দুদকের মামলায় অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ পরিদর্শক কারাগারে
Published: 4th, August 2025 GMT
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় রাজশাহীতে ফরিদুল ইসলাম খান নামের অবসরপ্রাপ্ত এক পুলিশ পরিদর্শককে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুরে বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোসা. মুসরাত জেরিন এ আদেশ দেন।
ফরিদুল ইসলাম খান সবশেষ রাজশাহীতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) কর্মরত ছিলেন। ইতোমধ্যে তিনি অবসরে গেছেন। বর্তমানে রাজশাহী নগরের বড়কুঠিপাড়া মহল্লায় বাস করেন। তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার সুবর্ণগাতি গ্রামে।
দুদকের রাজশাহীর আইনজীবী বজলে তৌহিদ আল হাসান বাবলা জানান, ১ কোটি ৫৪ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০২৪ সালে ফরিদুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এই মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন আদালত।
আরো পড়ুন:
উপদেষ্টা আসিফের বাবাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
রাতে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া, সকালে মিলল স্বামীর ঝুলন্ত মরদেহ
সোমবার মামলার ধার্য্য তারিখে ফরিদুল ইসলাম খান আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন প্রার্থনা করেন। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ঢাকা/কেয়া/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফর দ ল ইসল ম খ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাখোঁর স্ত্রী ব্রিজিত ‘নারী’ কি না, কেন এত বিতর্ক ও আইনি লড়াই
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ও তাঁর স্ত্রী ব্রিজিত মাখোঁ যুক্তরাষ্ট্রের এক আদালতে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। ব্রিজিত মাখোঁ যে একজন নারী, তা প্রমাণ করতে কিছু ছবি ও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ উপস্থাপন করার পরিকল্পনা করছেন তাঁরা।
মাখোঁ ও তাঁর স্ত্রী ব্রিজিতের আইনজীবী বলেছেন, একটি মানহানির মামলায় তাঁর মক্কেলরা এসব নথি দাখিল করবেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ডানপন্থী ইনফ্লুয়েন্সার ক্যান্ডেস ওয়েন্সের বিরুদ্ধে তাঁরা এ মামলা করেছেন। কারণ, ওয়েন্স প্রচার করছিলেন, তাঁর বিশ্বাস ব্রিজিত মাখোঁ জন্মগতভাবে পুরুষ ছিলেন।
ওয়েন্সের আইনজীবীরা মামলাটি খারিজ করার জন্য আলাদা একটি আবেদন করেছেন।
বিবিসির ফেম আন্ডার ফায়ার পডকাস্টে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাখোঁ দম্পতির আইনজীবী টম ক্লেয়ার বলেছেন, ব্রিজিত মাখোঁ এই অভিযোগগুলোকে ‘অত্যন্ত কষ্টদায়ক’ বলে মনে করেছেন। এগুলো ফরাসি প্রেসিডেন্টের জন্যও একটি ‘বিরক্তিকর পরিস্থিতি’ তৈরি করছে।
মাখোঁ বলেন, ‘আমি এটা বলছি না যে এতে তাঁর কাজে পুরোপুরি বিঘ্ন ঘটছে। তবে একজন মানুষ যখন কর্মজীবন আর পারিবারিক জীবন একসঙ্গে সামলান, তখন পরিবারের ওপর আঘাত এলে তা তাঁকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়। আর তিনি দেশের প্রেসিডেন্ট বলেই যে এসব থেকে মুক্ত থাকবেন, তা নয়।’
বিবিসির ফেম আন্ডার ফায়ার পডকাস্টে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাখোঁ দম্পতির আইনজীবী টম ক্লেয়ার বলেছেন, ব্রিজিত মাখোঁ এই অভিযোগগুলোকে ‘অত্যন্ত কষ্টদায়ক’ বলে মনে করেছেন। এগুলো ফরাসি প্রেসিডেন্টের জন্যও একটি ‘বিরক্তিকর পরিস্থিতি’ তৈরি করছে।মাখোঁ দম্পতির পক্ষ থেকে আদালতে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের সাক্ষ্য উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী ক্লেয়ার। এর ভিত্তিটা হবে বৈজ্ঞানিক। তবে এ বৈজ্ঞানিক প্রমাণের ধরনটা ঠিক কেমন হবে, তা প্রকাশ করেননি তিনি। ক্লেয়ার বলেছেন, অভিযোগগুলো যে মিথ্যা, তা সামগ্রিকভাবে ও সুনির্দিষ্ট করে প্রমাণ করতে চান মাখোঁ দম্পতি।
আইনজীবী ক্লেয়ার মনে করেন, এটা এমন একটি প্রক্রিয়া, যা ব্রিজিতকে খুবই প্রকাশ্যভাবে সামলাতে হবে। তিনি তা করতে রাজি আছেন। সত্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য যা করা প্রয়োজন, তা করতে তিনি দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।
আরও পড়ুনবয়সে ২৪ বছরের বড় ব্রিজিতের সঙ্গে মাখোঁর বিয়ের পেছনের সত্যিকার গল্প কী২৭ মে ২০২৫ব্রিজিত মাখোঁর গর্ভাবস্থার সময়কার ছবি ও সন্তান লালন-পালনের প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করা হবে কি না, সে ব্যাপারে মাখোঁ দম্পতির আইনজীবী টম ক্লেয়ারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। জবাবে তিনি বলেন, এসব ছবি আছে এবং আদালতের নিয়ম ও মানদণ্ড মেনে তা উপস্থাপন করা হবে।
ওয়েন্স মার্কিন রক্ষণশীল গণমাধ্যম ডেইলি ওয়্যারের বিশ্লেষক ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর লাখ লাখ অনুসারী আছে। তিনি বারবার দাবি করে আসছেন, ব্রিজিত মাখোঁ একজন পুরুষ। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে তিনি ঘোষণা দেন, এ অভিযোগের পক্ষে তিনি তাঁর ‘পুরো পেশাগত সুনাম’ বাজি রাখতে প্রস্তুত আছেন।
মাখোঁ দম্পতির পক্ষ থেকে আদালতে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের সাক্ষ্য উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী ক্লেয়ার। এর ভিত্তিটা হবে বৈজ্ঞানিক। তবে এ বৈজ্ঞানিক প্রমাণের ধরনটা ঠিক কেমন হবে, তা প্রকাশ করেননি তিনি। ক্লেয়ার বলেছেন, অভিযোগগুলো যে মিথ্যা, তা সামগ্রিকভাবে ও সুনির্দিষ্ট করে প্রমাণ করতে চান মাখোঁ দম্পতি।কয়েক বছর আগে মূলধারার বাইরের অনলাইন মাধ্যমে এ অভিযোগের সূত্রপাত হয়। বিশেষ করে ২০২১ সালে ফরাসি ব্লগার আমান্দিন রয় ও নাতাশা রে একটি ইউটিউব ভিডিও প্রকাশ করার পর এটি ছড়িয়ে পড়ে।
মাখোঁ দম্পতি ২০২৪ সালে ফ্রান্সে রোয়া ও রের বিরুদ্ধে মানহানির মামলায় প্রাথমিকভাবে জিতেছিলেন। তবে ২০২৫ সালে আপিল আদালত মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলে সেই রায় উল্টে দেন। মাখোঁ দম্পতি এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করছেন।
আরও পড়ুনফরাসি প্রেসিডেন্টকে কি গালে চড় দিলেন স্ত্রী, কী বলছে এলিসি প্রাসাদ২৬ মে ২০২৫গত জুলাইয়ে মাখোঁ দম্পতি যুক্তরাষ্ট্রে ওয়েন্সের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ওয়েন্স তাঁর দাবির বিপক্ষের নির্ভরযোগ্য আলামতগুলোকে উপেক্ষা করেছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি ষড়যন্ত্রতত্ত্ববিদ ও মানহানি করার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের প্রচারের সুযোগ করে দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে সুপরিচিত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার ক্ষেত্রে অভিযোগকারীকে প্রমাণ করতে হয় যে প্রতিপক্ষ সচেতনভাবে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বা বেপরোয়াভাবে সত্যকে উপেক্ষা করেছে।
কেন আইনি লড়াইয়ে নামার সিদ্ধান্ত নিলেন, সে বিষয়ে গত আগস্টে ফরাসি সাময়িকী প্যারিস ম্যাচকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন এমানুয়েল মাখোঁ। তিনি বলেন, ‘এটা আমার সম্মান রক্ষার বিষয়। কারণ, এটা বাজে কথা। এমন একজন ব্যক্তি এটা করেছেন, যিনি ভালোভাবে জানতেন যে তাঁর তথ্য মিথ্যা। তবু ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে, একটি মতাদর্শকে এগিয়ে নিতে চরমপন্থী নেতাদের সঙ্গে মিলে তিনি এমন কাজ করেছেন।’
ওয়েন্সের আইনজীবীরা মাখোঁ দম্পতির মামলাটি বাতিলের আবেদন করেছেন। আদালতে তাঁরা যুক্তি দেখিয়েছেন, এই মামলা ডেলাওয়ার অঙ্গরাজ্যে হওয়া উচিত হয়নি। কারণ, এটি তাঁর ব্যবসার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। তাঁর ব্যবসা ডেলাওয়ারে নিবন্ধিত।
আইনজীবীরা দাবি করেছেন, ডেলাওয়ারের আদালতে মামলাটি চালাতে গিয়ে তাঁদের মক্কেলকে বড় ধরনের ‘অর্থনৈতিক ও কার্যক্রম পরিচালনাগত’ সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে।
এর আগে ক্যান্ডেস ওয়েন্স বলেছিলেন, তিনি যা বলছেন, তা সত্য বলে বিশ্বাস করেন।