চলতি সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এ নিয়ে টানা ৫ কার্যদিবস পুঁজিবাজারে পতন ঘটেছে। এর ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪ হাজার পয়েন্টের ঘরে নেমে এসেছে, যা চার মাস আগের অস্থানে নেমে এসেছে।

এদিন আগের কার্যদিবসের চেয়ে ডিএসই ও সিএসইতে লেনদেন কিছুটা কমেছে। একইসঙ্গে পুঁজিবাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম কমেছে।

আরো পড়ুন:

শেয়ার ফেরত না দিলে বাংলাদেশ ব্যাংক ঘেরাওয়ের আলটিমেটাম

বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় বিশেষ বিবেচনা করতে পারে সরকার

বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অনেক দিন ধরে পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুতে সূচকের উত্থান দেখা গেলেও লেনদেন শেষে তা পতনে রূপ নেয়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ডিএসইএক্স সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন শুরু হয়। লেনদেন চলাকালে বেশ কয়েকবার সূচকের উত্থান-পতন লক্ষ্য করা গেছে। তবে লেনদেন শেষে তা পতনে রূপ নেয়। কয়েক মাসের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন অনেক কমে গেছে।

ডিএসই ও সিএসই সূত্রে জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৮.

৯৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৯৬৭ পয়েন্টে। এর আগে চলতি বছরের ৮ জুলাই ডিএসইএক্স সূচক ছিল ৪ হাজার ৯৮২ পয়েন্টে। এদিন ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫.১৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৯ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ০.১১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৪০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

ডিএসইতে মোট ৩৯০টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ১০২টি কোম্পানির, কমেছে ২৫১টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৭টির।

এদিন, ডিএসইতে মোট ৪১৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪৮৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ৩৭.১৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৮ হাজার ৬১৫ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৭০.১২ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৯৫৮ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৩.১৭ পয়েন্ট কমে ৮৭৪ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ৫৯.৯৭ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ৪১৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সিএসইতে মোট ১৫৯টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৪৯০টি কোম্পানির, কমেছে ৯৭টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টির।

সিএসইতে ১৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৪ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

ঢাকা/এনটি/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল খ ট ক র শ য় র ও ইউন ট ড এসইএক স ল নদ ন শ স এসই ড এসই

এছাড়াও পড়ুন:

সূচক আবার ৫ হাজার পয়েন্টের নিচে, বাজারে উদ্বেগ

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আবার ৫ হাজার পয়েন্টের মাইলফলকের নিচে নেমে এসেছে। এতে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে তালিকাভুক্ত পাঁচটি ব্যাংকের শেয়ারের মূল্য শূন্য ঘোষণা করায় তা নিয়েও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।

শেয়ারের মূল্য শূন্য ঘোষিত পাঁচ ব্যাংকের লেনদেনের এখন কী হবে, সেই সিদ্ধান্তও চূড়ান্ত করতে পারেনি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সব মিলিয়ে নতুন করে বিনিয়োগকারীরা এখন আতঙ্কগ্রস্ত। একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়ায় থাকা তালিকাভুক্ত পাঁচ ব্যাংক হলো এক্সিম, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, সোশ্যাল ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংক।

টানা কয়েক দিনের দরপতনে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আজ বুধবার ৩২ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৯৮৭ পয়েন্টে নেমে গেছে। এর আগে সর্বশেষ গত ৮ জুলাই ডিএসইএক্স সূচকটি ৪ হাজার ৯৮২ পয়েন্টে নেমেছিল।

গত ৫ অক্টোবর ডিএসইএক্স সূচকটি ছিল ৫ হাজার ৪৪৮ পয়েন্ট। অর্থাৎ এক মাসে তা ৪৬১ পয়েন্ট বা সাড়ে ৮ শতাংশ কমেছে। ৫ হাজার পয়েন্টকে একটি মনস্তাত্ত্বিক সীমা মনে করা হয়। এটি অতিক্রম করলে বাজারে যেমন আশাবাদ তৈরি হয়, তেমনি এর নিচে নামলে হতাশা দেখা দেয়। বিশেষ করে যাঁরা মার্জিন ঋণ নিয়ে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেন, তাঁরা শেয়ারের দরপতনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কারণ, শেয়ারের দাম নির্দিষ্ট সীমার নিচে নামলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ সমন্বয়ের জন্য শেয়ার বিক্রি করে দেয়। এটাকে বলা হয়, জোরপূর্বক বিক্রি বা ফোর্সড সেল।

ঢাকার বাজারে গতকাল ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দরপতনেই মূলত সূচকের বড় পতন ত্বরান্বিত করে। লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের তথ্য অনুযায়ী, ডিএসইর সূচকে পতন এদিন বেশি পতন হয়েছে আল-আরাফাহ্‌ ইসলামী ব্যাংক, ওয়ালটন, ওরিয়ন ইনফিউশন, ব্র্যাক ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, বেক্সিমকো ফার্মা, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ ও পাওয়ার গ্রিডের শেয়ারের দাম কমায়।

বিএসইসির উচিত ছিল যখন ব্যাংকগুলো একীভূত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তখন শেয়ারবাজারে এগুলোর লেনদেন সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা; কিন্তু সেটি করা হয়নি। যার ফলে ব্যাংকগুলোর শেয়ারের ক্রমাগত দরপতন হচ্ছে, যার প্রভাব অন্যান্য শেয়ারের ওপর পড়ছেসাইফুল ইসলাম, সভাপতি, ডিবিএ

এদিকে একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়ায় থাকা তালিকাভুক্ত এক্সিম, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, সোশ্যাল ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংকের শেয়ারের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। বাংলাদেশ ব্যাংক আজ এসব ব্যাংকের শেয়ারের দাম শূন্য বলে জানিয়েছে। ব্যাংকগুলোর শেয়ারের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। এ নিয়ে বুধবার বিএসইসির শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈঠক হলেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে দিয়েছে, এসব ব্যাংকের শেয়ারধারীরা কোনো অর্থ পাবেন না।

এই ঘোষণার পর ব্যাংকগুলোর শেয়ার লেনদেন কতটা যৌক্তিক, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, ব্যাংকগুলোর শেয়ার লেনদেনের বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য বিএসইসি অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে মতামত জানতে চাইলেও মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি। বিএসইসিও ব্যাংকগুলোর শেয়ারের লেনদেনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। ফলে এসব ব্যাংকের শেয়ারের বিনিয়োগকারীরা রয়েছেন অনিশ্চয়তায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির মুখপাত্র মো. আবুল কালাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সংবাদ সম্মেলন শুনেছি ও দেখেছি। তবে ব্যাংকগুলোর শেয়ারের মূল্য শূন্য ঘোষণার বিষয়ে আমাদের দাপ্তরিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। দাপ্তরিক চিঠি পেলে এ বিষয়ে বিএসইসি পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।’

তবে শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, ব্যাংক পাঁচটির শেয়ারের বিষয়ে আরও আগেই বিএসইসির সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল। সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করে বরং সংস্থাটি বিনিয়োগকারীদের আরও বেশি ক্ষতির মুখে ফেলছে, যার প্রভাব পড়ছে পুরো বাজারে।

এ বিষয়ে ব্রোকারেজ হাউস মালিকদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিএসইসির উচিত ছিল যখন ব্যাংকগুলো একীভূত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তখন শেয়ারবাজারে এগুলোর লেনদেন সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা; কিন্তু সেটি করা হয়নি। ফলে ব্যাংকগুলোর শেয়ারের ক্রমাগত দরপতন হচ্ছে, যার প্রভাব অন্যান্য শেয়ারের ওপর পড়ছে। এখন ব্যাংকগুলোর বিষয়ে বিএসইসির দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সূচক আবার ৫ হাজার পয়েন্টের নিচে, বাজারে উদ্বেগ
  • ধারাবাহিক পতন: ৪ মাস আগের অবস্থানে ডিএসইর সূচক
  • ডমিনেজ স্টিলের নরসিংদীর কারখানা বন্ধ
  • পুঁজিবাজারে সূচকের পতন, কমেছে লেনদেন
  • সিএসই-৫০ সূচক সমন্বয়, কার্যকর ১১ নভেম্বর