সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে গত শনিবার আগাম নির্বাচনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন, যা গত কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে বড় সমাবেশ। এতে দেশটির জনতুষ্টবাদী সরকারের ওপর চাপ আরও বাড়ল।  
গত নভেম্বরে সার্বিয়ার নোভি সাদ শহরের একটি রেলস্টেশনের ছাদ ধসে ১৬ জন নিহত হওয়ার পর থেকে দেশটিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে। এ দুর্ঘটনার জন্য দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা দুর্নীতিকে দায়ী করছেন তাঁরা।

শনিবার বেলগ্রেডের প্রধান চত্বর এবং আশপাশের কয়েকটি রাস্তা জনসমাগমে ভরে যায়। স্বাধীন বিক্ষোভ পর্যবেক্ষণ সংস্থা ‘আর্কাইভ অব পাবলিক গ্যাদারিংস’–এর মতে, বিক্ষোভকারীর সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার। কিন্তু পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীর সংখ্যা মাত্র ৩৬ হাজার।

বিক্ষোভকারীরা ‘আমরা নির্বাচন চাই’ স্লোগানে স্লোগানে পরিবেশ উত্তপ্ত করে তোলেন। তাঁদের হাতে সার্বিয়ার বিভিন্ন নগর ও শহরের নামের পোস্টার দেখা যায়। এর মধ্য দিয়ে তাঁরা কে কোন স্থান থেকে এসেছেন, তা বোঝানো হয়েছে।

ছয় মাসের বেশি সময় ধরে শিক্ষার্থীরা সার্বিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অবরোধ করে রেখেছেন, দেশজুড়ে বড় বড় বিক্ষোভের আয়োজন করেছেন এবং নিহতের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন।

শনিবারের বিক্ষোভ আগের শান্তিপূর্ণ সমাবেশগুলোর চেয়ে ভিন্ন ছিল। এবার বিক্ষোভকারী ও পুলিশদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের দিকে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও স্টান গ্রেনেড ছুড়েছে। আর বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে আতশবাজি ছুড়েছে।

পুলিশপ্রধান ড্রাগান বাসিলজেভিচ বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর হামলা চালালে তাঁরাও পাল্টা লাঠিপেটা করেন। কিন্তু ‘রাসায়নিক অস্ত্র’ ব্যবহার করা হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি।

বিক্ষোভস্থল থেকে অনেককে আটক করা হয়েছে। ছয়জন পুলিশ ও দুজন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘স্ট্রিট ফুডের’ দোকানের চাপে ছোট হয়ে আসছে খেলার মাঠ

মাগুরা পৌরসভার নিজনান্দুয়ালী গ্রামের তরুণ রিফাত হোসেন প্রায় প্রতিদিন বিকেলে শহরের নোমানী ময়দানে ফুটবল খেলেন। তাঁর মতো অনেক তরুণের শৈশব-কৈশোরের বিকেল কেটেছে এই মাঠে। তবে এখন সবার কপালে চিন্তার ভাঁজ। কারণ, মাঠে দোকানপাট বসতে থাকায় ক্রমেই খেলার জায়গা সংকুচিত হয়ে আসছে।

শহরের একটি কলেজের স্নাতকে পড়া মো. রিফাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখানে নিয়মিত সভা-সমাবেশের জন্য গর্ত খোঁড়া হয়। সেই সমস্যার মধ্যেও এখানে খেলাধুলা চলে। তবে গত কয়েক মাসে এখানে দোকান বসে যাওয়ায় মাঠ ছোট হয়েছে। ফলে খেলাধুলায় বিঘ্ন ঘটছে। এ ছাড়া এখানে প্রতিদিন ড্রাইভিং শেখানো হয়। এতে মাঠের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গেছে। মাঠে এখন ঘাস নেই বললেই চলে। প্রায়ই খেলোয়াড়দের ইনজুরিতে পড়তে হয়।’

মাগুরা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত নোমানী ময়দান মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী। বহু বছর ধরে শহরের বাসিন্দাদের খেলার মাঠ ও বিনোদনের একমাত্র উন্মুক্ত স্থান হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ মাঠেই প্রতিবছর পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ থেকে শুরু করে বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য মাঠটি ব্যবহৃত হয়। শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ নির্দিষ্ট সময় ছাড়া বন্ধ থাকা বা খেলার অনুপযোগী হয়ে যাওয়ায় খেলাধুলার জন্য নোমানী ময়দানের ওপর নির্ভরশীল শিশু ও তরুণদের একটি বড় অংশ।

খেলোয়াড় ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের আগস্টে সরকার পতনের পর শহরের যানজট কমাতে সড়কের পাশে বসা অস্থায়ী দোকানগুলোকে নোমানী ময়দান–সংলগ্ন সেগুনবাগিচা সড়কের পাশে বসার নির্দেশনা দেয় পৌর প্রশাসন। এর পর থেকে ওই সড়কের পাশ ছাড়িয়ে নোমানী ময়দানের একটি অংশ, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভের চারপাশে বসতে শুরু করে।

গত শনিবার নোমানী ময়দানে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশে অন্তত ৫২টি অস্থায়ী দোকান বসেছে। এর মধ্যে ৪৫টির বেশি চালু রয়েছে। প্রতিদিন বিকেল থেকে প্রায় রাত ১২টা পর্যন্ত এসব দোকান চালু থাকে।

নোমানী ময়দানের আশপাশে অন্তত ৫২টি অস্থায়ী দোকান বসেছে। এতে বিঘিন্ন হচ্ছে খেলাধূলার পরিবেশ। গত শনিবার বিকেলের চিত্র

সম্পর্কিত নিবন্ধ