থন করেন ও আশা প্রকাশ করেন যে সংকট ‘মূল থেকেই’ সমাধান হবে।
এর আগে গত অক্টোবরে দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে দুই নেতার বৈঠকে শুল্ক নিয়ে এক ধরনের ‘যুদ্ধবিরতি’ হয়েছিল। চীন তখন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা এক বছরের জন্য স্থগিত করতে সম্মত হয়। অন্যদিকে ওয়াশিংটন জানায়, তারা চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক কমাবে।
ট্রাম্প সোমবার জানান, তিনি চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ‘ফেন্টানাইল, সয়াবিন ও অন্যান্য কৃষি পণ্য’ সম্পর্কে বিস্তারিত কথা বলেছেন।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, সোমবারের ফোনালাপ প্রায় এক ঘণ্টা স্থায়ী হয়েছিল এবং সেখানে মূলত বাণিজ্যকেন্দ্রিক আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, “চীনের পক্ষ থেকে আমরা যা দেখছি, তাতে আমরা সন্তুষ্ট এবং তারাও একই বিষয় অনুভব করছে।”
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র স মব র র র র জন য বল ছ ন কর ছ ন ত ইওয
এছাড়াও পড়ুন:
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে ১০০০ কোটি টাকা ঋণ পেল আইসিবি
পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) ১ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে সরকারে। এটা টাকা সরাসরি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা হবে।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়।
জানা গেছে, সরকারের কাছে আইসিবি মোট ১৩ হাজার কোটি টাকার সহায়তা চাইলেও প্রাথমিকভাবে ১ হাজার কোটি টাকা সফট লোন হিসেবে পেয়েছে। ১০ বছরে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে, যার মধ্যে প্রথম বছর থাকবে গ্রেস পিরিয়ড। এরপর প্রতি ছয় মাসে মূলধন ও ৫ শতাংশ সুদসহ কিস্তি পরিশোধ করতে হবে।
সরকারি এ ঋণ শুধু শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য ব্যবহার করা যাবে। এটি বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধিতে সহায়ক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাজারে বড় আকারের সরকারি বিনিয়োগ সাধারণত মূল্য বৃদ্ধি এবং স্বাভাবিক চাহিদা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আইসিবি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ সংবাদিকদের জানান, ঋণ পাওয়ার পরই নতুন একটি বিও অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে এবং সোমবার (২৪ নভেম্বর) দুপুর ২টার পর থেকে কিছু শেয়ার কেনা শুরু হয়েছে। তিন মাসের মধ্যে বিনিয়োগের অগ্রগতি সম্পর্কে সরকারকে বিস্তারিত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সরকারের এই উদ্যোগ শেয়ারবাজারে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য এক শক্তিশালী প্রথম ধাপ হিসেবে কাজ করবে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ইতিমধ্যেই ধীরে ধীরে আস্থা ফিরে আসছে এবং তারা নতুন সম্ভাবনাময় সুযোগের দিকে উৎসাহ ও আগ্রহের সঙ্গে দৃষ্টি রাখছেন।
বিশেষজ্ঞরা আশাবাদী যে, এই পদক্ষেপ বাজারে আস্থা জোরদার করবে এবং মধ্যমেয়াদে শেয়ারবাজারে নতুন চাহিদা ও বিনিয়োগ প্রবাহ তৈরি করবে। বিনিয়োগকারীরা ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে বাজার পর্যবেক্ষণ করলে, তাদের জন্য আরো সুফল অর্জনের সুযোগ তৈরি হবে।
ঢাকা/এনটি/ইভা