যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের রিপাবলিকানরা দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘বিগ, বিউটিফুল বিল’ পাসের পথে এক ধাপ অগ্রসর হলো। বিশাল ব্যয় এবং কর কমানোর বিলটি উচ্চকক্ষে আলোচনার জন্য উঠবে কিনা, শনিবার রাতে সেই ভোট হয়েছে। তাতে ট্রাম্পের এই ‘বিগ, বিউটিফুল বিল’ ৫১-৪৯ ব্যবধানে উৎরেছে বলে জানিয়েছে সিএনএন।

এখন সিনেটররা বিলটি নিয়ে আলোচনা ও বিতর্ক করবেন; সুযোগ থাকবে নানান সংশোধনী ঢোকানোরও। বিলটি আইনে পরিণত হলে এর হাত ধরে ফেডারেল করের পরিমাণ কমবে, সামরিক খাত ও সীমান্ত নিরাপত্তায় ব্যয় বাড়বে এবং মেডিকেইডের মতো কর্মসূচিতে কম ব্যয় হবে।

ট্রাম্প ৪ জুলাইয়ের মধ্যে বিলে স্বাক্ষর করে সেটিকে আইনে পরিণত করতে চান। কিন্তু সে পর্যন্ত যেতে বিলটিকে আরও বেশ কয়েকটি ধাপ পাড়ি দিতে হবে।

তর্কবিতর্কের পর সিনেটে সংশোধনীসহ গৃহীত হলে বিলটি ফের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে আলোচনা ও ভোটের জন্য যাবে। দুই কক্ষ বিলের একই সংস্করণে একমত না হওয়া পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট তাতে স্বাক্ষর করতে পারবেন না।
শনিবার রাতের ৫১-৪৯ ব্যবধানে জেতাকে ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘অসাধারণ বিজয়’ বলে অভিহিত করেছেন। এ জন্য চার রিপাবলিকান রিক স্কট, মাইক লি, রন জনসন ও সিনথিয়া লামিসকে ধন্যবাদও দিয়েছেন তিনি। এদিন দুই রিপাবলিকান বিপক্ষেও ভোট দিয়েছেন। তারা হলেন– থম তিলিস ও র‌্যান্ড পল। ট্রাম্প পরে এ দু’জনের সমালোচনা করেছেন।

দোদুল্যমান রিপাবলিকানদের মন জয় করতে এদিন ক্যাপিটলে যান ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও। তিনি কয়েক সিনেটরের সঙ্গে দেখা করে তাদের ভোট পক্ষে আনার জোর চেষ্টা চালান। সিনেটর লিসা মুরকোওস্কি প্রথমে বিলটি সিনেটে আলোচনার জন্য উত্থাপনের বিপক্ষে অবস্থান নেবেন বলে জানালেও তাঁর রাজ্য আলাস্কার সুবিধা হবে– এমন কিছু জিনিস বিলে সংযুক্ত হওয়ার পর তিনি মত বদলান।

এদিকে সিনেটের ডেমোক্র্যাটরা বিলটি পাস যেন দেরিতে হয়, তা নিশ্চিতে পার্লামেন্টের সহকারীদের পুরো বিলটি জোরে জোরে পড়ার দায়িত্ব দিয়েছেন, যা শেষ হতে ১০ থেকে ১৫ ঘণ্টা পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র প বল ক ন

এছাড়াও পড়ুন:

আত্মগোপনে থাকা আ.লীগ নেতা বেন্টু ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আত্মগোপনে থাকা আজিজুল আলম বেন্টু (৫৩), তার স্ত্রী গৃহবধূ নাসিমা আলম (৪৮) ও ছেলে রুহিত আমিনের (২৯) বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই আজিজুল আলম বেন্টু আত্মগোপনে রয়েছেন।

রোববার সকালে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন।

মামলার বাদী আমির হোসাইন জানান, আজিজুল আলম বেন্টু আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একচেটিয়া বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। অল্প টাকায় বালুমহাল ইজারা নেওয়ার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। বালুমহাল থেকেই তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। বৈধ আয়ের উৎস না থাকলেও বিপুল সম্পদের মালিক তার স্ত্রী গৃহবধূ নাসিমা আলম (৪৮) ও ছেলে রুহিত আমিন (২৯)।

দুদক জানায়, তার পরিবারের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু হয় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই। আজিজুল আলম বেন্টু, তার স্ত্রী নাসিমা আলম ও ছেলে রুহিত আমিনের নামে দুদক ৩৬টি দলিলে ৯ দশমিক ৪০০৮১৮৯ একর জমির সন্ধান পেয়েছে। অনুসন্ধানে তাদের ১৮ কোটি ৪৩ লাখ ১৭ হাজার ৪৫৮ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়।

সম্পদ বিবরণীতে তথ্য গোপন করে দুদককে ৭ কোটি ৬৪ লাখ ২৬ হাজার ৯৪৫ টাকার সম্পদের বিবরণ দেওয়া হয়। ফলে আয়বর্হিভূত ১০ কোটি ৪৬ লাখ ৪৪ হাজার ৬৮১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ দেখা যায়।

অনুসন্ধানকালে দুদক দেখেছে, বেন্টুর স্ত্রী নাসিমা আলম একজন গৃহিনী হলেও তার নামে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। ২০২৩-২৪ করবর্ষে নাসিমা আলমের দাখিলকৃত আয়কর নথি অনুযায়ী, তার নামে মোট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৫৭ লাখ ৮৪ হাজার ৯৬৭ টাকার। অনুসন্ধানকালে নাসিমা আলমের আয়ের বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। স্বামী বেন্টুর অর্জিত সম্পদ তার নিজের আয়কর ফাইলে দেখিয়ে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। ছেলে রুহিত আমিনের পেশা ছাত্র হলেও তার নামেও আয়কর নথি খোলা হয়েছে। 

২০২৩-২৪ করবর্ষে দাখিলকৃত আয়কর নথি অনুযায়ী, তার নামে মোট সম্পদ ৭৮ লাখ ৫২ হাজার ৭৫৯ টাকার। তারও আয়ের বৈধ কোনো উৎস পাওয়া যায়নি। বাবা বেন্টুর অর্জিত সম্পদ তার আয়কর ফাইলে দেখিয়ে নিজ নামে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। আয়কর নথিতে দেখা যায়, বেন্টু তার স্ত্রী এবং ছেলেকে গাড়ি কেনার জন্য ৬৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকাও দিয়েছেন।

দুদক বলছে, নাসিমা আলম তার স্বামী আজিজুল আলম বেন্টুর অর্জিত জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। একইভাবে ছেলে রুহিত আমিনও তার বাবা আজিজুল আলম বেন্টুর অর্জিত অবৈধ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। এসব অবৈধ সম্পদ নিজেদের নামে রেখে ও ভোগদখল করে তারাও অপরাধ করেছেন। তাই মামলায় বেন্টুর স্ত্রী-ছেলেকেও আসামি করা হয়েছে।

মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বলেন, ‘মামলটি দায়ের করার পর রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে নথি পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ