রাজধানীর পুরান ঢাকার দয়াগঞ্জ মোড়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ও তিন ছাত্রকে মারধরের শিকার হয়েছেন। মারধরের জন্য ট্রাফিক সহায়কদের দায়ী করে শিক্ষার্থীরা পুলিশ বক্স ঘেরাও এবং সড়ক অবরোধ করেন। এর ফলে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে তিন ঘণ্টা দয়াগঞ্জ মোড় এলাকায় তীব্র যানজট ও দুর্ভোগ তৈরি হয়। বিকেল চারটার দিকে পুলিশের অনুরোধে শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আহত চার শিক্ষার্থী হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের তালহা জুবায়ের, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যব্যবস্থা বিভাগের আল-আমিন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সোহেল হোসেন ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চৈতী আলম। তাঁরা স্থানীয় ফার্মসিতে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে পরে বাসে করে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন।

শিক্ষার্থীরা জানান, ভূমিকম্প পরিস্থিতিতে ঢাকায় থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাসে করে বিভিন্ন শহরে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ১৬টি বাস ও ভাড়া করা বাসে তাঁদের পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাগুরা জেলার শিক্ষার্থীদের পৌঁছানোর জন্য সাদ সুপার পরিবহনের বাসের ব্যবস্থা করা হয়। দয়াগঞ্জ মোড়ে পৌঁছালে বাসটি যানজটে পড়ে। এ সময় তাঁরা যানজট সরিয়ে বাসটিকে নিয়ে যেতে চাইলে সেখানে থাকা তিন ট্রাফিক সহায়ক তাঁদের পরিচয় জানতে চান। পরিচয় দিলে তাঁরা উদ্ধত আচরণ শুরু করেন। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটি হলে একপর্যায়ে ট্রাফিক সহায়কেরা তাঁদের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে শিক্ষার্থীদের বেধড়ক মারধর করেন। এ সময় চার শিক্ষার্থী আহত হন।

বাসের চালক কাকন মিয়া বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাগুরার উদ্দেশে রওনা হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই মারধরের ঘটনা ঘটে। বাসসংকট ও যাত্রায় দেরি হওয়ার কারণে এমনিতেই শিক্ষার্থীরা বিরক্ত হচ্ছিলেন। এরপর দয়াগঞ্জ মোড়ে এলে সিগন্যালে পড়ে বাসটি। এ সময় শিক্ষার্থীদের কয়েকজন রাস্তায় নেমে যানজটমুক্ত করে বাসটি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা তিন ট্রাফিক সহায়ক তাঁদের পরিচয় জানতে চান। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয় দিলে তাঁরা উদ্ধত আচরণ শুরু করেন এবং বাগ্‌বিতণ্ডার এক পর্যায়ে হাতে থাকা লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। এ সময় চার শিক্ষার্থী আহত হন।

ঘটনার পরপরই খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা এসে দয়াগঞ্জ মোড়ে জড়ো হন। ওই তিন ট্রাফিক সহায়ক তখন পুলিশ বক্সে আশ্রয় নেন। এরপর শিক্ষার্থীরা পুলিশ বক্স ঘেরাও এবং সড়ক অবরোধ করেন।

এ সময় সেনাবাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আসেন ট্রাফিক পুলিশের ওয়ারী জোনের ডিসি হারুন উর রশিদ। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, আপনারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন। আমাদের সহযোগিতা করুন। আমরা যথাযথ আইন মেনে আইনি ব্যবস্থা নেব। যারা অপরাধের সাথে জড়িত ছিল, তাদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’ পরে অভিযুক্তদের আটক করে গেন্ডারিয়া থানায় নেওয়া হয়।

অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস থ ম রধর এ সময় অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

ভূমিকম্প ও দুর্ঘটনার আশঙ্কায় মধ্যপাড়া খনি থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ

ভূমিকম্পজনিত ঝুঁকি ও সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়াতে দিনাজপুরের মধ্যপাড়া খনি থেকে পাথর উত্তোলন কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মধ্যপাড়া পাথরখনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী ডি এম জোবায়েদ হোসেন। 

আরো পড়ুন:

ভূমিকম্প আতঙ্কে জবিতে এক সপ্তাহ ক্লাস–পরীক্ষা বন্ধ, হল ছাড়ার নির্দেশ

ভূমিকম্প যেভাবে পৃথিবী পাল্টে দিতে পারে

তিনি জানান, পেট্রোবাংলার নির্দেশে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে রবিবার রাত ১০টা থেকে দুই দিনের জন্য খনিতে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

ডি এম জোবায়েদ হোসেন আরো জানান, সাম্প্রতিক দেশব্যাপী ভূমিকম্পের পর খনির ভেতরে দুর্ঘটনা এড়াতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর পুনরায় কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

খনির কার্যক্রম হঠাৎ বন্ধ হওয়ায় শ্রমিক ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। তবে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এ সাময়িক বিরতি বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা/মোসলেম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ