অনিয়মের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইন আবেদনে শিক্ষা কোটা–২–এর ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন স্থগিতাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে সব কলেজ অধ্যক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

আজ রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ১০ আগস্ট আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি কর্তৃক জারি করা ২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইন আবেদনে এডুকেশন কোটা–২ (ইকিউ–২) স্থগিত করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের পাঠানো হয়েছে। ৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট বিভাগের স্থগিতাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে ২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষা কোটায় ভর্তিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। বিশেষ করে শিক্ষা ক্যাডারদের সন্তানদের জন্য নির্ধারিত কোটা ঘিরে সবচেয়ে বেশি অনিয়ম হয়েছে।

আরও পড়ুনএকাদশ শ্রেণি: ভর্তিতে ‘শিক্ষা কোটায়’ অনিয়ম১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ভর্তির নীতিমালা অনুযায়ী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ কোটা (শিক্ষা কোটা–১) এবং মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর বা সংস্থা ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন সরকারি স্কুল–কলেজ ও কার্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য আরও ১ শতাংশ কোটা (শিক্ষা কোটা–২) রাখা হয়েছে। তবে পৃথক কোটা হওয়া সত্ত্বেও অধীন দপ্তরের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সন্তানদের অনেকেই শিক্ষা কোটা–১–এ আবেদন করে নির্বাচিতও হয়েছে। পরে এ নিয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছিল। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে এবার স্থগিত করা হয়েছে আগের সিদ্ধান্ত।

আরও পড়ুনকিউএস গ্লোবাল এমবিএ র‌্যাঙ্কিং ২০২৬: শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বিজনেস স্কুলগুলো২ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র পর প র ক ষ ত

এছাড়াও পড়ুন:

বিধির জালে আটকে আছে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) বলছে দেশে এখন প্রায় ২৬ লাখের বেশি মানুষ বেকার। এর মধ্যে প্রায় ৯ লাখ তরুণ-তরুণী স্নাতক ডিগ্রিধারী; অর্থাৎ ডিগ্রি আছে, অথচ কাজ নেই। এ অবস্থায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আসবে, এমন আশায় হাজার হাজার শিক্ষিত তরুণ-তরুণী দিন গুনছিলেন। কিন্তু বিধিসংক্রান্ত জটিলতায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ আটকে গেছে। ফলে চাকরিপ্রত্যাশীদের দীর্ঘশ্বাস বাড়ছে।

নতুন বিধি, নতুন জট

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ২৮ আগস্ট রাতে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’ প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর তিন দিন পর ৩১ আগস্ট আট সদস্যের একটি ‘কেন্দ্রীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ কমিটি’ও গঠন করা হয়। কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে আর কমিটির সদস্যসচিব প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালককে (পলিসি ও অপারেশন)। এর বাইরে কমিটিতে রয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়), প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (রাজস্ব), উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (বিদ্যালয়), জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় (উপসচিবের নিম্নে নয়) ও সরকারি কর্ম কমিশনের প্রতিনিধি।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়—সংশোধিত বিধিমালায় ত্রুটি ধরা পড়েছে। ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ঝুলে রয়েছে। বিধিমালা সংশোধনের ফাইল মন্ত্রণালয়ে টেবিলে ঘুরছে। আর চাকরিপ্রার্থীদের হতাশা বাড়ছে।

আরও পড়ুনজাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডির সুযোগ, ১-৪ বছর পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫১৭ হাজার শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হবে কবে?

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার প্রায় ১৭ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। দেশজুড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকসংকট আছে, তা সবাই জানে। কিন্তু সংকট মেটানোর বদলে বিজ্ঞপ্তিই যদি আটকে যায়, তবে সেই শূন্য পদের দায় কে নেবে? প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘বিধির জালে আটকা পড়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদের নিয়োগ।’

মহাপরিচালকের আশ্বাস

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান বলেন, ‘আমরা চাই দ্রুত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে। কিন্তু নতুন বিধিমালায় বেশ কিছু ত্রুটি চিহ্নিত হয়েছে। সেগুলো সংশোধনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। চূড়ান্ত বিধি হাতে পেলেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।’

আরও পড়ুন৪৭তম বিসিএস প্রিলি: পরীক্ষার হলে কোন ভুলে পিছিয়ে পড়েন চাকরিপ্রার্থীরা ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫সংশোধিত বিধিমালায় যা রয়েছে

নতুন বিধিমালায় নারীদের জন্য পূর্বনির্ধারিত বিশেষ কোটা বাতিল করা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরাসরি নিয়োগযোগ্য ৯৩ শতাংশ পদ মেধাভিত্তিক হবে। বাকি ৭ শতাংশ পদ কোটাভিত্তিক। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ, আর শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীদের জন্য ১ শতাংশ সংরক্ষিত। তবে কোটা থেকে যোগ্য প্রার্থী না মিললে পদগুলো মেধার ভিত্তিতেই পূরণ হবে।

বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে দেশে স্নাতক ডিগ্রিধারী বেকার ছিল প্রায় চার লাখ। এখন তা প্রায় ৯ লাখ; অর্থাৎ আট বছরে দ্বিগুণ। এ অবস্থায় নতুন করে বিজ্ঞপ্তি আটকে যাওয়ায় অনেক চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়েছে। খোরশেদ আলম নামের এক চাকরিপ্রত্যাশী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার সরকারি চাকরির বয়স তিন মাস পর শেষ হবে। বিজ্ঞপ্তি দ্রুত প্রকাশ না হলে আমার সরকারি চাকরির আশা শেষ হয়ে যাবে।’

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকসংকট আছে, শিক্ষিত বেকারের সংখ্যাও বাড়ছে। চাকরিপ্রার্থীরা প্রত্যাশা করছেন, প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় দ্রুত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে আর স্বচ্ছ পরীক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে দ্রুত নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করবে।

আরও পড়ুনসহকারী শিক্ষক নিয়োগে পুনঃবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, গ্রেড-১৩-তে বেতন১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুপারব্র্যান্ডস বাংলাদেশ ২০২৫–২৬–এ সম্মাননা পেল দেশের ৪৯টি শীর্ষ ব্র্যান্ড
  • দুই পদে নিয়োগ ফেনী ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে, সর্বনিম্ন বেতন ২ লাখ
  • ম্যারিকো বাংলাদেশের ক্রেডিট রেটিং নির্ণয়
  • পাকিস্তান-সৌদি প্রতিরক্ষা চুক্তি, এখন কী করবে ভারত-ইসরায়েল
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫)
  • বসুন্ধরা টয়লেট্রিজের সেলস মিট অনুষ্ঠিত
  • ‘কাস্টিং কল’ না প্রতিযোগিতা? চুপিসারে হওয়া মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ বিতর্কে
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাইভেট মাস্টার্স রেজিস্ট্রেশনের সময় বাড়ল
  • বিধির জালে আটকে আছে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ