সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে হামলা, প্রতিবাদে মানববন্ধন, সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার
Published: 1st, July 2025 GMT
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে শহরের নিউমার্কেট মোড়ে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে, হামলার ঘটনায় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাদি হয়ে ১৮ জনসহ অজ্ঞাত আরো প্রায় ৩০ জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকালে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামিনুল হক মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘‘এ মামলায় একজন চিহ্নিত ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।’’
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাসেমের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জি, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপী, অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহি, প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি আবুল কালাম, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখ। এ সময় সেখানে অর্ধশত সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে আবুল কাসেম বলেন, ‘‘সাংবাদিকদের দীর্ঘদিনের আকাঙ্খা প্রেসক্লাবের একটি গ্রহণযোগ্য ভোট। এ লক্ষ্যে ধারাবাহিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলমান রয়েছে। এছাড়া সাধারণ সদস্যদের প্রেসক্লাবে যাতায়াত একটি গঠণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু প্রেসক্লাবের কতিপয় সদস্য গঠণতন্ত্রের ধার না ধেরে একটি মনগড়া কমিটি গঠন করে সাধারণ সদস্যদের প্রেসক্লাবে যাতায়াত অঘোষিতভাবে বন্ধ করেছে।’’
সোমবার পূর্বঘোষিত সাধারণ সভায় যোগদানের উদ্দেশ্যে প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে সাধারণ সদস্যরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে প্রবেশের আগেই রাস্তায় লাঠি, রড, হাতুড়িসহ দেশী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা সাংবাদিকদের ওপর হায়েনার মতো ঝাপিয়ে পড়ে। এতে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক এম বেলাল হোসাইন, সাধারণ সদস্য আমিনুর রহমান, ইদ্রিস আলীসহ অন্তত ২৫ জন সাংবাদিক আহত হন।
সামগ্রিক পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের আহ্বানে মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকালে উভয় গ্রুপের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে আগামী ৮ জুলাই জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আবারও একটি সভা আহ্বানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এদিকে, জেলা প্রশাসন কর্তৃক আগামী ৮ জুলাই নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রতিশ্রুতিতে প্রেসক্লাবের সকল কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।
শাহীন//
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অন্তঃসত্ত্বা নারীকে মারধরের অভিযোগ, নওগাঁয় ইউএনওর অপসারণ চেয়ে মানববন্ধন
নওগাঁর ধামুইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহরিয়ার রহমান ও ধামুইরহাট পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুস সালামের বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ দুজনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ বুধবার দুপুরে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের শাস্তি ও ইউএনওর অপসারণের দাবিতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, উপজেলার মঙ্গলকোঠা আবাসিক এলাকায় ধামুইরহাট পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকালে পৌরসভার লোকজনের সঙ্গে এলাকাবাসীর বাগ্বিতণ্ডা হয়। ময়লা ফেলতে বাধা দেওয়ার খবর পেয়ে ইউএনও শাহরিয়ার রহমান ও পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুস সালাম ঘটনাস্থলে যান। এ সময় ওই দুই কর্মকর্তা প্রকাশ্যে মঙ্গলকোঠা এলাকার এক অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ দুই নারীকে মারধর করেন।
গৃহবধূ সামিরন খাতুন বলেন, ‘পৌরসভার লোকজন গাড়িতে করে আমাদের এলাকায় ময়লা ফেলতে এলে এলাকার সবাই মিলে বাধা দিই। বসতবাড়ির আশপাশে ময়লা ফেললে সমস্যা হবে বলে ইউএনওকে ময়লা না ফেলতে এলাকাবাসী অনুরোধ করেন। কিন্তু ইউএনও আমাদের কথা না শুনে আমাকেসহ মিতুকে (অন্তঃসত্ত্বা নারী) নিজেই লাঠি দিয়ে মারধর করেন। আমরা ইউএনওর অপসারণসহ তাঁর কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
মানববন্ধনে স্থানীয় আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘ইউএনও আমার গর্ভবতী স্ত্রীর গায়ে তুলেছে সবার সামনে। একজন ইউএনওর আচরণ এমন হলে আমরা বিচার কার কাছে পাব?’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও শাহরিয়ার রহমান বলেন, পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা একটি খাস জমিতে ময়লা ফেলতে গেলে স্থানীয় কয়েকজন বাধা দেন এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের গালমন্দ করে তাড়িয়ে দেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য তিনি ওই এলাকায় গেলে এলাকার কিছু লোক তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। সেখানে কয়েকজন অবৈধ দখলদার নারী-পুরুষ বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেন। একপর্যায়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও আনসারদের গায়ে হাত তোলেন। নারীদের মারধরের অভিযোগের বিষয়ে তিনি দাবি করেন, ‘সেখানে কারও গায়ে হাত তোলা হয়নি। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।’
জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল প্রথম আলোকে বলেন, আজ মানববন্ধন করে কিছু লোক ইউএনওর বিরুদ্ধে নারীকে মারধরের অভিযোগ করেন। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও জেলা প্রশাসনের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক।