আশুলিয়ায় ভোরে পিকআপ ভ্যানে থাকা সবজি ও মসলায় অগ্নিসংযোগ
Published: 18th, November 2025 GMT
প্রতীকী ছবি
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাজধানীতে শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে ‘আদিবাসী খাদ্য ও শস্যমেলা’
রাজধানীতে আগামী শুক্র ও শনিবার (২১ ও ২২ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে আদিবাসী খাদ্য ও শস্যমেলা। উন্নয়ন সংগঠন নাগরিক উদ্যোগ ও আদিবাসী সুহৃদদের যৌথ উদ্যোগে মিরপুর ১৩–এর পার্বত্য বৌদ্ধসংঘ কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে এই মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
মেলার আয়োজকদের পক্ষে মেইনথিন প্রমীলা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মেলার স্টল বরাদ্দের বিষয়টি প্রচার হওয়ার পর থেকে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। পার্বত্য অঞ্চলের পাশাপাশি সমতলের মান্দি, মনিপুরি, সাঁওতাল ও রাখাইনদের অনেক উদ্যোক্তা ইতিমধ্যেই স্টলের জন্য বুকিং দিয়েছেন। স্টল বুকিংয়ের মধ্যে আদিবাসী নারী উদ্যোক্তাদের প্রাধান্য রয়েছে বলে তিনি জানান। মেলায় আছে রাজধানীর সুপরিচিত পাহাড়ী নারী পরিচালিত ‘হেবাং রেস্তোরাঁ’।
আয়োজকদের সূত্রে জানা গেছে, আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী রন্ধনপ্রণালির তেল ও মসলামুক্ত জনপ্রিয় খাবার নিয়ে অনেক স্টল থাকছে মেলায়। থাকছে পাহাড়ের জনপ্রিয় বাঁশ কোড়ল, কলা পাতার রান্না করা বিভিন্ন পদের হেবাং। পাহাড়ি মুরগি ও কাপ্তাই হ্রদের মাছসহ জুমের (পাহাড়ের বিশেষ কৃষিপদ্ধতি) সবজির মুখরোচক খাবার থাকছে। এ ছাড়া পার্বত্য অঞ্চলের জনপ্রিয় খাবার পাজনের স্বাদ নিতে পারবেন মেলায় আসা দর্শনার্থীরা।
মেইনথিন প্রমীলা জানান, সমতলের আদিবাসীদের বৈচিত্র্যময় খাবারের পসরা সজিয়ে বসবেন মনিপুরি, গারো ও রাখাইনরা। কালো ও সাদা বিনি চালের বিভিন্ন প্রকার মুখরোচক পিঠা নিয়ে হাজির হচ্ছেন রাখাইন জাতিসত্তার খাদ্য উদ্যোক্তরা। থাকছে হালনাগাদ জনপ্রিয় হয়ে ওঠা অনেক ধরনের মুন্ডি।
থাকবে নানা প্রকার টাটকা ফলের ঝাল আইটেম। এই ঝাল আইটেম ‘লাকসো’ নামে বেশি পরিচিত। মেলায় থাকছে কালা বিনিসহ বিভিন্ন জাতের বিনি চালের সমাহার। পাহাড়ি মধুও মেলায় পাওয়া যাবে বলে আয়োজকেরা জানিয়েছেন।
জুমের শাকসবজি, ফলমূল, বৈচিত্র্যপূর্ণ নানা জাতের কৃষিপণ্যের সমাহার এবং শুঁটকির পসরা নিয়ে অনেক উদ্যোক্তা উপস্থিত হবেন।
অন্যতম আয়োজক নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন মেলার বিষয়ে জানান, দেশের শহুরে নাগরিক জনগোষ্ঠীকে আদিবাসীদের বৈচিত্র্যময় সমৃদ্ধ জুম কৃষির বিভিন্ন শস্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য এই মেলার আয়োজন। তিনি আরও বলেন, আদিবাসী উদ্যোক্তরা যেন বেশি বেশি ভোক্তাদের আকৃষ্ট করতে পারেন, সেই তাগিদ থেকেই আদিবাসী খাদ্য ও শস্যমেলা-২০২৫-এর আয়োজন করা। এবার চতুর্থ বছরের মতো আদিবাসী খাদ্য ও শস্যমেলাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলাটি ইতিমধ্যে রাজধানীবাসীর কাছে বেশ সমাদৃত হয়েছে।
মেলার বিষয়ে আয়োজকদের অন্যতম সদস্য মেন্টল চাকমা বলেন, আমাদের দেশে বহুত্ববাদী সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো আদিবাসীদের বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবার। এই বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবারের সঙ্গে বাঙালি জনগণের খাদ্যাভ্যাসের মেলবন্ধন ঘটানোর লক্ষ্যে আদিবাসী খাদ্য ও শস্যমেলার মাধ্যমে তাঁরা সেই প্রয়াস চালাচ্ছেন।
মেলার পাশাপাশি প্রতি সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ আদিবাসী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যাও দর্শনার্থীরা উপভোগ করতে পারবেন। সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় বাংলাদেশ আইডল মং, পাহাড়ের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী জলিপ্রু মারমা, সমান্তর চাকম, কুলিন চাকমা ও গারোদের উদীয়মান গায়ক মার্কুস চিসিমের পরিবেশনা থাকবে। এ ছাড়া থাকছে পাহাড় ও সমতলের আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশনা। মেট্রোরেলে মিরপুর ১০ স্টেশন থেকে রিকশায় পাঁচ মিনিটে মেলার স্থানে পৌঁছানো যাবে। মেলার স্থান পার্বত্য বৌদ্ধসংঘ কমপ্লেক্সের পাশেই রয়েছে স্কলাসটিকা এবং এসওএস শিশুপল্লী। বিপরীতে রয়েছে বিআরটিএর কার্যালয়।