মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাত। ১০ লাখের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি এখানে বসবাস করেন। সম্প্রতি নানা কারণে বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশি ভিসা।

কবে নাগাদ ভিসার রুদ্ধ দ্বার খুলতে পারে তা নিয়ে প্রবাসীদের মাঝে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।

বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় ২০১২ সালে সব ধরনের ভিসা বন্ধ করে দেয় আরব আমিরাত সরকার। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে আমিরাতে বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশিদের জন্য শ্রমিক ভিসা। ২০২০ সালের শেষ নাগাদ সীমিত সময়ের জন্য ভিসা চালু হলেও এখন শ্রমিক ভিসা টাইপ হচ্ছে না আমিরাতের ভিসা প্রসেসিং সেন্টারে। ভিসা বন্ধের পর স্কিল ভিসা বা হাই প্রোফাইলের ভিসা শুধুমাত্র দুবাই স্টেটের জন্য খোলা আছে। মাঝেমধ্যে এই ভিসাও বন্ধ হয়ে যায়। যার কারণে বিপাকে পড়েছে  প্রবাসীরা।

গত জুন মাসে ইউএই’র ফেডারেল অথরিটি ফর আইডেন্টিটি, সিটিজেনশিপ, কাস্টমস অ্যান্ড পোর্টস সিকিউরিটির (আইসিপি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সুহেইল সাঈদ আল খাইলির সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক-বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আরব আমিরা‌তের ভিসা বা আবাসন নীতিমালার সবচেয়ে বড় সংখ্যক লঙ্ঘনকারী হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছেন বাংলা‌দে‌শিরা। এখানকার মোট ভিসা লঙ্ঘনকারীর মধ্যে ২৫ শতাংশেরও বেশি বাংলাদেশি।”

মূলত বিভিন্ন অনিয়মের কারণে বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশিদের জন্য শ্রম ভিসা।

এ ব্যাপারে আমিরাতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত তারেক রহমান জানান, ভিসা খোলার বিষয়টি একান্তই এদেশের সরকারের। তবে বন্ধ ভিসা চালুর ব্যাপারে আমাদের উদ্যোগের কমতি নাই। এক্ষেত্রে দেশ ও প্রবাসের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে প্রবাসীদের আরো দায়িত্বশীল ভুমিকা পালন করতে হবে।

কমিউনিটি নেতা ড.

আব্দুস সালাম জানান, আমিরাতে সম্প্রতি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বাংলাদেশি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। কিন্ত ভিসা বন্ধের কারণে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত লোকজনের অভাবে কাস্টমার সার্ভিস দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।

ব্যবসায়ী রাশেদ উল্লাহ জানান, ভিসা জটিলতার কারণে সদ্য এসএসসিতে উত্তীর্ণ ছেলেকে আমিরাতে মা-বাবার কাছে আনতে পারি নাই। তিনি আরো বলেন, ব্যবসায় কারখানায় দেশীয় শ্রমিকের ভিসা না থাকায় পাকিস্তান ও ইন্ডিয়ার শ্রমিক দিয়ে ব্যবসায়  চালাতে হচ্ছে।

ভুক্তভোগী প্রবাসীরা নতুন ভিসা ইস্যু না হলেও আভ্যন্তরীণ ট্রান্সফার ভিসা চালু থাকলে মালিক পরিবর্তন করে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করা যাবে বলে মনে করেন। তাই বাংলাদেশ মিশনের প্রতি প্রবাসীদের দাবী আভ্যন্তরীণ ভিসা চালুর বিষয়ে আমিরাত সরকারের প্রতি আলোচনা জোরদার করা হোক। অন্যথায় কোনো শ্রমিক কর্মহীন হলে দেশে ফেরত যাওয়া ছাড়া প্রবাসীদের বিকল্প রাস্তা থাকবে না। তাদের ধারণা, ভিসা জটিলতা দীর্ঘায়িত হলে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে ধ্বস নামতে পারে। যা দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে।

ঢাকা/হাসান/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রব স দ র প রব স র ব যবস য় আম র ত বন ধ র

এছাড়াও পড়ুন:

মৌলভীবাজারে ঘুমন্ত বড় ভাইকে কুপিয়ে হত্যা 

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের সিদ্ধেশ্বরপুর গ্রামে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে ঘুমন্ত বড় ভাইকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগে ছোট ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শনিবার (৯ আগস্ট) সকালে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। হত্যায় ব্যবহৃত দা ও রক্তমাখা লুঙ্গি জব্দ করা হয়েছে।

সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুরে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা ও শ্রীমঙ্গল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান।

পুলিশ জানায়, গত ৯ আগস্ট সকালে নিজ ঘর থেকে আব্দুর রহিম রাফির (২৬) গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পর পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে। বড় ভাইয়ের জানাজায় মানুষের আবেগঘন উপস্থিতি দেখে পুলিশ কাছে স্বীকারোক্তি দেয় ১৬ বছর বয়সী ছোট ভাই (অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় নাম প্রকাশ করা হয়নি)। সেদিনই তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। 

জিজ্ঞাসাবাদে ওই কিশোর স্বীকার করে, আগের রাতে বড় ভাইয়ের কাছে ৫০০ টাকা চাইলে তা না দিয়ে দুর্ব্যবহার করে রাফি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পরের দিন সকালে মা বাড়িতে না থাকার সুযোগে ঘুমন্ত ভাইকে খাটের নিচে রাখা দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে সে। পরে দা ধুয়ে আবার খাটের নিচে রেখে দেয় এবং নিজের রক্তমাখা লুঙ্গিও সেখানেই লুকিয়ে রাখে।

পুলিশ জানিয়েছে, শুধু টাকার জন্য নয়, মাদ্রাসায় পড়াশোনা না করা, বড় ভাইয়ের শাসন এবং রাফির বিয়ে নিয়ে পারিবারিক অশান্তি—এসব কারণেও ছোট ভাইয়ের মনে ক্ষোভ তৈরি হয়। রাফি পরিবারের অমতে প্রেম করে বিয়ে করায় তার স্ত্রী, মা ও ভাইয়ের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়। দীর্ঘদিনের বিরোধ শেষ পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডে রূপ নেয়।

মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা বলেছেন, অভিযুক্ত ছোট ভাইয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, হত্যায় ব্যবহৃত দা ও রক্তমাখা লুঙ্গি উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের মা মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। যেহেতু, সে অপ্রাপ্তবয়স্ক তাই আইন অনুযায়ী তাকে সংশোধনাগারে পাঠানো হবে। 

ঢাকা/আজিজ/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ