খাগড়াছড়িতে মারমা কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ এবং এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভাকারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজধানীতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। মানববন্ধন থেকে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবি জানানো হয়।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন হয়। এতে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন গণসাক্ষরতা অভিযান, ব্লাস্ট, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র ও নারী প্রগতি সংঘের সদস্যরা।

মানববন্ধনে মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, এখনো ধর্ষণের মামলা করতে গেলে নির্যাতনের শিকার নারীকে আলামত দিতে হয়। নির্যাতনের শিকার নারী কেন আলামত দেবে? ধর্ষণকারী প্রমাণ করবে তিনি ধর্ষণ করেছেন কি করেননি।

ফওজিয়া মোসলেম আরও বলেন, পাহাড়ি আদিবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে নানা বৈষম্যের শিকার। তাদের ওপর সহিংস আক্রমণ চালিয়ে একধরনের সাম্প্রদায়িক উসকানি তৈরি করা হচ্ছে। এর দায়ভার কে নেবে?

মানববন্ধনে মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, খাগড়াছড়িতে ন্যায়বিচার না পেয়ে যখন এলাকাবাসী ফুঁসে উঠল, তখন দেখা গেল প্রতিবাদকারীদের ওপরই হামলা চালানো হলো, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট ঘটল। কিন্তু একটি নিরীহ কিশোরী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা কোথায় ছিল—এ প্রশ্ন আজ সবার মনে জেগে উঠেছে।

মালেকা বানু আরও বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে যারা প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে, তাদেরও বিচারের আওতায় আনা জরুরি।

মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইড সম্পাদক রেখা সাহা বলেন, ‘সব খবর পত্রিকায় আসে না। পাহাড়ের নারী ও মেয়েরা সহজে ধর্ষণের শিকার হন। যেকোনো বয়স ও ধর্মের নারী হামলার শিকার হলেই মহিলা পরিষদের সদস্যরা এখানে প্রতিবাদ করতে আসি। কিন্তু এসব ঘটনার প্রতিকার হচ্ছে না।’

নারী প্রগতি সংঘের সেলিনা পারভিন বলেন, ‘গত এক বছরে এ ধরনের কত ঘটনা ঘটেছে, আপনারা কেউ বলতে পারেন? অথচ আপনারা দেশ পরিবর্তন করতে চেয়েছেন। খাগড়াছড়িতে যে ঘটনা ঘটেছে, একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছে। আমরা এমন দেখতে চাই না।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদা রেহানা বেগম এবং ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেহানা ইউনূস।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক র দ র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁয়ে বিদ্যালয়ের মালামাল বিক্রির ঘটনায় ঝাড়ু-জুতা মিছিল

সোনারগাঁয়ে পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মালামাল রাতের আধাঁরে গোপনে বিক্রির ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবীতে ঝাড়ু ও জুতা মিছিল করেছেন বিদ্যালয়ের বর্তমান–সাবেক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসী।

রবিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে সাদিপুর ইউনিয়নের পঞ্চমীঘাট স্কুলের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। অভিযুক্ত বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূইয়া, সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া মাসুম এবং একাধিক অভিযোগের মুখে থাকা প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তারা।

মানববন্ধনে সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, “এ ইউনিয়নকে যেন ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করে মাসুম ও মনিরুজ্জামান নিজেদের ইচ্ছেমতো সব কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।

তাদের নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের মালামাল রাতের আধাঁরে নিয়মবহির্ভূতভাবে বিক্রি করা হয়। পরে এলাকাবাসী মালামাল ভর্তি গাড়ি আটক করে। কিন্তু এখন উল্টো ভালো মানুষদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।”

সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান মাসুদ মোল্লা বলেন, “একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালামাল চুরি করে বিক্রি করার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা আমাদের ইউনিয়নের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে।

স্কুলের মতো পবিত্র জায়গায় দুর্নীতি ও অনিয়ম কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “এলাকাবাসী রাতেই মালামাল আটকে দিয়ে প্রমাণ করেছে—এ এলাকার মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবসময় ঐক্যবদ্ধ। আমরা চাই প্রশাসন যেন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে।”

এলাকাবাসীরা জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালামাল বিক্রির মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে প্রয়োজন কঠোর নজরদারি ও পরিচালনা কমিটিতে সৎ-নিষ্ঠাবান ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি।

মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসী ঝাড়ু ও জুতা প্রদর্শন করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া মাসুম জানান, একটি কুচক্রী মহল উদ্দেশ্যপ্রণীত ভাবে আমাদের বিতর্কিত করতে বিক্রি করা মালামাল চুরির ঘটনা সাজিয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে গতকাল মিটিং করেছি৷  

অভিযুক্ত বর্তমান কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূইয়া জানান, আমরা স্কুলের একটি কমিটি করে বিক্রি করেছি। তবেমাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে কোনো অনুমতি নেই নি। বিক্রি করার পর গাড়িতে উঠাতে রাত হয়ে যায়। এখানে কোনো চুরির ঘটনা ঘটে নি।  

উল্লেখ্য, গত (৯ সেপ্টেম্বর) শনিবার স্কুল বন্ধ থাকা সত্ত্বেও সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককের নির্দেশে রাতের আধাঁরে নিয়মবহির্ভূতভাবে পঞ্চমীঘাট স্কুলের মালামাল বিক্রি করা হয়। যা স্থানীয়  এক ভাঙ্গারীর পিক-আপ ভ্যানে নেয়ার সময় স্থানীয়রা আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নেত্রকোনায় সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • পদোন্নতি-নিয়োগ নিয়ে অসন্তোষ, আজ বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের মানববন্ধন
  • ড্রামে ২৬ টুকরা লাশ, দ্রুত বিচারের দাবিতে বদরগঞ্জে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ
  • সিরাজগঞ্জে ‘যমুনা’ নামে নতুন উপজেলার দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
  • পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন
  • পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে কুবিতে মানববন্ধন
  • সোনারগাঁয়ে বিদ্যালয়ের মালামাল বিক্রির ঘটনায় ঝাড়ু-জুতা মিছিল
  • যৌন নিপীড়নের অভিযোগে গ্রেপ্তার ঢাবি অধ্যাপকের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
  • তিন জেলায় বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তন চেয়ে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধে মানুষের দুর্ভোগ
  • রাজশাহীতে বিএনপির নারী কর্মীকে মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন