চমক রেখেই ইংল্যান্ডের অ্যাশেজ স্কোয়াড ঘোষণা
Published: 24th, September 2025 GMT
ইংল্যান্ড টেস্ট দলের সহ-অধিনায়ক করা হলো মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হ্যারি ব্রুককে। তাতে আগের সহ-অধিনায়ক ওলি পোপের জায়গায় অ্যাশেজে তিন নম্বরে ব্যাট করার দরজা খুলে যেতে পারে তরুণ ব্যাটসম্যান জ্যাকব বেথেলের।
পোপকে সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে সরানোর বিষয়ে এ মাসের শুরুতে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের প্রধান কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য ১৬ সদস্যের অ্যাশেজ স্কোয়াড ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হলো।
ইংল্যান্ডের অ্যাশেজের স্কোয়াডে যদিও সবচেয়ে বড় চমক এটি নয়। স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার উইল জ্যাকসের ডাক পাওয়াটাই বড় চমক। জ্যাকস এর আগে ইংল্যান্ডের হয়ে দুটি টেস্ট খেলেছেন, সেটিও তিন বছর আগে পাকিস্তান সফরে। এরপরও তাঁকেই এবার শোয়েব বশিরের ব্যাকআপ স্পিনার হিসেবে দলে ডাকা হয়েছে। তাতে সুযোগ পাননি রেহান আহমেদ, লিয়াম ডসন আর জ্যাক লিচের মতো স্পিনাররা।
আগের দুই টেস্টে জ্যাকস নিয়েছিলেন ছয় উইকেট, সবই এক ইনিংসে। গত দুই মৌসুমে সারের হয়ে জ্যাকস খেলেছেন মাত্র পাঁচটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ। তাই এত বছর পর তাঁর ফেরাটা অনেকের জন্য বিস্ময়। বিশেষ করে এই গ্রীষ্মে দলে ফেরা ডসনকে সরিয়ে দেওয়াটা আরও অপ্রত্যাশিত।
গত ১৪ মাসে পাঁচবার বেন স্টোকসের অনুপস্থিতিতে ইংল্যান্ডকে নেতৃত্ব দিয়েছেন পোপ। সর্বশেষ নেতৃত্ব দিয়েছেন ভারতের বিপক্ষে, যেখানে শেষ টেস্টে ছয় রানে হেরে যায় ইংল্যান্ড। সেই সিরিজের শুরুতে হেডিংলিতে সেঞ্চুরি করেছিলেন। তবে সিরিজ শেষ করেন মাত্র ৩৪ গড় নিয়ে। ব্যাট হাতে ধারাবাহিকতা হারানোয় চাপ আরও বেড়েছে তাঁর ওপর। সাদা বলের ক্রিকেটে বেথেলের সাম্প্রতিক সাফল্যও পোপের জায়গা আরও অনিশ্চিত করে তুলেছে।
হাঁটুর চোটের কারণে পুরো গ্রীষ্মে মাঠের বাইরে থাকা পেসার মার্ক উড দলে ফিরেছেন। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর এটাই হবে তাঁর প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট। ইংল্যান্ডের ছয় পেসারের মধ্যে শুধু উডই আগে অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট খেলেছেন। দলে থাকা পেসার ম্যাথু পটস, জফরা আর্চার, গাস অ্যাটকিনসন, ব্রাইডন কার্স ও জশ টাং—সবার জন্য এটাই প্রথম অ্যাশেজ সফর।
ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজে ওভাল টেস্টে চোট পাওয়া ক্রিস ওকসকে অ্যাশেজের দলে রাখা হয়নি। চোটে ভুগছেন অধিনায়ক স্টোকসও। কাঁধের চোট থেকে এখনো পুরোপুরি সেরে ওঠেননি তিনি। নভেম্বরে শুরু হতে যাওয়া অ্যাশেজের আগেই ফিট হবেন স্টোকস, সেটা ধরে নিয়েই তাঁকেই অধিনায়ক রাখা হয়েছে।
অ্যাশেজের আগে ইংল্যান্ড যাবে নিউজিল্যান্ড সফরে। সেখানে তিনটি টি-টোয়েন্টি ও তিনটি ওয়ানডে খেলবে তারা। সীমিত ওভারের দুই সংস্করণেই নেতৃত্ব দেবেন ব্রুক। টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে বেন ডাকেট, জেমি স্মিথ ও জফরা আর্চারকে। প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি দলে ডাক পেয়েছেন টেস্ট ওপেনার জ্যাক ক্রলি।
ইংল্যান্ডের অ্যাশেজ স্কোয়াড:বেন স্টোকস (অধিনায়ক), জফরা আর্চার, গাস অ্যাটকিনসন, শোয়েব বশির, জ্যাকব বেথেল, হ্যারি ব্রুক (সহ-অধিনায়ক), ব্রাইডন কার্স, জ্যাক ক্রলি, বেন ডাকেট, উইল জ্যাকস, ওলি পোপ, ম্যাথু পটস, জো রুট, জেমি স্মিথ, জশ টাং, মার্ক উড।.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রানের পাহাড়ে চড়ে গলায় রেকর্ডের মালায়
আয়ারল্যান্ডের ঢিলেঢালা বোলিংয়ে ব্যাটিংটা হলো একেবারে যুৎসই। প্রভাব বিস্তার করে অনায়েসে রান তুলেছেন ব্যাটসম্যানরা। সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন দুজন। সুযোগ ছিল আরো। হয়নি। তাতে কি? স্কোরবোর্ডে বিশাল পুঁজি পেয়ে বড় কিছু রেকর্ডে নিজেদের যুক্ত করেছেন জয়, সাদমান, লিটন, শান্তরা।
সিলেটে আয়ারল্যান্ডকে ২৮৬ রানে থামিয়ে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে তুলেছে ৮ উইকেটে ৫৮৭ রান। লিড পেয়েছে ৩০৭ রানের। স্কোরবোর্ডে তিনশ রানের লিডে চোখ ছিল দলের। নয়তো দ্বিতীয়বারের মতো টেস্টে ৬০০ করার সুযোগ হাতছাড়া করতো না কোনোভাবেই।
আরো পড়ুন:
আয়ারল্যান্ড শিবিরে প্রথম আঘাত রানার
আয়ারল্যান্ডের ঢিলেঢালা বোলিংয়ে বাংলাদেশের ‘রান উৎসব’
রান পাহাড়ে চড়ে বেশ কিছু অর্জনে নিজেদের জড়িয়ে নিয়েছে দল। সেগুলোতেই চোখ বুলানো যাক—
এক.
টেস্ট ক্রিকেটে এটি বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ। সর্বোচ্চ সংগ্রহ ৬৩৮। গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০১৩ সালে করেছিল বাংলাদেশ। এরপর ২০১৭ সালে ওয়েলিংটনে বাংলাদেশ নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ উইকেটে ৫৯৫ রান করেছিল। সিলেটে বাংলাদেশ আজ ইনিংস ঘোষণা করে ৫৮৭ রানে।
দুই.
দেশের মাটিতে এটি আবার সর্বোচ্চ সংগ্রহ। দেশের মাটিতে এর আগে সর্বোচ্চ রান ছিল ৬ উইকেটে ৫৬০। ২০২০ সালে মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই রান করেছিল দল।
তিন.
১১৭.৩ ওভারে বাংলাদেশের দলীয় রান ৫০০ ছুঁয়ে ফেলে। টেস্ট ক্রিকেটে যা বাংলাদেশের দ্রুততম দলীয় ৫০০ রান। এর আগে ২০১৭ সালে ১২১.২ ওভারে দলীয় ৫০০ পেরিয়েছিল বাংলাদেশ। ম্যাচটি হয়েছিল ওয়েলিংটনে, নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে।
চার.
নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে প্রথম চার ব্যাটসম্যানেরই ফিফটি করার ঘটনা এবারই প্রথম বাংলাদেশের। জয় করেছেন ১৭১ রান। সাদমান ইসলাম ৮০ রানে থেমে যান। মুমিনুল হক করেছেন ৮২ রান। এরপর নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট থেকে আসে ১০০ রান। পাঁচে নামা মুশফিকুর রহিম ২৩ এবং ছয়ে লিটন নেমে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলে করেন ৬০ রান। প্রথম ছয় ব্যাটসম্যানের পাঁচজনের ফিফটি পাওয়ার ঘটনাও এবারই প্রথম।
পাঁচ.
কমপক্ষে ৫০০ দলীয় রান হয়েছে এমন ইনিংসে রান রেটে এবারের ইনিংসই এগিয়ে। এই ইনিংসের রান রেট ৪.১৬। এর আগে একবারই রান রেট ৪ ছুঁয়েছিল। ২০১৫ সালে খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ছিল ৪.০৮।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল