খুবির অধীনে মৎস্য বীজ খামার অন্তর্ভুক্তির দাবি
Published: 30th, September 2025 GMT
মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) আওতায় আনার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরাসহ খুলনার জনসাধারণ ও সর্বস্তরের নাগরিক সংগঠন।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় গল্লামারীস্থ এই মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারের মূল গেটে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। খামারটি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) সামনের অনেকটা জায়গা জুড়ে অবস্থিত।
আরো পড়ুন:
খুবিতে নারীর সুরক্ষা-বিষয়ক চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতার সম্মাননা প্রদা
এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে গাইবান্ধায় নেওয়া হলো খুবি শিক্ষার্থীর মরদেহ
এদিকে, মঙ্গলবার দুপুরে পর্যালোচনা করে সুপারিশ এবং প্রতিবেদন প্রেরণের লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো.
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ লেবার পার্টি খুলনা জেলা শাখা, নাগরিক সমাজ খুলনা, বৃহত্তম খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি, বটিয়াঘাটা উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন খুলনা বিভাগ, আমরা বৃহত্তর খুলনাবাসী, ডুমুরিয়া উপজেলা কল্যাণ সমিতি, সুশীল সমাজ খুলনা, বরিশাল বিভাগীয় কল্যাণ সমিতি খুলনা, দক্ষিণ অঞ্চল উন্নয়ন পরিষদ, নাগরিক ফোরাম খুলনা ও বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি।
এছাড়াও মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, বিএনপির খুলনা জেলা সভাপতি আমীর এজাজ খান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী খুলনা মহানগরীর আমীর মাহফুজর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টির বিভাগীয় সংগঠক আহম্মেদ হামিম রাহাত, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির নেতা মিজানুর রহমান বাবু, দক্ষিণ অঞ্চল উন্নয়ন পরিষদের নেতা ইব্রাহিম হাওলাদার, আমরা বৃহত্তর খুলনাবাসীর সভাপতি আবু তাহের, বরিশাল বিভাগীয় কল্যাণ সমিতির সভাপতি হাজী আব্দুল মালেক, ডুমুরিয়া উপজেলা কল্যাণ সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব আবুল কাশেম, মানবাধিকার কমিশন খুলনা শাখার সভাপতি এস. এম. মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, আমরা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই যৌক্তিক দাবির সঙ্গে সম্পূর্ণ সমর্থন প্রকাশ করছি। আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতির জন্য অনতিবিলম্বে মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাভুক্ত করতে হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি গবেষণায়ও বেশি পারদর্শী হয়ে উঠতে পারে এবং দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম আয়ের উৎস মাছ নিয়ে উল্লেখযোগ্য গবেষণা করতে পারে।
তারা বলেন, আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, যত দ্রুত সম্ভব খুলনাবাসীর এ দাবি মেনে নিয়ে মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারকে সম্পূর্ণরূপে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাভুক্ত করে দেওয়া হোক।
মানববন্ধন শেষে খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি, আমরা বৃহত্তর খুলনাবাসী ও খুলনা সিভিল সোসাইটির উদ্যোগে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. ইমামুদ্দিন কবির ও কমিটির সদস্যদের কাছে স্বারকলিপি প্রদান করা হয়।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট কক্ষে একটি মিটিং আয়োজন করা হয়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের দি অফিস অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আশিক উর রহমান গল্লামারী মৎস্য খামার হস্তান্তরের সুযোগ-সুবিধা একটি স্লাইড প্রেজেন্টেশনে উপস্থাপন করেন।
এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ইমামুদ্দিন কবির বলেন, “আমরা একটি মিটিং আয়োজন করব। সেখানে এসব বিষয় উপস্থাপন করা হবে।”
ঢাকা/হাসিব/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে বিদ্যালয়ের মালামাল বিক্রির ঘটনায় ঝাড়ু-জুতা মিছিল
সোনারগাঁয়ে পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মালামাল রাতের আধাঁরে গোপনে বিক্রির ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবীতে ঝাড়ু ও জুতা মিছিল করেছেন বিদ্যালয়ের বর্তমান–সাবেক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে সাদিপুর ইউনিয়নের পঞ্চমীঘাট স্কুলের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। অভিযুক্ত বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূইয়া, সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া মাসুম এবং একাধিক অভিযোগের মুখে থাকা প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, “এ ইউনিয়নকে যেন ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করে মাসুম ও মনিরুজ্জামান নিজেদের ইচ্ছেমতো সব কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
তাদের নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের মালামাল রাতের আধাঁরে নিয়মবহির্ভূতভাবে বিক্রি করা হয়। পরে এলাকাবাসী মালামাল ভর্তি গাড়ি আটক করে। কিন্তু এখন উল্টো ভালো মানুষদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।”
সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান মাসুদ মোল্লা বলেন, “একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালামাল চুরি করে বিক্রি করার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা আমাদের ইউনিয়নের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে।
স্কুলের মতো পবিত্র জায়গায় দুর্নীতি ও অনিয়ম কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এলাকাবাসী রাতেই মালামাল আটকে দিয়ে প্রমাণ করেছে—এ এলাকার মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবসময় ঐক্যবদ্ধ। আমরা চাই প্রশাসন যেন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে।”
এলাকাবাসীরা জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালামাল বিক্রির মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে প্রয়োজন কঠোর নজরদারি ও পরিচালনা কমিটিতে সৎ-নিষ্ঠাবান ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি।
মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসী ঝাড়ু ও জুতা প্রদর্শন করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া মাসুম জানান, একটি কুচক্রী মহল উদ্দেশ্যপ্রণীত ভাবে আমাদের বিতর্কিত করতে বিক্রি করা মালামাল চুরির ঘটনা সাজিয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে গতকাল মিটিং করেছি৷
অভিযুক্ত বর্তমান কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূইয়া জানান, আমরা স্কুলের একটি কমিটি করে বিক্রি করেছি। তবেমাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে কোনো অনুমতি নেই নি। বিক্রি করার পর গাড়িতে উঠাতে রাত হয়ে যায়। এখানে কোনো চুরির ঘটনা ঘটে নি।
উল্লেখ্য, গত (৯ সেপ্টেম্বর) শনিবার স্কুল বন্ধ থাকা সত্ত্বেও সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককের নির্দেশে রাতের আধাঁরে নিয়মবহির্ভূতভাবে পঞ্চমীঘাট স্কুলের মালামাল বিক্রি করা হয়। যা স্থানীয় এক ভাঙ্গারীর পিক-আপ ভ্যানে নেয়ার সময় স্থানীয়রা আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।