আসন্ন আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) কাউন্সিল নির্বাচনে বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থন চেয়েছেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।

বুধবার (৩০ জুলাই) সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে এ আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশে নিযুক্ত জিবুতির অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত ইস্সে আবদিল্লাহি আসসোয়েহ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে আইএমও’র ২০২৬–২৭ মেয়াদের কাউন্সিল সদস্য (ক্যাটাগরি–সি) পদে বাংলাদেশের প্রার্থিতার পক্ষে আনুষ্ঠানিক সমর্থন চাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন উপদেষ্টা। জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, জিবুতি সবসময় বাংলাদেশের পাশে রয়েছে এবং আসন্ন আইএমও নির্বাচনে সব ধরনের সহায়তা প্রদান করবে।

আরো পড়ুন:

৫ আগস্ট ঘিরে নিরাপত্তা শঙ্কা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষা করতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান

উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম মেরিটাইম কান্ট্রি। আমাদের রয়েছে তিনটি সমুদ্রবন্দর, ৫৪টি অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর এবং মাতারবাড়িতে নির্মাণাধীন গভীর সমুদ্রবন্দর। জাহাজ নির্মাণ, প্রশিক্ষণ ও রপ্তানিতেও বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।

তিনি জানান, দেশের শিপইয়ার্ডগুলোতে বিশ্বমানের জাহাজ তৈরি হচ্ছে এবং তা বিদেশে রপ্তানিও হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মেরিটাইম খাতে বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও অবদান তুলে ধরে তিনি।

আইএমও’র গুরুত্বপূর্ণ এই ফোরামে সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের ভূমিকা আরো সুসংহত করতে চায় বলেও জানান উপদেষ্টা।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ আইএমও’র ২০২৬–২৭ মেয়াদের জন্য ‘ক্যাটাগরি-সি’ সদস্যপদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এই ক্যাটাগরিতে সাধারণত মেরিটাইম খাতে আগ্রহী দেশগুলো অংশ নেয় যাদের ভোট পাওয়ার জন্য কূটনৈতিক পর্যায়ে জোর তৎপরতা চালিয়ে যেতে হয়।

বৈঠকে উপদেষ্টা বাংলাদেশের মেরিন একাডেমিগুলোর প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের আন্তর্জাতিক মানের বিষয়টি তুলে ধরেন এবং জিবুতি সরকারকে তাদের দেশের মেধাবী ও দক্ষ শিক্ষার্থী ও নাবিকদের বাংলাদেশে পাঠানোর আহ্বান জানান।

উপদেষ্টার বক্তব্যে বাংলাদেশের জাহাজশিল্পের সম্ভাবনাও উঠে আসে। তিনি রাষ্ট্রদূতকে জানান, বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প এখন বিশ্বমানের। আমাদের শিপইয়ার্ডগুলোতে আধুনিক প্রযুক্তিতে জাহাজ নির্মাণ হচ্ছে, যা বিশ্ববাজারে ইতিমধ্যে সুনাম কুড়িয়েছে। এ সময় জিবুতির রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের তৈরি জাহাজ আমদানিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করে তারা ব্যবসা-বাণিজ্য, সমুদ্র ও নৌপরিবহন, জাহাজশিল্পসহ অন্যান্য সম্ভাব্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে ঐকমত্য প্রকাশ করেন।

উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, মোংলাসহ বিভিন্ন সমুদ্রবন্দর ও শিপইয়ার্ড পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান। জবাবে রাষ্ট্রদূত ইস্সে আবদিল্লাহি আসসোয়েহও উপদেষ্টাকে জিবুতি সফরের আমন্ত্রণ জানান। তিনি বলেন, বাণিজ্য, অর্থনীতি ও উন্নয়ন সহযোগিতাসহ মেরিটাইম সেক্টরের বিভিন্ন খাতে দুই দেশের অংশীদারিত্ব আরো সুদৃঢ় করতে আমি সব ধরনের সহায়তা করতে প্রস্তুত।

বৈঠকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের নৌকূটনীতির জন্য এই বৈঠককে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কেননা আইএমও কাউন্সিলে সদস্যপদ লাভের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচল ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে বাংলাদেশের ভূমিকা ও গ্রহণযোগ্যতা আরো বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

ঢাকা/এএএম/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট ন পর বহন ক উন স ল উপদ ষ ট র জন য সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

আইএমও কাউন্সিল নির্বাচনে জিবুতির সমর্থন চাইল বাংলাদেশ

আসন্ন আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) কাউন্সিল নির্বাচনে বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থন চেয়েছেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।

বুধবার (৩০ জুলাই) সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে এ আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশে নিযুক্ত জিবুতির অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত ইস্সে আবদিল্লাহি আসসোয়েহ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে আইএমও’র ২০২৬–২৭ মেয়াদের কাউন্সিল সদস্য (ক্যাটাগরি–সি) পদে বাংলাদেশের প্রার্থিতার পক্ষে আনুষ্ঠানিক সমর্থন চাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন উপদেষ্টা। জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, জিবুতি সবসময় বাংলাদেশের পাশে রয়েছে এবং আসন্ন আইএমও নির্বাচনে সব ধরনের সহায়তা প্রদান করবে।

আরো পড়ুন:

৫ আগস্ট ঘিরে নিরাপত্তা শঙ্কা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষা করতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান

উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম মেরিটাইম কান্ট্রি। আমাদের রয়েছে তিনটি সমুদ্রবন্দর, ৫৪টি অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর এবং মাতারবাড়িতে নির্মাণাধীন গভীর সমুদ্রবন্দর। জাহাজ নির্মাণ, প্রশিক্ষণ ও রপ্তানিতেও বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।

তিনি জানান, দেশের শিপইয়ার্ডগুলোতে বিশ্বমানের জাহাজ তৈরি হচ্ছে এবং তা বিদেশে রপ্তানিও হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মেরিটাইম খাতে বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও অবদান তুলে ধরে তিনি।

আইএমও’র গুরুত্বপূর্ণ এই ফোরামে সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের ভূমিকা আরো সুসংহত করতে চায় বলেও জানান উপদেষ্টা।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ আইএমও’র ২০২৬–২৭ মেয়াদের জন্য ‘ক্যাটাগরি-সি’ সদস্যপদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এই ক্যাটাগরিতে সাধারণত মেরিটাইম খাতে আগ্রহী দেশগুলো অংশ নেয় যাদের ভোট পাওয়ার জন্য কূটনৈতিক পর্যায়ে জোর তৎপরতা চালিয়ে যেতে হয়।

বৈঠকে উপদেষ্টা বাংলাদেশের মেরিন একাডেমিগুলোর প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের আন্তর্জাতিক মানের বিষয়টি তুলে ধরেন এবং জিবুতি সরকারকে তাদের দেশের মেধাবী ও দক্ষ শিক্ষার্থী ও নাবিকদের বাংলাদেশে পাঠানোর আহ্বান জানান।

উপদেষ্টার বক্তব্যে বাংলাদেশের জাহাজশিল্পের সম্ভাবনাও উঠে আসে। তিনি রাষ্ট্রদূতকে জানান, বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প এখন বিশ্বমানের। আমাদের শিপইয়ার্ডগুলোতে আধুনিক প্রযুক্তিতে জাহাজ নির্মাণ হচ্ছে, যা বিশ্ববাজারে ইতিমধ্যে সুনাম কুড়িয়েছে। এ সময় জিবুতির রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের তৈরি জাহাজ আমদানিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করে তারা ব্যবসা-বাণিজ্য, সমুদ্র ও নৌপরিবহন, জাহাজশিল্পসহ অন্যান্য সম্ভাব্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে ঐকমত্য প্রকাশ করেন।

উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, মোংলাসহ বিভিন্ন সমুদ্রবন্দর ও শিপইয়ার্ড পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান। জবাবে রাষ্ট্রদূত ইস্সে আবদিল্লাহি আসসোয়েহও উপদেষ্টাকে জিবুতি সফরের আমন্ত্রণ জানান। তিনি বলেন, বাণিজ্য, অর্থনীতি ও উন্নয়ন সহযোগিতাসহ মেরিটাইম সেক্টরের বিভিন্ন খাতে দুই দেশের অংশীদারিত্ব আরো সুদৃঢ় করতে আমি সব ধরনের সহায়তা করতে প্রস্তুত।

বৈঠকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের নৌকূটনীতির জন্য এই বৈঠককে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কেননা আইএমও কাউন্সিলে সদস্যপদ লাভের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচল ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে বাংলাদেশের ভূমিকা ও গ্রহণযোগ্যতা আরো বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

ঢাকা/এএএম/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ