জামায়াত প্রার্থীদের মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বন্ধের নির্দেশ
Published: 24th, November 2025 GMT
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দলীয় প্রার্থীদের মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করতে নিষেধ করে দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির আমির শফিকুর রহমানের এ–সংক্রান্ত এক নির্দেশনা সারা দেশে দলের শাখা ও সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন জেলা/মহানগরী নির্বাচনী এলাকায় মোটরসাইকেল র্যালি ও মোটর শোভাযাত্রা লক্ষ করা যাচ্ছে। এসব কর্মসূচিতে কয়েকটি দুর্ঘটনা ও আহতের প্রেক্ষাপটে সম্মানিত আমিরে জামায়াত এখন থেকে সব জেলা/মহানগরী নির্বাচনী এলাকায় মোটরসাইকেল র্যালি ও শোভাযাত্রার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতের প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের আজ সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, সংগঠনের পক্ষ থেকে অধস্তন শাখা ও প্রার্থীদের এই নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা রয়েছে। জামায়াত এরই মধ্যে বিভিন্ন আসনে তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। এই প্রার্থীরা প্রচারে নেমে বিভিন্ন স্থানে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রাও করছেন।
আরও পড়ুনসাতক্ষীরায় জামায়াতের প্রার্থীর নেতৃত্বে মোটরসাইকেল মহড়া২২ নভেম্বর ২০২৫গত শনিবার সাতক্ষীরায় এমন এক শোভাযাত্রায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় ফজর আলী নামে এক বৃদ্ধ নিহত হন। এর আগে ১৪ নভেম্বর রংপুরে জামায়াতের নির্বাচনী প্রচারণার মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন দলটির এক কর্মী।
আরও পড়ুনসুনামগঞ্জে জামায়াতের দুই প্রার্থীর মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা২২ নভেম্বর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আসামি ধরতে মধ্যরাতে বাড়িতে পুলিশ, আতঙ্কে প্রবাসীর মৃত্যু
ফেনীর ফুলগাজীতে প্রতিবেশীর করা মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশের আতঙ্কে প্রবাসী এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত দুইটার দিকে উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নের উত্তর শ্রীপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মৃত ব্যক্তির নাম নুর হোসেন (৫৪)। তিনি উত্তর শ্রীপুর গ্রামের মৃত মীর হোসেনের ছেলে। নুর হোসেন দীর্ঘদিন ধরে সৌদিপ্রবাসী। পরিবারে তাঁর স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক কন্যাসন্তান রয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রোববার সকালে উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নের উত্তর শ্রীপুর গ্রামে কয়েকজনের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মর্জিনা আক্তার (২৩) নামের এক গৃহবধূর মাথা ফেটে যায়। আহত গৃহবধূ ওই রাতেই বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে ফুলগাজী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার বাদী তাঁর প্রতিবেশী প্রবাসী নুর হোসেনকে আসামি করেন। মামলার পর রোববার রাত দুইটার দিকে ফুলগাজী থানা-পুলিশের সদস্যরা আসামি নুর হোসেনকে গ্রেপ্তার করতে তাঁর বাড়িতে যান।
পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নুর হোসেন ঘরের দরজা বন্ধ করে রাখেন। পরে পুলিশ স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আবুল খায়েরের সহযোগিতায় নুর হোসেনের ঘরের দরজা খোলে। এ সময় আতঙ্কিত হয়ে নুর হোসেন জ্ঞান হারান। রাতেই তাঁকে উদ্ধার করে বাড়ি থেকে ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক নুর হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর মরদেহ সোমবার সকাল পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছিল।
এদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা সাবেক ইউপি সদস্য আবুল খায়ের জানান, রাত দুইটার দিকে পুলিশ তাঁকে ডেকে নুর হোসেনের বাড়িতে নিয়ে যায়। তিনি নুর হোসেনকে দরজা খুলতে বললে তিনি দরজা খোলেন। এ সময় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে গেলে নুর হোসেন জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গোলাম কিবরিয়া বলেন, রাতে নুর হোসেনকে হাসপাতালে আনা হলেও তার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
ফুলগাজী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম জানান, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নুর হোসেনের বোন রাজিয়া সুলতানা অভিযোগ করে বলেন, ‘দিনে মারামারির ঘটনা হয়েছে বলে দাবি করছে পুলিশ। রাতে মামলা হয়েছে, মধ্যরাতে আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ বাড়ি এসেছে। আমার ভাই কি খুনি না দাগি আসামি যে পালিয়ে যাবে। রাতের বেলা কেন তাঁকে গ্রেপ্তার করতে হবে।’
নুর হোসের স্ত্রী রিমা আক্তার বলেন, ‘প্রতিবেশীদের মারামারি মধ্যে আমার স্বামী উপস্থিত ছিলেন না। তবু কেন আমার স্বামীকে আসামি করা হয়েছে? পুলিশ দিনের বেলা আসামি ধরতে না এসে রাতের বেলা কেন এল? আমার স্বামী তো প্রায় এক বছর ধরে বাড়িতেই রয়েছে। পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’
ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) নিশাত তাবাসসুম বলেন, কী কারণে প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে তা জানতে মরদেহের ময়নাতদন্ত প্রয়োজন। তাতে পরবর্তী সময়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কেউ অভিযোগ করলে আইনগত জটিলতা থাকবে না।