‘সিপিসি গোল্ড’ পেলো ব্র্যাক মাইক্রোফাইন্যান্স
Published: 6th, November 2025 GMT
গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিতের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশে একমাত্র সংস্থা হিসেবে আন্তর্জাতিক মর্যাদাপূর্ণ ‘ক্লায়েন্ট প্রটেকশন সার্টিফিকেশন (সিপিসি) গোল্ড’ অর্জন করেছে ব্র্যাক।
আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘মাইক্রোফাইনানজা রেটিং (এমএফআর)’ এর পক্ষ থেকে সম্প্রতি ব্র্যাকের মাইক্রোফাইন্যান্স কর্মসূচিকে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, যা গ্রাহকদের সুরক্ষা ও দায়িত্বশীল আর্থিক সেবায় সর্বোচ্চ বৈশ্বিক স্বীকৃতি।
রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বের) এ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নির্ধারিত আটটি আন্তর্জাতিক নীতিমালার ভিত্তিতে সিপিসি গোল্ড সার্টিফিকেশন প্রদান করা হয়। গ্রাহকবান্ধব পণ্য সেবা, অতিরিক্ত ঋণ প্রতিরোধ, স্বচ্ছতা, ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ, গ্রাহকের তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা এবং অভিযোগ নিষ্পত্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে মানদণ্ড হিসেবে ধরা হয়।
ব্র্যাকের মাইক্রোফাইন্যান্স কর্মসূচি গত পাঁচ দশক ধরে বাংলাদেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির অগ্রযাত্রায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। এই কর্মসূচি দেশের ৪ কোটিরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছেছে, যার মধ্যে ৯০ শতাংশই নারী।
মাইক্রোফাইন্যান্স কর্মসূচির অর্থায়নে লাখো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, কৃষক ও নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে তাদের জীবনে এসেছে ইতিবাচক পরিবর্তন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.
উল্লেখ্য, ব্র্যাক মাইক্রোফাইন্যান্স কর্মসূচি দ্বিতীয়বারের মতো এই স্বীকৃতি লাভ করলো। এর আগে ২০১৬ সালে ব্র্যাক প্রথমবারের মতো সিপিসি গোল্ড সার্টিফিকেশন লাভ করে। বাংলাদেশে একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্র্যাকের এই স্বীকৃতি পুরো দেশের মাইক্রোফাইন্যান্স খাতের জন্য একটি গৌরবময় অর্জন।
এই অর্জন ব্র্যাক মাইক্রোফাইন্যান্স কর্মসূচির আওতায় ১ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি গ্রাহককে নিরাপদ, ন্যায্য এবং সম্মানজনক সেবা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা দেয়। এটি প্রমাণ করে যে দায়িত্বশীল মাইক্রোফাইন্যান্সে ব্র্যাক এখন বিশ্বমানের নেতৃত্বের আসনে রয়েছে। গোল্ড লেভেল সিপিসি ব্র্যাকের নেতৃত্বের জন্য একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন//
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে শিশু–কিশোরদের মানসিক সুস্থতা জরুরি কেন
শিশু–কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যে আমরা আদতে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছি? এই প্রশ্নের উত্তরের আগে আরেকটি প্রশ্ন ছুড়ে দিই। মানসিক স্বাস্থ্য মানে কী? অধিকাংশই বলবেন, ‘মানসিক রোগ না থাকা।’ কিন্তু এটি আরও অনেক বড় বিষয়। এটি ব্যক্তির আবেগীয়, মানসিক ও সামাজিকভাবে ভালো থাকা বোঝায়, যা প্রভাবিত করে তার চিন্তা, অনুভূতি ও আচরণকে। অন্যের সঙ্গে সম্পর্ক, চাপ মোকাবিলার দক্ষতা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও এর সঙ্গে সম্পর্কিত।
শৈশবের পরের ধাপটাই কৈশোরকাল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বয়ঃসন্ধিকাল ১০ বছর বয়স থেকে শুরু করে ১৯ বছর পর্যন্ত চলে। সময়টা অফুরান প্রাণশক্তি, উদ্দাম আবেগ আর সীমাহীন সম্ভাবনার। সবকিছুতে কৌতূহল, শরীরে নতুন অনুভূতির রোমাঞ্চ, স্বাধীনচেতা মনোভাব অথবা বিদ্যমান নিয়মরীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা—এ রকম আরও অনেক বৈশিষ্ট্য কৈশোরকালকে করে তোলে অনন্য।
‘আমি কে, কী চাই, কীভাবে দেখব আমার জীবন’—আত্মপরিচয়ের এই অনুসন্ধানের পথ ধরেই কৈশোরের চারিত্রিক বিকাশ ঘটতে থাকে। মস্তিষ্কের দ্রুত স্নায়বিক বিকাশ ও হরমোনের প্রভাবে শরীরের যেমন পরিবর্তন হয়, তেমনই মন দ্রুত বদলায়। এ বিকাশ নির্ভর করে তার জিনগত বৈশিষ্ট্য, পারিবারিক পরিবেশ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও চারপাশের ওপর।
আরও পড়ুনমন ও মস্তিষ্কের ১২টি গোপন সত্য, আপনি কয়টা মানেন?০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫সাফল্য ও ঝুঁকির দ্বন্দ্বশিশু–কিশোরের সাফল্য অনেকাংশেই নির্ভর করে মানসিক সুস্থতার ওপর। আবার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের চিন্তাপদ্ধতি, আবেগীয় রূপ ও সামাজিক ভূমিকা অনেকাংশেই নির্ধারিত হয় শৈশব ও কৈশোরকালীন মনের যত্নের ভিত্তিতে। আবেগের প্রবলতা, অনুসন্ধিৎসু মন, নিজেকে প্রকাশের চেষ্টা এ সময়কে যেমন বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করে, তেমনই অপরিপক্বতা ও ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা এই সময়কে করে তোলে নাজুক।
সারা বিশ্বে বর্তমান প্রজন্ম বেড়ে উঠছে এক পরিবর্তনশীল ও অস্থির সময়ের সন্ধিক্ষণে। ভোগবাদী ব্যবস্থা নির্ধারণ করছে দৈনন্দিন জীবনযাপন, ইচ্ছা-অনিচ্ছা ও সম্পর্ক। শক্তি আর প্রতিযোগিতার খেলায় সবাই জয়ী হতে চাইছে। আমদের ভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তাপদ্ধতি, এমনকি অনুভূতিও নিয়ন্ত্রণ করছে মুঠোফোন বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
শিশুরা বাস্তব জগতের বদলে মোহাচ্ছন্ন হয়ে বেড়ে উঠছে ভার্চ্যুয়াল জগতের অবাস্তব স্বপ্নমায়ায়। ছোটবেলা থেকেই পরিচিত হচ্ছে সাইবার ক্রাইম, সহিংস ভিডিও গেম, মাদকাসক্তি ও আত্মহত্যার মতো বিপজ্জনক বিষয়গুলোর সঙ্গে।
বর্তমান সময় শিশু–কিশোরদের মানসিক বিকাশে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে প্রযুক্তি ও সমাজ। জীবনকে সহজ করার নামে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইকে মানুষের জায়গায় প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। এতে মানুষ থেকে দ্রুত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে মানুষ। শিশু–কিশোরেরা বন্ধুদের সময় দেওয়ার বদলে সময় কাটাচ্ছে এআই বা অনলাইন গেমে। এতে সামাজিক মেলামেশা ও খেলাধুলা থেকে যে আবেগীয় গঠন ও জীবনদক্ষতা তৈরি হওয়ার কথা, তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিচ্ছিন্নতা ও আত্মকেন্দ্রিকতায়। মানসিক রোগের ঝুঁকি উঠতি বয়সে সব সময় বেশি হলেও বর্তমান যুগের এসব উপাদান বাড়তি ঝুঁকি যোগ করছে।
বর্তমান সময় শিশু–কিশোরদের মানসিক বিকাশে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে প্রযুক্তি ও সমাজ