এবার বিরোধিতায় নামল বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্রীরা
Published: 23rd, September 2025 GMT
ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজের জন্য প্রস্তাবিত কাঠামোয় নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করার উদ্যোগের প্রতিবাদ জানিয়েছে বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক স্তরের ছাত্রীরা। তাঁরা আশঙ্কা করে বলেছে প্রস্তাবিত কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় হলে নারী শিক্ষার এই প্রতিষ্ঠানটি সংকুচিত হবে এবং নারী শিক্ষা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ জন্য তাঁরা চান প্রস্তাবিত ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ নতুন জায়গায় করা হোক। সেটি পূর্বাচল, কেরানীগঞ্জ বা ঢাকার পার্শ্ববর্তী অন্য কোনো এলাকায় করতে হবে, কিন্তু বিদ্যমান মহিলা কলেজকে সংকুচিত করে নয়।
সাত কলেজকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় করার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক স্তরের ছাত্রীরা। পরে অধ্যক্ষের মাধ্যমে স্মারকলিপি দিয়ে নিজেদের পাঁচ দফা দাবির কথা তুলে ধরে ছাত্রীরা। ‘কলেজের স্বতন্ত্র কাঠামো ও ঐতিহ্য নষ্ট করে আসন্ন ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার নামে নীতিমালা বা অধ্যাদেশ বা আইন জারির চেষ্টা, উচ্চশিক্ষা সংকোচন, নারী উচ্চ শিক্ষা সংকোচন এবং শিক্ষাকে বাণিজ্যকরণের প্রতিবাদে’ এ কর্মসূচি পালিত হয়। অবস্থান কর্মসূচি থেকে ‘কলেজ কেন বিশ্ববিদ্যালয় হবে জবাব দাও, জবাব চাই, নারী শিক্ষা সংকোচন চেষ্টা রুখে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দেয় ছাত্রীরা। এ বিষয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও এসব কথা জানানো হয়।
আরও পড়ুনউচ্চমাধ্যমিকের ক্ষতি হয় এমন পরিবর্তন মানা হবে না২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫আগের দিন গতকাল সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে প্রস্তাবিত কাঠামোয় নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করার উদ্যোগ নিয়ে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছিল ঢাকা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক স্তরের ছাত্ররা। কলেজের ১৮৪ বছরের ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা হুঁশিয়ার করেছে-বিদ্যমান একাডেমিক কাঠামোর কোনো পরিবর্তন বা সংকোচন যা উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, তা তারা মেনে নেবে না। এ নিয়ে আজ কলেজে ক্যাম্পাসে মানববন্ধনও করেছে কলেজটির ছাত্ররা।
এর পাশাপাশি বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক স্তরের ছাত্রীরা ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজের জন্য প্রস্তাবিত কাঠামোয় নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করার বিরোধিতা করে নামে নামল।
বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক স্তরের ছাত্রীরা বলেছে ঐতিহ্যবাহী সাতটি কলেজকে একত্র করে ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ করার ঘোষণা আপাতদৃষ্টিতে ইতিবাচক মনে হলেও শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষাবিদদের মধ্যে এ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, সিদ্ধান্তটি কি আসলেই শিক্ষাব্যবস্থার মানোন্নয়ন ঘটাবে, নাকি উল্টো দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা একটি জনবান্ধব শিক্ষাপ্রবাহকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে? শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ইউজিসি উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি। উচ্চমাধ্যমিক রেখে বিশ্ববিদ্যালয় কতটুকু যুক্তিযুক্ত হবে সেটাও বিবেচনায় আনা হয়নি। সরকার যদি চায় নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে পারবে কিন্তু সক্ষমতা থাকলে একটি ঐতিহ্য বা শতবর্ষী কলেজ সৃষ্টি করে দেখাক।
আরও পড়ুনপ্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকেরা ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে পাচ্ছেন উচ্চতর স্কেল ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫সাত কলেজকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় করার প্রতিবাদে বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক স্তরের ছাত্রীদের হাতে নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রস ত ব ত ক ঠ ম য় য় নত ন
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে শামীম ওসমানসহ ৫৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা (তালিকা)
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ের ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, ছেলে ও ভাতিজার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জে। গত সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলাটি রেকর্ড হয় আদালতের নির্দেশে।
জানা যায়, গত বছর ১৯ জুলাই দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকায় আন্দোলন চলাকালে গুলি ও দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে আহত মো. জিদান হোসেন (২২) বাদী হয়ে ১১ সেপ্টেম্বর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি গ্রহণ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশকে মামলা রেকর্ডের নির্দেশ দেন।
পুলিশ জানায়, মামলায় নাম উল্লেখ করা হয়েছে ৫৯ জনের। পাশাপাশি অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৫০ থেকে ৬০ জনকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন,:
১। এ কে এম শামীম ওসমান, (সাবেক সংসদ সদস্য, নারায়ণগঞ্জ-৪)
২। শাহ নিজাম (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, মহানগর আওয়ামীলীগ),
৩। আজমেরী ওসমান (শামীম ওসমানের ভাতিজা),
৪। অয়ন ওসমান (শামীম ওসমানের ছেলে),
৫। জাকির হোসেন চেয়ারম্যান (আওয়ামীলীগ নেতা, আলিরটেক, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা),
৬। বিল্লাল হোসেন (ডিক্রিরচর, নারায়ণগঞ্জ সদর),
৭। তাওলাদ হোসেন (নারায়ণগঞ্জ সদর),
৮। রিফাত (নবীগঞ্জ, টি হোসেন রোড, বন্দর),
৯। আমির হোসেন (নবীগঞ্জ, টি হোসেন রোড, বন্দর),
১০। মো: জুলহাস (যুবলীগ, নাসিক ৬নং ওয়ার্ড আইলপাড়া),
১১। গোলাম হোসেন (নবীগঞ্জ, টি হোসেন রোড, বন্দর),
১২। অনিক (ছাত্রলীগ ক্যাডার, নাসিক ৬নং ওয়ার্ড আইলপাড়া),
১৩। ইমতিয়াজ আহমেদ (ফুলবাগ, ফতুল্লা),
১৪। আলমগীর কবির (দেওভোগ, নাগবাড়ি),
১৫। মো: বাবুল (যুবলীগ আর্মস ক্যাডার, নাসিক ৬নং ওয়ার্ড আইলপাড়া),
১৬। শরিফ হাজী (৬নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ, গোপচর, আলিরটেক, নারায়ণগঞ্জ সদর),
১৭। মো: শরিফ হোসেন (যুবলীগ ক্যাডার, নাসিক ৬নং ওয়ার্ড আইলপাড়া),
১৮। সামসুদ্দিন (ফুলবাড়, ফতুল্লা),
১৯। মিসেস সাগরিকা (মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী, কোতালের বাগ, ফতুল্লা),
২০। ফিরোজ মেম্বার (গোপচর, আলিরটেক, নারায়ণগঞ্জ সদর),
২১। নেকবর বেপারি (মুক্তারকান্দি, আলিরটেক, নারায়ণগঞ্জ সদর),
২২। শাহিন রাজু মেম্বার (মুক্তারকান্দি, আলিরটেক, নারায়ণগঞ্জ সদর),
২৩। মো: অহিদ উল্লাহ (আওয়ামীলীগ নেতা, কোতালেরবাগ, ফতুল্লা),
২৪। আবু আলিক মাসুম (কদমতলী দক্ষিনপাড়া, সিদ্ধিরগঞ্জ),
২৫। মো: হোসেন (ফাজেলপুর, এনায়েতনগর, সিদ্ধিরগঞ্জ),
২৬। মো: জীবন (কদমতলী নয়াপাড়া, ৭নং ওয়ার্ড, সিদ্ধিরগঞ্জ),
২৭। নাদিমুল ইসলাম নয়ন (ভাঙ্গারীপুল, বারিপাড়া, ৮নং ওয়ার্ড, সিদ্ধিরগঞ্জ),
২৮। নাদিম (স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা, আদমজী বিহারী কলোনী, সিদ্ধিরগঞ্জ),
২৯। জমির বার্বচি (যুবলীগ ক্যাডার. আদমজী বিহারী কলোনী, সিদ্ধিরগঞ্জ),
৩০। রমজান (আওয়ামীলীগ নেতা, আদমজী বিহারী কলোনী, সিদ্ধিরগঞ্জ),
৩১। হীরা (ফুলবাগ, ফতুল্লা),
৩২। জাকির মেম্বার (যুবলীগ নেতা, আলিরটেক, নারায়ণগঞ্জ সদর),
৩৩। মো: সোহেল (স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা, ১নং বাবুরাইল, ফতুল্লা),
৩৪। মো: উজ্জল (যুবলীগ নেতা, ১নং বাবুরাইল, ফতুল্লা),
৩৫। শায়লা বেগম (যুব মহিলালীগ নেত্রী, আইলপাড়া, ৬নং ওয়ার্ড, সিদ্ধিরগঞ্জ),
৩৬। সজিব (ছাত্রলীগ নেতা, কোতালেরবাগ, ফতুল্লা),
৩৭। মো: নুরুজ্জামান (আওয়ামীলীগের অর্থ যোগানদাতা, ৬৩ পশ্চিম রায়েরবাগ, যাত্রাবাড়ি),
৩৮। মো: আল আমিন (ফুলবাগ, ফতুল্লা),
৩৯। মেহেদী হাসান সম্রাট (আদমজী, ৬নং ওয়ার্ড, সিদ্ধিরগঞ্জ),
৪০। মো: শহিদুল্লাহ বাপ্পি (ছাত্রলীগের আর্মস ক্যাডার, আইলপাড়া দক্ষিন মোজারবাড়ি, সিদ্ধিরগঞ্জ),
৪১। দুলাল হোসেন ওরফে লালন (যুবলীগের আর্মস ক্যাডার, আইলপাড়া দক্ষিন মোজারবাড়ি, সিদ্ধিরগঞ্জ),
৪২। মো: সেলিম (যুবলীগ ক্যাডার, আইলপাড়া দক্ষিন মোজারবাড়ি, সিদ্ধিরগঞ্জ),
৪৩। পবিত্র চন্দ্র মন্ডল (নাওরা, ১নং ওয়ার্ড, কায়েতপাড়া, রুপগঞ্জ),
৪৪। জামাল (বারপাড়া, বন্দর),
৪৫। সায়েম (রাজবাড়ি, সমাজকল্যান, বন্দর),
৪৬। আল আমিন (বন্দর কলোনী, বন্দর),
৪৭। মাজেদুল ইসলাম মামুন রিদয় (বন্দর, নারায়ণগঞ্জ),
৪৮। খোন ভেন্ডার (কায়তাখালি, নবীগঞ্জ, বন্দর),
৪৯। অজিত সরকার (নাওরা, ১নং ওয়ার্ড, কায়েতপাড়া, রুপগঞ্জ),
৫০। সুচিত্র সরকার (নাওরা, ১নং ওয়ার্ড, কায়েতপাড়া, রুপগঞ্জ),
৫১। হাজি সফিউল্লাহ (৮নং ওয়ার্ড, বন্দর),
৫২। হাজেরা আক্তার মুক্তা (যুব মহিলালীগ সম্পাদক,দেলপাড়া, আদর্শনগর, ফতুল্লা),
৫৩। একরামুল ইসলাম (আওয়ামীলীগ নেতা, পাচানি পিরোজপুর, সোনারগাঁও),
৫৪। নাদের মিয়া (ষোল্লাপাড়া,বড়নগর, সোনারগাঁও),
৫৫। ছয়পুর রহমান (রসুলপুর, কুড়িগ্রাম সদর),
৫৬। মো: মানিক (কোতালেরবাগ, ফতুল্লা),
৫৭। আব্দুস সালাম সাজ্জাদ (৩নং ওয়ার্ড, নিমাইকাশারী, সিদ্ধিরগঞ্জ),
৫৮। ফারুক প্রধান (২৭ নং ওয়ার্ড, বন্দর),
৫৯। মনির হোসেন (ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শ্রমিকলীগ, ২৭নং ওয়ার্ড, বন্দর),
এছাড়াও অজ্ঞাত আরও ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে এই মামলায়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনূর আলম জানান, আদালতের নির্দেশে এই হত্যা চেষ্টার মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। বাদী জিদান হোসেন গত বছরের জুলাই আন্দোলনে আহত হয়েছিলেন।