মহানবী (সা.)–র হিজরত মদিনায় হলো যে কারণে
Published: 29th, June 2025 GMT
কুরাইশের নেতৃস্থানীদের নিপীড়ন থেকে বাঁচতে মুসলিমদের প্রথমবার মক্কা ছাড়ার অনুমতি দেন নবীজি (সা.) নবুয়তের পঞ্চম বর্ষে।
৬১৩ খ্রিষ্টাব্দে আরবি রজব মাসে চারজন নারীসহ বারো থেকে পনেরোজন মানুষ আবিসিনিয়ার (বর্তমান ইথিওপিয়া) উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। মক্কার সবাই মুসলিম হয়ে গেছে, এই খবর শুনে কয়েক মাস পরে আবার তাঁরা ফিরে আসেন জন্মভূমিতে। কাছাকাছি পৌঁছে শুনতে পান খবরটি মিথ্যা। কয়েকজন যে-পথে এসেছেন সে-পথেই ফিরে যাবেন বলে থমকে যান, কয়েকজন ফিরে যান মক্কাতেই। যাঁরা আবার আবিসিনিয়ায় ফিরবেন বলে ভাবেন, তাদের সঙ্গে যোগ দেন আরও শতাধিক নারী-পুরুষ। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন নবীজি (সা.
নবীজি (সা.) তাঁদের সঙ্গে ছিলেন না। আবিসিনিয়ায় হিজরতকারীরা যখন আবার হেজাজের পথ ধরেন, ততদিনে নবীজি (সা.)–ও অবশ্য মক্কায় নেই। ৬২১ খ্রিষ্টাব্দের জুনের শেষ দিকে নবীজি (সা.) ইয়াসরিবে চলে গেছেন, যা পরে ‘মদিনাতুন্নবি’ বা ‘নবির শহর’ হয়ে মদিনা নামে খ্যাত হয়েছে। আবিসিনিয়ার মুহাজিরগণ আরও প্রায় সাত বছর পরে ৬২৮ খ্রিষ্টাব্দে সরাসরি মদিনায় এসে নবীজি (সা.)–র সঙ্গে মিলিত হন।
আরও পড়ুনতাঁর জানাজা পড়িয়েছিলেন স্বয়ং রাসুল (সা.)২৬ এপ্রিল ২০২৩প্রশ্ন হলো, নবীজি (সা.) মদিনায় হিজরত করলেন? আবিসিনিয়ায় বা অন্য কোথাও নয়। এর বেশ কয়েকটি কারণ প্রখ্যাত সিরাত গবেষক আবুল আলি নদভি (র.) তাঁর নবিয়ে রহমত গ্রন্থে ব্যাখ্যা করেছেন।
প্রথমতঃ আল্লাহর নির্দেশ। কী রহস্য ছিল এই নির্দেশের পিছনে তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।
দ্বিতীয়তঃ ৬২১ ও ৬২২ খ্রিষ্টাব্দে হজের সুযোগে মক্কায় একদল মদিনাবাসী যেভাবে নবীজি (সা.)–এর কাছে বাইয়াত গ্রহণ করেছেন এবং নবীজি (সা.)–কে রক্ষার দৃঢ় শপথ করেছেন, আল্লাহর কাছে অত্যন্ত সন্তোষজনক বলে মনে হয়েছে। মদিনাকে দারুল হিজরত বা ইসলামের দাওয়াতের কেন্দ্র হিসাবে নির্বাচনের পেছনে মদিনাবাসীদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন ছিল অন্যতম একটি কারণ।
আরও পড়ুননবীজি (সা.)–এর সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু০২ মে ২০২৩তৃতীয়তঃ ইয়াসরিবের ভৌগোলিক সুবিধা। পর্বত, ঘন খেজুর বন আর ‘হাররা’য় (লাভায় গড়া স্থান) তিন দিক থেকে বেষ্টিত নিরাপদ অঞ্চল। এ ছাড়া তা ছিল কৃষি অঞ্চল। সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে মদিনার অবস্থান ছিল দুর্গের মতো নিরাপদ। আরব উপদ্বীপের কাছাকাছি আর কোনো শহর এর সমকক্ষ ছিল না।
চতুর্থতঃ ইয়াসরিবের অধিবাসীদের সহমর্মী মানসিকতা। মদিনার প্রধান দুটি গোত্র আওস ও খায়রাজ জাতীয় মর্যাদাবোধ, আত্মসম্মান, অশ্বারোহণ ও শৌর্য-বীর্যে ছিল বিশিষ্ট। কোনও বড় গোত্র বা হুকুমতকে কখনও তারা কর বা জরিমানা দেয়নি।
পঞ্চমতঃ মদিনার বনি আদি ইবনে নাজ্জার গোত্র ছিল বনি হাশিমের মাতৃকুল। সাহাবি আবু আইয়ুব আনসারি (রা.) ছিলেন সে বংশের একজন। মদিনায় পৌঁছে নবীজি (সা.) তার ঘরে অবস্থান করেন।
বিয়ের পরে ব্যবসার উদ্দেশ্যে হাশিম সিরিয়ায় গেলে সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন। সালমার গর্ভে রেখে যান তার অনাগত সন্তান শাইবাকে।বর্তমান সৌদি আরবের স্বপ্নদ্রষ্টা আবদুল ওয়াহাব নজদির (১৭০৩-১৭৯২) লেখা একটি সিরাত গ্রন্থ হলো মুখতাসার সিরাতুর রসুল (সা.)। এই বইয়ে তিনি সিরাতে ইবনে হিশাম থেকে নিয়ে এই পঞ্চম বিষয়টির একটা সারসংক্ষেপ লিখেছেন। মহানবি (সা.) কেন ইয়াসরিবে গেলেন—তাঁর আলোচনা এ প্রশ্নের চমৎকার একটা মানবীয় ব্যাখ্যা দেয়।
ব্যাখ্যাটা এমন:
মহানবীর (সা.) দাদা আবদুল মুত্তালিবের বাবা হাশিম সিরিয়ায় যাওয়ার পথে ইয়াসরিবের সালমা বিনতে আমেরকে বিয়ে করেন। ইয়াসরিবের দুটি প্রধান গোত্র আওস ও খাজরাজ। সালমা খাজরাজের শাখা বনু নাজ্জার অংশের মেয়ে। বিয়ের পরে ব্যবসার উদ্দেশ্যে হাশিম সিরিয়ায় গেলে সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন। সালমার গর্ভে রেখে যান তার অনাগত সন্তান শাইবাকে।
আরও পড়ুনমদিনায় রাসুল (সা.)-কে যিনি আশ্রয় দিলেন২৭ এপ্রিল ২০২৩হাশিমের ছিল আরও তিন ভাই—মুত্তালিব, আবদে শামস এবং বৈমাত্রেয় ভাই নওফল। মুত্তালিব ছিলেন হাশিমের পরে কুরাইশের নেতা। তাঁর কোনো সন্তানাদি ছিল না। বহু বছর পর মুত্তালিব জানতে পারেন, তার ভাইয়ের ছেলে শাইবা ইয়াসরিবে আছেন। তিনি তাকে চাদরে পেঁচিয়ে মক্কায় নিয়ে আসেন। সালমাকে জানান, তাঁর ইচ্ছা, শাইবাকে নিজের স্থলাভিষিক্ত করবেন।
মক্কার লোকেরা প্রথমে ভেবেছিল, ছেলেটা মুত্তালিবের দাস হবে। ফলে তারা তাকে ‘আবদুল মুত্তালিব’ বা ‘মুত্তালিবের দাস’ নামে ডাকতে থাকে। ধীরে ধীরে প্রজ্ঞায়–প্রশংসায় সবাইকে ছাড়িয়ে মুত্তালিব পরবর্তী নেতৃত্বের শীর্ষে চলে আসেন আবদুল মুত্তালিব।
এ নিয়ে মুত্তালিবের অন্য দুই ভাই নওফল ও আবদে শামসের সঙ্গে বিবাদ হয়। কুরাইশের অন্যান্য অংশেও সহায়তা না পেয়ে নিরুপায় আবদুল মুত্তালিব চিঠি লেখেন সেই ইয়াসরিবে—তার মাতুলালয়ে—তার নাজ্জারি মামাদের কাছে। জানা যায়, কয়েক ছত্র কবিতার মাধ্যমে তিনি আর্জি জানিয়েছিলেন। মামা আবু সাদ বিন আদি ভাগ্নের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসেন।
মক্কাবাসীদের সিরিয়ায় যাওয়ার প্রধান বাণিজ্যপথে ইয়াসরিব হয়েই যেতে হতো। ফলে ইয়াসরিবের প্রধানতম গোত্র খাজরাজি বা নাজ্জারিদের সঙ্গে শত্রুতার পরিণতি নিয়ে আবদে শামসের শঙ্কা থাকারই কথা।
জানা যায়, কয়েক ছত্র কবিতার মাধ্যমে তিনি আর্জি জানিয়েছিলেন। মামা আবু সাদ বিন আদি ভাগ্নের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসেন।তা ছাড়া মক্কারই একটি গোত্র বনু খুজায়া আবদুল মুত্তালিবের নাজ্জারি মামাদের সহায়তায় করেন। এমনকি তারা দারুন নদওয়া বা মক্কার কংগ্রেসনাল সভায় নওফল ও আবদে শামসের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করে। উল্লেখ্য, হাশিমের দাদি মানে আবদে মানাফের মা আতিকার বংশ ছিল বনু খুজায়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত।
মামার পক্ষের এই শক্তি আবদুল মুত্তালিবকে মক্কার নেতৃত্বে পুনর্বাসনে সহায়তা করে।
আশ্রয়ের জন্য ইয়াসরিব বা মদিনাকে বেছে নেওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ ছিল ছিল আত্মীয়তার শক্তি। আত্মীয়-কুটুম্বের গুরুত্ব সে-সময় আরবে ছিল বিরাট। একে উপেক্ষা করা হতো না। ইয়াসরিবের ভূমি মহানবীর (সা.) দাদা আবদুল মুত্তালিবের সময় থেকেই তার বংশধরদের জন্য প্রস্তুত হয়েই ছিল, বর্তমান সময়ের রাজনীতিতে আত্মীয়তা যেমন সহায়তা হয়ে থাকে।
আবদুল মুত্তালিবের বৈরী চাচা আবদে শামসের ছেলেই উমাইয়া। তার ছেলে হারব। তার ছেলে আবু সুফিয়ান। তার ছেলে মুয়াবিয়া। তার ছেলে ইয়াজিদ। পুরোনো নেতৃত্বের প্রশ্নে বনু হাশেমের সঙ্গে বনু উমাইয়ার বৈরিতার রেশ থেকে যাওয়া অস্বাভিক নয়। তা ছাড়া বনু খুজায়ার সঙ্গে সেই থেকেই আবদুল মুত্তালিব বংশের সদ্ভাব। হোদায়বিয়ার ঘটনার পরে তাদের ওপর যখন কুরাইশদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ বনু বকর আক্রমণ করে, সেটাই হয়ে ওঠে মহানবীর (সা.) মক্কা অভিযানের প্রধান অনুঘটক।
আরও পড়ুননবীজি (সা.)-এর মুজিজা২৫ এপ্রিল ২০২৩উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল ম ত ত ল ব র মদ ন য় কর ছ ন আরও প হ জরত
এছাড়াও পড়ুন:
‘তোমাদের কাছে ফিলিস্তিনকে আমানত রেখে যাচ্ছি’
গাজায় আলজাজিরার সাংবাদিক আনাস আল শরিফ রবিবার (১০ আগস্ট) রাতে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছেন। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বিশ্ববাসীর জন্য তিনি একটি শক্তিশালী বার্তা রেখে গেছেন। সংবাদের বাইরে ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষার সারকথা রয়েছে তার এই বার্তায়, যেটিকে তার শেষ বার্তা বলা হচ্ছে।
এই শেষ বার্তায় আনাস আল শরিফ প্রতিশ্রুতি ব্যক্তি করে গেছেন, বলে গেছেন- মৃত্যুর মুখোমুখি হলেও তিনি তার জনগণের অবিচল কণ্ঠস্বর হয়ে থাকবেন এবং গাজার দুঃখ-কষ্ট ও স্বাধীনতার আশার সত্যকে বিশ্বের কাছে পৌঁছে দেবেন।
জন্মভূমির প্রতি, নিজভূমের মানুষের প্রতি, গাজার সন্তানদের প্রতি; বিশ্ববাসীর প্রতি এই বছরের এপ্রিলে আনাস আল শরিফ তার শেষ ইচ্ছা জানিয়ে যান। ইসরায়েল তাকে হত্যার পর আনাসের সহকর্মীরা তার বার্তাটি এক্সে পোস্ট করেছেন।
সংবাদমাধ্যম ‘মিডল ইস্ট আই’ আনাস আল শরিফের বার্তাটি হুবহু ও বিনা সম্পাদনায় পুনঃপ্রকাশ করছে:
এটি আমার আকাঙ্ক্ষা এবং আমার শেষ বার্তা। যদি এই কথাগুলো তোমাদের কাছে পৌঁছায়, জেনে রেখো, ইসরায়েল আমাকে হত্যা করতে এবং আমার কণ্ঠস্বর নীরব করতে সফল হয়েছে।
প্রথমেই, তোমাদের প্রতি শান্তি, আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। আল্লাহ জানেন, জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের গলিপথ ও রাস্তায় চোখ মেলবার পর থেকেই আমি আমার সর্বশক্তি ও সামর্থ্য দিয়ে আমার জনগণের কণ্ঠ ও অবলম্বন হওয়ার চেষ্টা করেছি। আমার আশা ছিল, আল্লাহ আমার আয়ু বাড়িয়ে দেবেন, যাতে আমি আমার পরিবার ও প্রিয়জনদের নিয়ে আমাদের মূল শহর দখলকৃত আসকালানে (আল-মাজদাল) ফিরে যেতে পারি। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছাই আগে এসেছে, আর তার ফয়সালা চূড়ান্ত।
আমি জীবনের প্রতিটি খুঁটিনাটিতে যন্ত্রণা অনুভব করেছি, বহুবার দুঃখ-কষ্ট ও হারানোর স্বাদ পেয়েছি। তবু আমি কখনো সত্যকে যেমন আছে তেমনভাবে তুলে ধরতে দ্বিধা করিনি; বিকৃত বা ভ্রান্ত না করে, যাতে আল্লাহ সাক্ষী থাকেন তাদের বিরুদ্ধে, যারা নীরব থেকেছে, যারা আমাদের হত্যাকে মেনে নিয়েছে, যারা আমাদের নিঃশ্বাস রুদ্ধ করেছে, আর যাদের হৃদয় আমাদের শিশু ও নারীদের ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহাবশেষে নড়েনি; যারা কিছুই করেনি এই গণহত্যা থামাতে, যা আমাদের জনগণ দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে সহ্য করছে।
আমি তোমাদের কাছে ফিলিস্তিনকে আমানত রাখছি, যা মুসলিম বিশ্বের মুকুটের রত্ন, সারা বিশ্বের প্রতিটি স্বাধীন মানুষের হৃদস্পন্দন।
আমি তোমাদের কাছে আমানত রাখছি এর জনগণকে, এর অবিচারপীড়িত ও নির্দোষ শিশুদের, যারা স্বপ্ন দেখার বা নিরাপদে শান্তিতে বাঁচার সুযোগই পায়নি। তাদের পবিত্র দেহ হাজার হাজার টন ইসরায়েলি বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্রের নিচে চূর্ণবিচূর্ণ হয়েছে, ছিন্নভিন্ন হয়ে দেয়ালে ছিটকে পড়েছে।
আমি তোমাদের অনুরোধ করছি— শৃঙ্খল যেন তোমাদের নীরব না করে, সীমানা যেন তোমাদের আটকাতে না পারে। তোমরা যেন সেতু হও, এই ভূমি ও এর জনগণের মুক্তির পথে; যতক্ষণ না মর্যাদা ও স্বাধীনতার সূর্য আমাদের লুট হয়ে যাওয়া মাতৃভূমির আকাশে উদিত হয়।
আমি তোমাদের কাছে আমার পরিবারকে আমানত রাখছি। আমি তোমাদের কাছে আমার প্রিয় কন্যা শামকে আমানত রাখছি, যে আমার চোখের আলো; যাকে আমি আমার স্বপ্নের মতো বড় হতে দেখতে কখনোই পারিনি। আমি তোমাদের কাছে আমার প্রিয় পুত্র সালাহকে আমানত রাখছি, যাকে আমি জীবনপথে সমর্থন দিতে এবং তার শক্তি বাড়িয়ে তুলতে চেয়েছিলাম, যাতে সে আমার বোঝা বহন করে মিশন চালিয়ে যেতে পারে।
আমি তোমাদের কাছে আমার প্রিয় মাকে আমানত রাখছি, যার বরকতময় দোয়া আমাকে এখানে পৌঁছে দিয়েছে, যার প্রার্থনা ছিল আমার দুর্গ, আর যার আলো আমার পথ প্রদর্শন করেছে। আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন তাকে শক্তি দান করেন এবং আমার পক্ষ থেকে শ্রেষ্ঠ প্রতিদান দেন।
আমি আমার জীবনসঙ্গিনী, প্রিয় স্ত্রী উম্মে সালাহকেও (বায়ান) তোমাদের কাছে আমানত রাখছি, যার কাছ থেকে যুদ্ধ আমাকে দীর্ঘদিন ও মাস আলাদা করে রেখেছে। তবু সে আমাদের সম্পর্কের প্রতি অনুগত থেকেছে, জলপাই গাছের কাণ্ডের মতো অবিচল থেকেছে; ধৈর্যশীল, আল্লাহর ওপর আস্থা রাখা, আর আমার অনুপস্থিতিতে পূর্ণশক্তি ও ঈমান নিয়ে দায়িত্ব বহন করা।
আমি তোমাদের আহ্বান করছি, তোমরা যেন তাদের পাশে থাকো, আল্লাহ সর্বশক্তিমানের পর তাদের অবলম্বন হও।
যদি আমি মারা যাই, তবে আমি আমার নীতিতে অবিচল থেকে মরব। আমি আল্লাহর সামনে সাক্ষ্য দিচ্ছি, আমি তার ফয়সালায় সন্তুষ্ট, তার সাথে সাক্ষাতের ব্যাপারে নিশ্চিত এবং নিশ্চিত যে, আল্লাহর কাছে যা আছে তা-ই উত্তম ও চিরস্থায়ী।
হে আল্লাহ, আমাকে শহীদদের কাতারে কবুল করুন, আমার অতীত ও ভবিষ্যতের গোনাহ মাফ করুন, আর আমার রক্তকে এমন আলো বানান, যা আমার জনগণ ও পরিবারকে স্বাধীনতার পথে আলোকিত করবে। যদি আমি কোনো ক্ষেত্রে ত্রুটি করে থাকি, তবে আমাকে ক্ষমা করুন, আর আমার জন্য রহমতের দোয়া করুন, কেননা আমি আমার অঙ্গীকার রেখেছি এবং কখনো তা পরিবর্তন বা বিশ্বাসঘাতকতা করিনি।
গাজাকে ভুলে যেও না… আর আমাকে ভুলে যেও না; তোমাদের আন্তরিক ক্ষমা ও কবুলিয়াতের দোয়ায়।
আনাস জামাল আল-শরিফ
০৬.০৪.২০২৫
ঢাকা/রাসেল