‘কেজিএফ’ সিনেমা খ্যাত কন্নড় অভিনেতা হরিশ রায় মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই অভিনেতা। তার বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর। ইন্ডিয়া টুডে এ খবর প্রকাশ করেছে।
এ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এক বছরের বেশি সময় ধরে থাইরয়েড ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন হরিশ রায়। তার ক্যানসারের স্টেজ ছিল—৪। পাকস্থলীসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ক্যানসার ছড়িয়ে পড়েছিল। বেঙ্গালুরুর কিদওয়াই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন, সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
আরো পড়ুন:
যবিপ্রবিতে বাতাস হলেই বিদ্যুৎ চলে যায়, অভিযোগ শিক্ষার্থীদের
যবিপ্রবি প্রক্টরের বিরুদ্ধে ওঠা মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে মানববন্ধন
হরিশ রায় তার শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসা ব্যয় নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কথা বলেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, প্রতিটি সার্কেলে তিনটি ইনজেকশন প্রয়োজন ছিল তার। যেখানে একটি ইনজেকশনের দাম ৩ লাখ ৫৫ হাজার রুপি। এক সার্কেলের মোট খরচ দাঁড়াত ১০ লাখ ৫০ হাজার রুপি। অনেক ক্ষেত্রে রোগীদের ১৭-২০টি ইনজেকশনের প্রয়োজন হতো, যার ফলে চিকিৎসার আনুমানিক খরচ প্রায় ৭০ লাখ রুপিতে পৌঁছেছিল। সেই ব্যয় বহন করতে গিয়ে তার পরিবার হিমশিম খাচ্ছিল।
অভিনয় ক্যারিয়ারে কন্নড়, তামিল ও তেলেগু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন হরিশ। ক্যারিয়ারজুড়ে অনেক জনপ্রিয় চরিত্র রূপায়ন করেছেন। তবে ‘কেজিএফ’ সিনেমায় কাশিম চাচা চরিত্রে অভিনয় করে আলাদাভাবে পরিচিতি লাভ করেন এই অভিনেতা।
হরিশ রায় অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে—‘সামারা’, ‘বেঙ্গালুরু আন্ডারওয়ার্ল্ড’, ‘ওম’, ‘রাজ বাহাদুর’, ‘সঞ্জু ওয়েডস গীতা’, ‘স্বয়ংবর’, ‘নল্লা’ প্রভৃতি।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর যশ চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে শিশু–কিশোরদের মানসিক সুস্থতা জরুরি কেন
শিশু–কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যে আমরা আদতে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছি? এই প্রশ্নের উত্তরের আগে আরেকটি প্রশ্ন ছুড়ে দিই। মানসিক স্বাস্থ্য মানে কী? অধিকাংশই বলবেন, ‘মানসিক রোগ না থাকা।’ কিন্তু এটি আরও অনেক বড় বিষয়। এটি ব্যক্তির আবেগীয়, মানসিক ও সামাজিকভাবে ভালো থাকা বোঝায়, যা প্রভাবিত করে তার চিন্তা, অনুভূতি ও আচরণকে। অন্যের সঙ্গে সম্পর্ক, চাপ মোকাবিলার দক্ষতা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও এর সঙ্গে সম্পর্কিত।
শৈশবের পরের ধাপটাই কৈশোরকাল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বয়ঃসন্ধিকাল ১০ বছর বয়স থেকে শুরু করে ১৯ বছর পর্যন্ত চলে। সময়টা অফুরান প্রাণশক্তি, উদ্দাম আবেগ আর সীমাহীন সম্ভাবনার। সবকিছুতে কৌতূহল, শরীরে নতুন অনুভূতির রোমাঞ্চ, স্বাধীনচেতা মনোভাব অথবা বিদ্যমান নিয়মরীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা—এ রকম আরও অনেক বৈশিষ্ট্য কৈশোরকালকে করে তোলে অনন্য।
‘আমি কে, কী চাই, কীভাবে দেখব আমার জীবন’—আত্মপরিচয়ের এই অনুসন্ধানের পথ ধরেই কৈশোরের চারিত্রিক বিকাশ ঘটতে থাকে। মস্তিষ্কের দ্রুত স্নায়বিক বিকাশ ও হরমোনের প্রভাবে শরীরের যেমন পরিবর্তন হয়, তেমনই মন দ্রুত বদলায়। এ বিকাশ নির্ভর করে তার জিনগত বৈশিষ্ট্য, পারিবারিক পরিবেশ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও চারপাশের ওপর।
আরও পড়ুনমন ও মস্তিষ্কের ১২টি গোপন সত্য, আপনি কয়টা মানেন?০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫সাফল্য ও ঝুঁকির দ্বন্দ্বশিশু–কিশোরের সাফল্য অনেকাংশেই নির্ভর করে মানসিক সুস্থতার ওপর। আবার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের চিন্তাপদ্ধতি, আবেগীয় রূপ ও সামাজিক ভূমিকা অনেকাংশেই নির্ধারিত হয় শৈশব ও কৈশোরকালীন মনের যত্নের ভিত্তিতে। আবেগের প্রবলতা, অনুসন্ধিৎসু মন, নিজেকে প্রকাশের চেষ্টা এ সময়কে যেমন বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করে, তেমনই অপরিপক্বতা ও ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা এই সময়কে করে তোলে নাজুক।
সারা বিশ্বে বর্তমান প্রজন্ম বেড়ে উঠছে এক পরিবর্তনশীল ও অস্থির সময়ের সন্ধিক্ষণে। ভোগবাদী ব্যবস্থা নির্ধারণ করছে দৈনন্দিন জীবনযাপন, ইচ্ছা-অনিচ্ছা ও সম্পর্ক। শক্তি আর প্রতিযোগিতার খেলায় সবাই জয়ী হতে চাইছে। আমদের ভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তাপদ্ধতি, এমনকি অনুভূতিও নিয়ন্ত্রণ করছে মুঠোফোন বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
শিশুরা বাস্তব জগতের বদলে মোহাচ্ছন্ন হয়ে বেড়ে উঠছে ভার্চ্যুয়াল জগতের অবাস্তব স্বপ্নমায়ায়। ছোটবেলা থেকেই পরিচিত হচ্ছে সাইবার ক্রাইম, সহিংস ভিডিও গেম, মাদকাসক্তি ও আত্মহত্যার মতো বিপজ্জনক বিষয়গুলোর সঙ্গে।
বর্তমান সময় শিশু–কিশোরদের মানসিক বিকাশে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে প্রযুক্তি ও সমাজ। জীবনকে সহজ করার নামে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইকে মানুষের জায়গায় প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। এতে মানুষ থেকে দ্রুত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে মানুষ। শিশু–কিশোরেরা বন্ধুদের সময় দেওয়ার বদলে সময় কাটাচ্ছে এআই বা অনলাইন গেমে। এতে সামাজিক মেলামেশা ও খেলাধুলা থেকে যে আবেগীয় গঠন ও জীবনদক্ষতা তৈরি হওয়ার কথা, তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিচ্ছিন্নতা ও আত্মকেন্দ্রিকতায়। মানসিক রোগের ঝুঁকি উঠতি বয়সে সব সময় বেশি হলেও বর্তমান যুগের এসব উপাদান বাড়তি ঝুঁকি যোগ করছে।
বর্তমান সময় শিশু–কিশোরদের মানসিক বিকাশে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে প্রযুক্তি ও সমাজ