ইরান-ইসরায়েল সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যে ‘নতুন পথের’ দিকে যাত্রার সুযোগ তৈরি করেছে
Published: 30th, June 2025 GMT
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ‘নতুন পথের’ দিকে যাত্রার সুযোগ তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত টম বারাক। তিনি বলেন, এই পথে তুরস্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
রোববার তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আনাদোলুকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে মাত্রই যা ঘটেছে, তা আমাদের সবার জন্য এটা বলার সুযোগ তৈরি করেছে—“আমরা থেমে যাই। আসুন, নতুন একটি পথ তৈরি করি। এই নতুন পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকবে তুরস্ক।”’
টম বারাক আরও বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য এখন নতুন সংলাপের জন্য প্রস্তুত। মানুষ পুরোনো সেই একই গল্প শুনতে শুনতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।’ কয়েক দশকের পুরোনো শত্রুতাগুলো নতুনভাবে দেখতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ইসরায়েল এখন ‘নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত হওয়ার’ পথে রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন বারাক। মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিবেশী দেশগুলোর এখন বাস্তবতা মেনে নিয়ে ইসরায়েলে সঙ্গে সমঝোতায় আসা দরকার বলে মনে করেন তিনি।
বারাক বলেন, ‘(সিরিয়ার) প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি ইসরায়েলকে ঘৃণা করেন না এবং সীমান্তে শান্তি চান। আমি মনে করি, লেবাননের ক্ষেত্রেও এমনটি হবে। ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছানো প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বলেন, ইসলামপন্থীদের নেতৃত্বে যে বিদ্রোহীরা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদকে ক্ষমতাচ্যূত করেছে, তাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তুরস্ক। এই বিদ্রোহীরা বর্তমানে দামেস্কে সরকার গঠন করেছে। আঞ্চলিক বয়ানে বদল আনতে তুরস্ক একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করতে পারে।
ফিলিস্তিনের গাজায় শিগগিরই যুদ্ধবিরতি হবে বলে মনে করেন বারাক। এটি আঞ্চলিক মানসিকতায় পরিবর্তন আনতেও সহায়তা করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা নিকট ভবিষ্যতে গাজায় যুদ্ধবিরতি দেখতে যাচ্ছি। আমি মনে করি, আমাদের একটি যোগ্য দল রয়েছে, যারা এটি নিয়ে কাজ করছে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফ্লোটিলা বহরের ম্যারিনেট গাজা জলসীমা থেকে কত দূরে
দ্য ম্যারিনেট। ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নৌবহরের নৌযান। নৌযানটি এখনো ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখী যাত্রা অব্যাহত রেখেছে। আজ শুক্রবার আল-জাজিরার অনলাইনে এই তথ্য জানানো হয়।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি বলছে, একমাত্র দ্য ম্যারিনেটকেই এখনো আটক করতে পারেনি ইসরায়েলি বাহিনী। বহরের বাকি নৌযানগুলোকে তারা ইতিমধ্যে আটক করেছে।
দ্য ম্যারিনেট পোল্যান্ডের পতাকাবাহী নৌযান। তবে নৌযানটির মালিকের বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য কোনো নির্ভরযোগ্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে পাওয়া যায়নি।
ফ্লোটিলা বহরে ভেসে চলা একমাত্র জাহাজ ম্যারিনেট কোথায়, দেখুন লাইভ ট্র্যাকারেনৌযানটিতে ছয়জন আরোহী আছেন। এই আরোহীদের মধ্যে একজন তুরস্কের অধিকারকর্মী সিনান আকিলতু। তিনি আজ নৌযানটি থেকে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমরা এখন উচ্চ ঝুঁকির এলাকায় প্রবেশ করেছি। আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা দুটি মহৎ পরিণতির যেকোনো একটির দিকে অগ্রসর হচ্ছি।’
ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকারের তথ্যের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা জানায়, আজ ভোরের দিকে ভূমধ্যসাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমায় চলছিল ম্যারিনেট। এ সময় সূর্যোদয় হচ্ছিল।
ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকারের তথ্য অনুযায়ী, ভোর ৪টার দিকে ম্যারিনেটের গতি ছিল ঘণ্টায় প্রায় ৩ দশমিক ৭৮ নট। (ঘণ্টায় প্রায় ৭ কিলোমিটার)। নৌযানটি গাজার আঞ্চলিক জলসীমা থেকে প্রায় ৪৩ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ৮০ কিলোমিটার) দূরে অবস্থান করছিল।
আরও পড়ুনগ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার জাহাজে জলকামান ব্যবহার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী১৩ ঘণ্টা আগেগ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার একটি বাদে সব নৌযান আটক করেছে ইসরায়েলইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগেই ম্যারিনেটকে সতর্ক করে দিয়েছে। তারা বলেছে, যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ ও অবরোধ ভাঙার যেকোনো চেষ্টা প্রতিহত করা হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে নৌযানটির ক্যাপ্টেন বলেন, ম্যারিনেটের ইঞ্জিনে সমস্যা হচ্ছিল। তবে তা ঠিক করা হয়েছে। নৌযানটি গাজা অভিমুখে চলছে।
ফ্লোটিলা আয়োজকেরা জানিয়েছেন, বহরের ৪২টি নৌযানকে অবৈধভাবে আটকানো হয়েছে। আরোহীদের আটক হয়েছে। তবে তা সত্ত্বেও ম্যারিনেট পিছু হটছে না।
আরও পড়ুনগাজা অভিমুখী নৌবহরে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণ, ধরে নেওয়া হলো অধিকারকর্মীদের৯ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনইসরায়েল ‘জলদস্যুর কাজ’ করেছে: এরদোয়ান১৪ ঘণ্টা আগেগ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা বলেছে, ম্যারিনেট শুধু একটি জাহাজ নয়, ম্যারিনেট হলো ভয়, অবরোধ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তা।
ম্যারিনেট নৌযান এখনো স্টারলিংকের মাধ্যমে সংযুক্ত আছে বলে জানিয়েছে ফ্লোটিলা আয়োজকেরা।
আরও পড়ুনসুমুদ ফ্লোটিলার আটক অধিকারকর্মীরা ২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলে পৌঁছতে পারেন২০ ঘণ্টা আগে