দ্য টাইমসের সংবাদদাতা ডেভিড হোল্ডেন এর লেখা থেকে জানা যায়, এক সময় আরবের অনেক দেশ ভারতের অন্তর্ভূক্ত ছিল। এইতো বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে আরব উপদ্বীপের এক-তৃতীয়াংশই ব্রিটিশ ভারত সাম্রাজ্যের শাসনাধীন ছিল। অ্যাডেন থেকে কুয়েত পর্যন্ত ছিল একাধিক 'প্রোটেক্টরেট'। 

এগুলো দিল্লি থেকে শাসন করা হতো। জয়পুরের মতো আধা-স্বাধীন ভারতীয় রাজ্যগুলোর যে বর্ণানুক্রমিক তালিকা ছিল, তার মধ্যে প্রথমেই আসে আবু ধাবির নাম। লর্ড কার্জন যখন বড়লাট ছিলেন, সেই সময়ে তো তিনি উপদেশ দিয়েছিলেন, ‘‘কেলাত প্রদেশ (বর্তমানের বালোচিস্তান) বা লুস বেলার মতো ওমানকে ভারতীয় সাম্রাজ্যের একটি দেশীয় প্রদেশ হিসাবে গণ্য করা হোক।’’

অ্যাডেন তখন ছিল ভারতের পশ্চিম প্রান্তের শেষ বন্দর। বোম্বে প্রদেশের অধীন ছিল এই বন্দর শহর। ১৯৩১ সালে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী যখন ওই শহরে গিয়েছিলেন। 

আরো পড়ুন:

ইউরোপীয় গুপ্তচর যেভাবে মক্কায় ঢুকেছিলেন

পবিত্র হজের আনুষ্ঠা‌নিকতা শুরু, মিনায় হাজিরা

সেখানে অনেক তরুণ আরব নিজেদের ভারতীয় জাতীয়তাবাদী হিসাবে পরিচয় দিতেন।যুক্তরাজ্য বা ভারতের জনসাধারণের মধ্যে খুব কম মানুষই তখন জানতেন যে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য আরব অঞ্চলেও বিস্তার লাভ করেছিল।

ভারতীয় সাম্রাজ্যের সম্পূর্ণ মানচিত্র প্রকাশ করা হতো না। মূল মানচিত্র খুব গোপনে প্রকাশ করা হত। প্রথমের দিকে তুরস্ক আর পরে সৌদি আরব যাতে কোনো রকম ইন্ধন না পেয়ে যায়, সেজন্যই এই ব্যবস্থা নেওয়া হতো। এ ছাড়া আরব এলাকাগুলোর ব্যাপারে কোনো নথিও জনসমক্ষে আনা হত না।

'র‍য়্যাল এশিয়াটিক সোসাইটি'র এক ভাষণে একজন বলেছিলেন, ‘‘একজন ইর্ষাকাতর শিখ যেমন তার প্রিয় পত্নীকে পর্দার আড়াল করে রাখেন, তেমনই ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের কাজকর্ম এতটাই রহস্যে মোড়া ছিল যে কেউ যদি দুরভিসন্ধি নিয়ে এমন কিছু প্রচার করার চেষ্টা করত যে ওখানে ভয়াবহ কিছু একটা হচ্ছে, তার কথা বিশ্বাস করানো কঠিন হত।’’

ব্রিটিশ শাসকেরা মূলত তুর্কি এবং সৌদির চোখে ধুলা দেওয়ার জন্য এই গোপনীয়তা রক্ষা করতো। তবে ভারতের এই বিশাল সম্রাজ্য ভেঙে পড়ে ১৯৪৭ সালে। তার আগেই ১৯২০ নাগাদ রাজনীতি বদলাতে শুরু করে। ভারতের জাতীয়তাবাদীরা তাদের দেশটিকে সাম্রাজ্যবাদীদের গড়া কোনো দেশ নয়, বরং মহাভারতে যে ভৌগলিক অবস্থানের কথা বলা হয়েছে, তার ওপরে ভিত্তি করে গড়ে ওঠা একটা সাংস্কৃতিক পরিসরের কল্পনা করতে শুরু করেছিলেন। লন্ডনও দেখল যে সীমানা নতুন করে আঁকার সুযোগ এসেছে। অ্যাডেনকে ১৯৩৭ সালের পয়লা এপ্রিল ভারতের থেকে পৃথক করার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল বিভক্তি। এর পর বেশ কয়েকটি বিভক্তি।

ব্রিটিশ রাজ ভেঙ্গে ভারত আর পাকিস্তানের স্বাধীনতার মাত্রই কয়েক মাস আগে, পয়লা এপ্রিল ১৯৪৭ সালে দুবাই থেকে শুরু করে কুয়েত পর্যন্ত উপসাগরীয় রাজ্যগুলো অবশেষে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল।

আরও সময় পরে, যখন ভারতীয় আর পাকিস্তানী কর্মকর্তারা কয়েকশো দেশীয় রাজ্যকে তাদের সদ্য গঠিত নিজ নিজ রাষ্ট্রে সংযুক্ত করার কাজ শুরু করছেন, তখন কিন্তু সেই তালিকায় উপসাগরীয় রাজ্যগুলো আর নেই। খুব কম মানুষই বিস্মিত হয়েছিলেন এবং ৭৫ বছর পরেও যে ভারত অথবা উপসাগরীয় অঞ্চলে ওই ঘটনার গুরুত্ব সম্পূর্ণভাবে অনুধাবন করা গেছে, তা নয়।

সূত্র: বিবিসি

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স দ আরব

এছাড়াও পড়ুন:

প্রথমবারের মতো ডিনস ও মেরিট অ্যাওয়ার্ড দিল বেরোবি

‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) প্রথমবারের মতো সব অনুষদ ও বিভাগের ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকে (সম্মান) কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের ডিনস ও মেরিট অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ প্রদান করা হয়েছে।

‎রবিবার (২৯ জুন) বিকেলে একাডেমিক ভবন-২ এর ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী প্রধান অতিথি হিসেবে ছয় অনুষদভুক্ত বিভাগের এসব শিক্ষার্থীদের মাঝে সম্মাননা স্মারক, সনদপত্র ও চেক প্রদান করেন।

‎এ সময় উপাচার্য বলেন, “আজকের দিনটি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি স্মরণীয় দিন। আজকের দিনের প্রাপ্ত সনদ শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক বেশি মূল্যবান।  সম্মাননা ও সনদ অর্জনের অনুপ্রেরণা শিক্ষার্থীদের অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। স্নাতক পর্যায়ে কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জনকারী সব শিক্ষার্থীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।”

আরো পড়ুন:

মুরাদনগরে নারী ধর্ষণ: জবি ও কুবি শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

যবিপ্রবিতে ছাত্রীদের আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট প্রতিযোগিতা শুরু

তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীরা এই সাফল্যের যথাযথ মূল্যায়ন আগামী দিনে পাবেন। শহীদ আবু সাঈদের ক্যাম্পাসে যারা মেধার স্বাক্ষর রেখেছে, তাদের মাধ্যমে এই বিদ্যাপীঠ আরো সমৃদ্ধি লাভ করবে।”

‎২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষায় অনুষদগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জনকারী চারজন শিক্ষার্থীকে ডিনস অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ এবং বিভাগসমূহের মধ্যে সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জনকারী ১৭ জন শিক্ষার্থীকে মেরিট অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ প্রদান করা হয়।

‎কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক কমলেশ চন্দ্র রায়, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান এবং জীব ও ভূ-বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. এমদাদুল হক।

একাডেমিক শাখার অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার মো. আমিনুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন, অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. মোরশেদ হোসেন এবং রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন-অর রশিদ। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. ফেরদৌস রহমানসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও ‎অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

‎এছাড়াও রংপুরের কে. মুশতাক অ্যান্ড হাসনা ইলাহি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগগুলোতে অধ্যয়নরত চারজন নারী শিক্ষার্থীকে স্কলারশিপের চেক প্রদান করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী।

ঢাকা/‎সাজ্জাদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ