টাঙ্গাইলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচিতে বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রদের জোর করে নেওয়া হয়েছে, এমন অভিযোগে শহরে বিক্ষোভ হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে স্কুলটির প্রাক্তন ও বর্তমান কিছু ছাত্র। মিছিলটি স্কুলের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। এ সময় এনসিপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বর্তমান শিক্ষার্থী সাইফুল বারী, প্রাক্তন শিক্ষার্থী তানজিল আহমেদ, সজিব আহমেদ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, এনসিপির নেতারা গতকাল মঙ্গলবার স্কুলের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করেন। এ সময় তাঁরা শিক্ষকদের অনুমতি ছাড়াই শিক্ষার্থীদের এনসিপির সমাবেশে যেতে বাধ্য করেন।

বক্তারা আরও বলেন, যাঁরা শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে যেতে বাধ্য করেছেন, তাঁদের শাস্তি দিতে হবে। একই সঙ্গে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান তাঁরা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘মঙ্গলবার দিবা শাখার ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির ক্লাস শেষে ছুটি হয়েছিল। কিন্তু পরে স্কুলের পাশে নিরালা মোড়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির সমাবেশের মাইকের শব্দের কারণে নবম ও দশম শ্রেণির ক্লাস ছুটি দেওয়া হয়। কারা সমাবেশে গেছে, তা আমাদের জানা নেই।’

আজ বুধবার শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ মিছিল সম্পর্কে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘একটি প্রতিবাদ মিছিল ছাত্ররা করেছে। আমাদের সঙ্গে কথা বলে এ কর্মসূচি তারা পালন করেনি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী মাসুদুর রহমান (রাসেল) বলেন, ‘আমি এ নিয়ে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করছি। আমরা তাদের বলেছি, ভবিষ্যতে এনসিপির কোনো প্রোগ্রামে তাদের আনা হবে না।’

প্রসঙ্গত, গতকাল সকালে শহরের শামছুল হক তোরণ এলাকা থেকে এনসিপির জুলাই পদযাত্রা শুরু হয়। পদযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে নিরালা মোড়ে পথসভা হয়। এতে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন।

এদিকে এনসিপির সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) আজাদ খান ভাসানী আজ ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির জুলাই পদযাত্রায় টাঙ্গাইলে বিন্দুবাসিনীর শিক্ষার্থীদের উপস্থিত হওয়া নিয়ে দলীয় কোনো নির্দেশনা বা ভূমিকা ছিল না। বিচ্ছিন্নভাবে এই ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে। আমাদের পদযাত্রা পুরাতন বাসস্ট্যান্ড পৌঁছালে ছাত্রীরা প্রথমে নাহিদ ইসলাম, ডা.

জারা, সামান্তা শারমিনদের স্বাগত জানাতে আসে। স্টেজের কাছাকাছি পৌঁছালে কিছু ছাত্র সারজিস আলমসহ সবাইকে ঘিরে ধরে। কেউ কেউ ছবি উঠাতে চায়। পরবর্তীতে জানতে পারি, বিন্দুবাসিনীর ছাত্ররা নাহিদ ইসলামের কাছে কিছু দাবি জানাতে চায়। কিন্তু ঘটনাটি পরবর্তীতে অন্য দিকে মোড় নেয়। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন টাঙ্গাইল জেলার সাবেক সদস্যসচিব আহমেদ শেরশাহ ব্যাখ্যা দিয়েছে এবং দুঃখপ্রকাশ করেছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকেও আমরা এই অনভিপ্রেত ঘটনার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে ব্যাপারে সবাইকে সচেষ্ট থাকার জন্য অনুরোধ করছি।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এনস প র পদয ত র ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

হাতিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে পালিয়ে থাকা সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গ্রেপ্তার

নোয়াখালীর হাতিয়ায় শ্বশুরবাড়ি থেকে সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার বুড়িরচরের জোড়খালী গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে হাতিয়া থানা-পুলিশ।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার মো. আলাউদ্দিন সন্দ্বীপ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হরিষপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হাতিয়ার শ্বশুরবাড়িতে পালিয়েছিলেন। গ্রেপ্তারের পর তাঁকে হাতিয়া থানা হাজতে রাখা হয়। পরে সেখান থেকে দুপুরের দিকে আদালতে পাঠানো হয়।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজমল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা মো. আলাউদ্দিন জোড়খালী গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করে সরকার বিরোধী নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। গোপন সংবাদে বিষয়টি টের পাওয়ার পরই তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ওসি এ কে এম আজমল হুদা জানান, সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে আলাউদ্দিন ও তাঁর ১৫ সহযোগীর বিরুদ্ধে থানায় নাশকতার পরিকল্পনার মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে হাতিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার অপর আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ