ইরান-ইসরায়েল সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ‘নতুন পথের’ দিকে যাত্রার সুযোগ তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত টম বারাক। তিনি বলেন, এই পথে তুরস্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

রোববার তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আনাদোলুকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে মাত্রই যা ঘটেছে, তা আমাদের সবার জন্য এটা বলার সুযোগ তৈরি করেছে—“আমরা থেমে যাই। আসুন, নতুন একটি পথ তৈরি করি। এই নতুন পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকবে তুরস্ক।”’

টম বারাক আরও বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য এখন নতুন সংলাপের জন্য প্রস্তুত। মানুষ পুরোনো সেই একই গল্প শুনতে শুনতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।’ কয়েক দশকের পুরোনো শত্রুতাগুলো নতুনভাবে দেখতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ইসরায়েল এখন ‘নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত হওয়ার’ পথে রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন বারাক। মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিবেশী দেশগুলোর এখন বাস্তবতা মেনে নিয়ে ইসরায়েলে সঙ্গে সমঝোতায় আসা দরকার বলে মনে করেন তিনি।

বারাক বলেন, ‘(সিরিয়ার) প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি ইসরায়েলকে ঘৃণা করেন না এবং সীমান্তে শান্তি চান। আমি মনে করি, লেবাননের ক্ষেত্রেও এমনটি হবে। ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছানো প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বলেন, ইসলামপন্থীদের নেতৃত্বে যে বিদ্রোহীরা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদকে ক্ষমতাচ্যূত করেছে, তাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তুরস্ক। এই বিদ্রোহীরা বর্তমানে দামেস্কে সরকার গঠন করেছে। আঞ্চলিক বয়ানে বদল আনতে তুরস্ক একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করতে পারে।

ফিলিস্তিনের গাজায় শিগগিরই যুদ্ধবিরতি হবে বলে মনে করেন বারাক। এটি আঞ্চলিক মানসিকতায় পরিবর্তন আনতেও সহায়তা করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা নিকট ভবিষ্যতে গাজায় যুদ্ধবিরতি দেখতে যাচ্ছি। আমি মনে করি, আমাদের একটি যোগ্য দল রয়েছে, যারা এটি নিয়ে কাজ করছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ত রস ক

এছাড়াও পড়ুন:

‘স্ট্রিট ফুডের’ দোকানের চাপে ছোট হয়ে আসছে খেলার মাঠ

মাগুরা পৌরসভার নিজনান্দুয়ালী গ্রামের তরুণ রিফাত হোসেন প্রায় প্রতিদিন বিকেলে শহরের নোমানী ময়দানে ফুটবল খেলেন। তাঁর মতো অনেক তরুণের শৈশব-কৈশোরের বিকেল কেটেছে এই মাঠে। তবে এখন সবার কপালে চিন্তার ভাঁজ। কারণ, মাঠে দোকানপাট বসতে থাকায় ক্রমেই খেলার জায়গা সংকুচিত হয়ে আসছে।

শহরের একটি কলেজের স্নাতকে পড়া মো. রিফাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখানে নিয়মিত সভা-সমাবেশের জন্য গর্ত খোঁড়া হয়। সেই সমস্যার মধ্যেও এখানে খেলাধুলা চলে। তবে গত কয়েক মাসে এখানে দোকান বসে যাওয়ায় মাঠ ছোট হয়েছে। ফলে খেলাধুলায় বিঘ্ন ঘটছে। এ ছাড়া এখানে প্রতিদিন ড্রাইভিং শেখানো হয়। এতে মাঠের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গেছে। মাঠে এখন ঘাস নেই বললেই চলে। প্রায়ই খেলোয়াড়দের ইনজুরিতে পড়তে হয়।’

মাগুরা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত নোমানী ময়দান মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী। বহু বছর ধরে শহরের বাসিন্দাদের খেলার মাঠ ও বিনোদনের একমাত্র উন্মুক্ত স্থান হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ মাঠেই প্রতিবছর পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ থেকে শুরু করে বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য মাঠটি ব্যবহৃত হয়। শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ নির্দিষ্ট সময় ছাড়া বন্ধ থাকা বা খেলার অনুপযোগী হয়ে যাওয়ায় খেলাধুলার জন্য নোমানী ময়দানের ওপর নির্ভরশীল শিশু ও তরুণদের একটি বড় অংশ।

খেলোয়াড় ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের আগস্টে সরকার পতনের পর শহরের যানজট কমাতে সড়কের পাশে বসা অস্থায়ী দোকানগুলোকে নোমানী ময়দান–সংলগ্ন সেগুনবাগিচা সড়কের পাশে বসার নির্দেশনা দেয় পৌর প্রশাসন। এর পর থেকে ওই সড়কের পাশ ছাড়িয়ে নোমানী ময়দানের একটি অংশ, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভের চারপাশে বসতে শুরু করে।

গত শনিবার নোমানী ময়দানে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশে অন্তত ৫২টি অস্থায়ী দোকান বসেছে। এর মধ্যে ৪৫টির বেশি চালু রয়েছে। প্রতিদিন বিকেল থেকে প্রায় রাত ১২টা পর্যন্ত এসব দোকান চালু থাকে।

নোমানী ময়দানের আশপাশে অন্তত ৫২টি অস্থায়ী দোকান বসেছে। এতে বিঘিন্ন হচ্ছে খেলাধূলার পরিবেশ। গত শনিবার বিকেলের চিত্র

সম্পর্কিত নিবন্ধ