পোষ্য কোটা ইস্যুতে রাবিতে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি, শাটডাউনের হুঁশিয়ারি
Published: 21st, September 2025 GMT
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই ইস্যুতে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে বন্ধ রয়েছে সকল ধরনের অফিসিয়াল কার্যক্রম। দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা না হয় আগামীকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন করে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে তারা শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি ফলকের সামনে অবস্থান নেন। তবে কোনো শিক্ষককে অবস্থান নিতে দেখা যায়নি।
কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের দাবি, গতকাল যারা শিক্ষকের গায়ে হাত দিয়েছে তাদেরকে আজকের মধ্যেই বহিষ্কার করতে হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স সমিতির সভাপতি মুক্তার হোসেন বলেন, “গতকাল ছাত্র নামধারী কিছু সন্ত্রাসী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যকে লাঞ্চিত করেছে। এমনকি তাকে বাসাতেও ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এদেরকে চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে তাদেরকে শাস্তি দিতে হবে।”
এই আন্দোলন রাকসুতে কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “রাকসুতে এই আন্দোলন কোনো প্রভাব ফেলবে না। রাকসুকে আমরা আমাদের কর্মসূচির বাহিরে রেখেছি।”
এসময় অফিসার্স সমিতির কোষাধ্যক্ষ মাসুদ রানা বলেন, “গতকালকের ঘটনায় যারা জড়িত তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। যারা বহিরাগত তাদের বিরুদ্ধে আনইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। যদি শাস্তি নিশ্চিত করা না হয় আগামীকাল থেকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় শার্টডাউন করে দিব।”
এর আগে গতকাল শনিবার বেলা তিনটার দিকে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রশাসনিক ভবন থেকে বের হলে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীরা তাঁর গাড়ি আটকে দেন। পরে তিনি হেঁটে তাঁর বাসভবনের দিকে যেতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা তাঁর বাসভবনের ফটকে তালা লাগিয়ে দিলে তিনি জুবেরী ভবনের দিকে যান। তাঁর সঙ্গে প্রক্টর মাহবুবর রহমানও ছিলেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিক থেকে জুবেরী ভবনে সহ-উপাচার্য মাঈন উদ্দীনসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে আটকে রাখেন শিক্ষার্থীরা।
এমন পরিস্থিতিতে শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে উপ-উপাচার্যসহ অন্য শিক্ষকদের ‘লাঞ্ছিত’ করার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রবিবার কর্মবিরতির ডাক দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি আবদুল আলিম।
ঢাকা/ফাহিম/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ চ র য গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
পোষ্য কোটা নিয়ে রাবিতে ছাত্র-শিক্ষক হাতাহাতি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনের বারান্দায় এ হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, জনসংযোগ প্রশাসকসহ অন্তত ১০ শিক্ষককে এখনো অবরুদ্ধ করে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
কুড়িগ্রামে সাপের কামড়ে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু
ঢাবি উপাচার্য-প্রক্টরসহ ৩ জনকে আইনি নোটিশ
এর আগে, দুপুরে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে উপ-উপাচার্যদ্বয়ের বাসভবনে তালা দেন শিক্ষার্থীরা। এজন্য বাসভবনের ভেতরে ঢুকতে না পেরে ফিরে আসেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন খান, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান। একপর্যায়ে তারা জুবেরী ভবনের দিকে আসতে থাকলে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে দিতে তাদের পেছনে আসেন।
একপর্যায়ে জুবেরী ভবনের বারান্দায় এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক এবং ছাপাখানার এক কর্মকর্তা শিক্ষার্থীদের আটকানোর চেষ্টা করলে কথা কাটাকাটি এক পর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। এ সময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন খানকে চারপাশ থেকে আটকে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে হাতাহাতির একপর্যায়ে উপ উপাচার্য জুবেরী ভবনের দ্বিতীয় তলায় চলে গেলে শিক্ষার্থীরা তাকে সেখানে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
এরই মধ্যে সেখানে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদসহ কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত হলের তাদেরও অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, “একটি মীমাংসিত ইস্যু নিয়ে প্রশাসনের এমন আচরণের আমরা গভীর নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা কাল থেকে শান্তিপূর্ণ অনশনে রয়েছি, কিন্তু প্রশাসন কোনো গ্রহণযোগ্য পদক্ষেপ নেয়নি। আজ আমাদের ওপর যে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে তা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। আমি সকল শিক্ষার্থীকে আহ্বান জানাই—শান্তিপূর্ণভাবে যোগ দিন এবং আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আমরা ময়দান ছাড়ব না।”
রাবি শাখা ইসলামি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মুজাহিদ ফয়সাল বলেন, “আর মাত্র চারদিন পর রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, একটি মীমাংসিত ইস্যু—পোষ্য কোটাকে সামনে এনে নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘর্ষও ঘটে গেছে।”
তিনি বলেন, “আজ এখানে সব দলমত নির্বিশেষে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমে এসেছে। আমাদের একটাই উদ্দেশ্য—এই অযৌক্তিক পোষ্য কোটাকে আর ফিরতে দেওয়া যাবে না। ইতোমধ্যেই এই কোটা বাদ দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রম ও শ্রেণি কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। অথচ রাকসু নির্বাচনের ঠিক পূর্বমুহূর্তে পুনরায় এই অযৌক্তিক কোটাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা স্পষ্টতই নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে।”
তিনি আরো বলেন, “ইসলামি ছাত্রশিবির এ আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছে। যতক্ষণ পর্যন্ত এই অযৌক্তিক পোষ্য কোটার ইস্যুর অবসান না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ভর্তি কমিটির সভায় শর্তসাপেক্ষে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় (পোষ্য কোটা) ভর্তির সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়। এর পরপরই উপাচার্য বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী