অপমৃত্যু ও হত্যার অভিযোগে বাবা-শাশুড়ির পৃথক মামলা
Published: 16th, August 2025 GMT
রাজশাহীর পবা উপজেলার বামনশিখর গ্রামের বাড়ি থেকে একই পরিবারের চারজনের লাশ ও চিরকুট উদ্ধারের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে নগরের মতিহার থানায় অপমৃত্যু ও হত্যার অভিযোগে মামলা দুটি করা হয়।
অপমৃত্যুর মামলাটি দায়ের করেন মৃত মিনারুল ইসলামের বাবা রুস্তম আলী। আর হত্যা মামলা করেছেন মিনারুলের শাশুড়ি শিউলি বেগম।
এ সম্পর্কে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক বলেন, ওই ঘটনায় দুটি পৃথক মামলা হয়েছে। একটি অপমৃত্যু ও অপরটি হত্যা মামলা। অপমৃত্যু মামলার বাদী হয়েছেন মিনারুলের বাবা রুস্তম আলী। আর হত্যা মামলা করেছেন মিনারুলের শাশুড়ি। তবে এসব মামলায় কাউকে আসামি করা হয়নি। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওসি আবদুল মালেক আরও বলেন, গতকাল দুপুরে লাশ উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে নেওয়া হয়। আজ শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে লাশগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এর আগে গতকাল সকাল পৌনে ৯টার দিকে নিজ ঘরে একই পরিবারের চারজনের মরদেহ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁদের লাশ উদ্ধার করে। লাশের পাশে থাকা দুই পৃষ্ঠার একটি চিরকুটও উদ্ধার করা হয়েছে।
চিরকুটের এক জায়গায় লেখা আছে, ‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে।’ পরিবার, পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের ধারণা, অভাবের কারণে তিনি স্ত্রী, দুই সন্তানকে শ্বাস রোধ করে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যা করেছেন।
মৃত ব্যক্তিরা হলেন পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের বামনশিখর গ্রামের মিনারুল ইসলাম (৩৫), স্ত্রী মনিরা বেগম (২৮) এবং তাঁদের ছেলে মাহিন (১৩) ও মেয়ে মিথিলা (২)। মাহিন খড়খড়ি উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। আর মিনারুল কৃষিকাজ করতেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, মিনারুলের মেয়ে মিথিলার জন্য গতকাল সকালে মিনারুলের বাবা রুস্তম আলী হাট থেকে মাছ কিনে আনেন। দাদি আঞ্জুয়ারা বেগম নাতনিকে ডাকতে যান। অনেক ডাকাডাকির পরও কেউ সাড়া দিচ্ছিলেন না। সকাল পৌনে ৯টার দিকে লাগোয়া ঘরের পাশে ঘরের সিলিংয়ের ওপর দিয়ে ছেলেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে জানাজানি হলে প্রতিবেশীরা বাড়িতে আসেন। স্থানীয় পারিলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহেদ আলী পুলিশকে ফোন করেন। পরে পুলিশ এসে ঘরের দরজা খোলে।
আরও পড়ুন‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’১৬ ঘণ্টা আগেতাঁদের ‘এল’ আকৃতির বাড়িতে চারটি কক্ষ। পশ্চিম দিকের প্রথম ঘরে মিনারুলকে পাওয়া যায়। তিনি ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছিলেন। ছেলে মাহিন বিছানায় পড়ে ছিল। তার গলার পাশে একটি গামছা পাওয়া যায়। সেখানে দুই পৃষ্ঠার হাতে লেখা চিরকুট পড়ে ছিল। ঘরের ভেতরে দুটি কক্ষ। পরের কক্ষের বিছানায় স্ত্রী ও মেয়ের মরদেহ পাওয়া যায়। মিনারুলের পরের ঘরটি তাঁর বড় ভাই রুহুলের। তারপরের কক্ষে থাকতেন তাঁদের মা-বাবা।
পরিবারের সদস্য, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিনারুল আগে একসময় জুয়া খেলতেন। পরে ছেড়ে দেন। এ জন্য তিনি ঋণগ্রস্ত ছিলেন। দেড় বছর আগে বাবা রুস্তম আলী ধানি জমি বিক্রি করে ঋণের একটা অংশ দেড় লাখ টাকা পরিশোধ করেন। এরপরও তাঁর দুই লাখ টাকা ঋণ ছিল। এই ঋণের জন্য প্রতি সপ্তাহে তাঁকে ২ হাজার ৭০০ টাকার বেশি কিস্তি পরিশোধ করতে হতো। কিন্তু কিস্তি চালাতে পারছিলেন না মিনারুল। বাবাকে মিনারুল আর কিছু জমি বিক্রি করে পুরো টাকা পরিশোধ করতে বলেছিলেন। কিন্তু বাবা জমি বিক্রি করতে চাননি। এ নিয়ে মা-বাবার সঙ্গে মিনারুল কথা বলা বন্ধ করে দেন। এমনকি ছেলে–মেয়েদেরও মিশতে দিতেন না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব র র অপম ত য চ রক ট গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনার প্রকাশ্য ফাঁসির ব্যবস্থা করতে হবে: রাশেদ
জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান বলেছেন, “শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং অন্য দুটি অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আমি মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহর দরবারে উক্ত রায়ে শুকরিয়া আদায় করছি।”
সোমবার (১৭ নভেম্বর) শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রাশেদ প্রধান বলেন, “গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। ভবিষ্যতে শেখ হাসিনার মতো নতুন কোনো ফ্যাসিস্ট যাতে তৈরি না হয় সেই লক্ষ্যে একটা দৃষ্টান্ত তৈরি করা প্রয়োজন। শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ কার্যকর করতে হবে এবং প্রকাশ্য ফাঁসির ব্যবস্থা করতে হবে।”
আরো পড়ুন:
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার রায়ের খবর
রায় প্রত্যাখ্যান নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি