শিক্ষার গতিপথ ও উন্নয়ন নিয়ে ঢাবিতে সেমিনার
Published: 30th, July 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ‘বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থান ও শিক্ষার গতিপথ: প্রত্যাশা অর্জন ও আগামী দিন’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টায় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) এলিভেট টকের উদ্যোগে শহীদ ড. সাদাত আলী সম্মেলন কক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিনুর রশিদের সঞ্চালনায় সেমিনারে বক্তব্যে দেন, ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড.
আরো পড়ুন:
জবি দ্বিতীয় ক্যাফেটেরিয়া দ্রুত চালুর দাবি
জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
এ সময় অধ্যাপক ড. মো. আবদুস সালাম বলেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অনেকগুলো স্বপ্নের বীজ বপন করেছিল। তারমধ্যে অন্যতম একটি ছিল, শিক্ষার মানোন্নয়ন। কিন্তু দুঃখের বিষয় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সেই শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা আশা রেখেছিলাম নতুন একটা শিক্ষানীতি প্রণয়ন হবে। কিন্তু তারা সেখানে এখন পর্যন্ত হাত দেয়নি।”
শিক্ষার বাজেট নিয়ে তিনি বলেন, “সর্বশেষ যে বাজেট হয়েছিল, সেখানে শিক্ষার বাজেট বৃদ্ধি করা হয়নি। এত স্বল্প বাজেট দিয়ে শিক্ষার মান কখনো বৃদ্ধি করা সম্ভব না। এমনকি শিক্ষকদের মর্যাদার বিষয়ে অনেকদিন থেকে আমরা সংগ্রাম করছি। শিক্ষকদের পরিপূর্ণ মর্যাদা ছাড়া শিক্ষার মান উন্নয়ন কল্পনা করা যায় না।”
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবর্তন নিয়ে অধ্যাপক ড. মো. আহসান হাবীব বলেন, “শিক্ষককে আমরা কিভাবে দেখব? আমরা দেখেছি কোভিডের পরে শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুমে সঠিক আচরণ করছে না। কিভাবে কথা বলতে হয় বা কি আচার-আচরণ করতে হয়, তা তারা ভুলে গেছে। আমরা হয়ত জেনারেশন গ্যাপে আছি বা হয়তো তারা অনেক অ্যাডভান্স হয়ে গেছে। তবে ২৪ এর অভ্যুত্থানে আমরা তাদের এক হয়ে লড়াই করতে দেখেছি।”
তিনি বলেন, “আমাদের কারিকুলামে ও বই লেখায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকতে হবে। শিক্ষার্থীরা কি চায়, কেনো চায়- তা তাদের তুলে ধরার সুযোগ করে দিতে হবে। কোনো ধরনের পলিটিক্যাল বাঁধা ছাড়া সব জায়গায় স্টুডেন্ট ভয়েস রেইজ করার সুযোগ করে দিতে হবে।”
ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো: শাহরিয়ার হায়দার বলেন, “শিক্ষার্থী এবং আমাদের মধ্যে ভালো বন্ধন তৈরি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরীক্ষার রেজাল্টের সময় সি প্লাস বা বি গ্রেড পেলে সে আমাকে অন্য চোখে দেখছে। শিক্ষার্থীদের কাছে আমরা জানতে চাই না, তারা আসলে কি চায়? এজন্য আমাদের এজন্য ক্লাইমেট সার্ভে করা দরকার। তাহলে আমরা তাদের চাওয়া পাওয়া সম্পর্কে জানতে পারব। এমনকি শিক্ষার্থীরা এখনো জানে না কিভাবে অন্য লিঙ্গের বন্ধুদের সঙ্গে আচরণ করতে হবে। এ বিষয়ে মাইক্রো কোর্স চালু করা দরকার।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’