মাগুরা পৌরসভার নিজনান্দুয়ালী গ্রামের তরুণ রিফাত হোসেন প্রায় প্রতিদিন বিকেলে শহরের নোমানী ময়দানে ফুটবল খেলেন। তাঁর মতো অনেক তরুণের শৈশব-কৈশোরের বিকেল কেটেছে এই মাঠে। তবে এখন সবার কপালে চিন্তার ভাঁজ। কারণ, মাঠে দোকানপাট বসতে থাকায় ক্রমেই খেলার জায়গা সংকুচিত হয়ে আসছে।

শহরের একটি কলেজের স্নাতকে পড়া মো. রিফাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখানে নিয়মিত সভা-সমাবেশের জন্য গর্ত খোঁড়া হয়। সেই সমস্যার মধ্যেও এখানে খেলাধুলা চলে। তবে গত কয়েক মাসে এখানে দোকান বসে যাওয়ায় মাঠ ছোট হয়েছে। ফলে খেলাধুলায় বিঘ্ন ঘটছে। এ ছাড়া এখানে প্রতিদিন ড্রাইভিং শেখানো হয়। এতে মাঠের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গেছে। মাঠে এখন ঘাস নেই বললেই চলে। প্রায়ই খেলোয়াড়দের ইনজুরিতে পড়তে হয়।’

মাগুরা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত নোমানী ময়দান মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী। বহু বছর ধরে শহরের বাসিন্দাদের খেলার মাঠ ও বিনোদনের একমাত্র উন্মুক্ত স্থান হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ মাঠেই প্রতিবছর পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ থেকে শুরু করে বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য মাঠটি ব্যবহৃত হয়। শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ নির্দিষ্ট সময় ছাড়া বন্ধ থাকা বা খেলার অনুপযোগী হয়ে যাওয়ায় খেলাধুলার জন্য নোমানী ময়দানের ওপর নির্ভরশীল শিশু ও তরুণদের একটি বড় অংশ।

খেলোয়াড় ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের আগস্টে সরকার পতনের পর শহরের যানজট কমাতে সড়কের পাশে বসা অস্থায়ী দোকানগুলোকে নোমানী ময়দান–সংলগ্ন সেগুনবাগিচা সড়কের পাশে বসার নির্দেশনা দেয় পৌর প্রশাসন। এর পর থেকে ওই সড়কের পাশ ছাড়িয়ে নোমানী ময়দানের একটি অংশ, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভের চারপাশে বসতে শুরু করে।

গত শনিবার নোমানী ময়দানে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশে অন্তত ৫২টি অস্থায়ী দোকান বসেছে। এর মধ্যে ৪৫টির বেশি চালু রয়েছে। প্রতিদিন বিকেল থেকে প্রায় রাত ১২টা পর্যন্ত এসব দোকান চালু থাকে।

নোমানী ময়দানের আশপাশে অন্তত ৫২টি অস্থায়ী দোকান বসেছে। এতে বিঘিন্ন হচ্ছে খেলাধূলার পরিবেশ। গত শনিবার বিকেলের চিত্র.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শহর র ময়দ ন

এছাড়াও পড়ুন:

যশোরে মাদক সেবন নিয়ে বিরোধ, সহযোগীদের ছুরিকাঘাতে তরুণ খুন

যশোর শহরে মাদক সেবন নিয়ে বিরোধের জেরে ছুরিকাঘাতে তানভীর (২২) নামের এক তরুণ নিহত হয়েছেন। আজ রোববার ভোরে শহরের বেজপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

নিহত তানভীর বেজপাড়া এলাকার মিন্টু মিয়ার ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডে জড়িত চারজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক এবং একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত তানভীরের প্যান্টের পকেট থেকে ৬১টি ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাতে জানা গেছে, গতকাল শনিবার দিবাগত রাত একটার দিকে বেজপাড়া তালতলা এলাকায় রাস্তার পাশে তানভীরকে গুরুতর আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। এক পথচারী তাঁকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তানভীরকে মৃত ঘোষণা করেন।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার বলেন, নিহত তানভীর বেজপাড়া এলাকার চিহ্নিত একজন মাদক ব্যবসায়ী। তাঁর বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মাদকের তিনটি মামলা রয়েছে। তানভীরের মৃত্যুর পর তাঁর পরিহিত প্যান্টের পকেট থেকে ৬১টি ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, বেজপাড়া এলাকায় মাদক সেবনকে কেন্দ্র করে তানভীর ও তাঁর সহযোগীদের মধ্যে গন্ডগোল হয়। সেই বিরোধের জেরে তানভীরকে ছুরি মেরে হত্যা করা হতে পারে। হত্যাকাণ্ডের পেছনে আর কোনো কারণ আছে কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ