বন্দরে র্যাব পরিচয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গ্রেপ্তার ৪
Published: 24th, September 2025 GMT
র্যাব পরিচয়ে মহাসড়কে ডাকাতি প্রস্তুতি কালে বন্দরে ৪ ভূয়া র্যাব সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই সময় পুলিশ গ্রেপ্তারকৃতদের দেহ ও গাড়ী তল্লাশি চালিয়ে খেলনার সাদৃশ্য ওয়াকিটকি, ১টি ইলেকট্রিক শক দেওয়ার যন্ত্র, ১টি গাড়ী থামানো সিগন্যাল লাইট, ৪টি র্যাবের কটি ও ড্রাইভারের সিটের নিচে থেকে ২টি স্কেচটেপসহ তাদের ব্যবহৃত সাদা রং এর ঢাকা মেট্রো চ ১৩-৮০৪৬ নাম্বারে ১টি হায়েস মাইক্রোবাস জব্দ করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো সুদূর পটুয়াখালী জেলার বাউফল থানার চররঘুনাথদ্দী এলাকার মৃত দলিল উদ্দিন খন্দকারের ছেলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অবসরপ্রাপ্ত ল্যান্স কর্পোরাল আলমগীর হোসেন (৩২) একই জেলার সদর থানার পশ্চিম আউলিয়াপুর এলাকার আব্দুল হক সরদারের ছেলে রাজেন্দ্রপুর প্রাক্তন র্যাব হেডকোয়াটার্স অবসরপ্রাপ্ত ল্যান্স কর্পোরাল আল মামুন সরদার (৪৩) বরগুনা জেলার আমতলী থানার গেরাবুনীয়া এলাকার মৃত আব্দুল কুদ্দুস মিয়ার ছেলে এনামুল হক (৩৩) ও পটুয়াখালী জেলার বাউফল থানার রামনগর এলাকার আনোয়ার আলী মিয়ার ছেলে শফিকুল ইসলাম (৫৬)।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার উপ পরিদর্শক কাজী রিপন সরকার বাদী হয়ে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় এ মামলা রুজু করেন। যার মামলা নং- ৩০(৯)২৫।
গ্রেপ্তারকৃতদের বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উল্লেখিত মামলায় ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত সোয়া ৭টায় বন্দর থানার ঢাকা টু চট্টগ্রাম মহাসড়কের জাঙ্গালস্থ ঢাকাগামী লেনে এ ডাকাতি প্রস্তুতি ঘটনাটি ঘটে।
মামলার তথ্য সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে বন্দর থানার উপ পরিদর্শক কাজী রিপন সরকারসহ সঙ্গীয় ফোর্স বন্দর থানার জিডি নং ১৩০৩ মূলে বন্দর থানা এলাকায় মাদক উদ্ধার ও বিশেষ অভিযান পরিচালনা করার সময় গোপন সংবাদের মাধ্যমে খবর পায় অত্র থানা এলাকার জাঙ্গাল এলাকার ঢাকা টু চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকাগামী লেনে হাজী পার্কিং এর সামনে পাঁকা রাস্তার উপরে কতিপয় ব্যাক্তি ঢাকা মেট্রো চ ১৩-৮০৪৬ নাম্বারের একটি সাদা রংএর হাইস মাইক্রোবাসসহ র্যাবের কটি পরিহিত অবস্থায় সন্দেহজনক ভাবে ঘুরাফেরা করছে। বিষয়টি তাৎক্ষণিক বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জকে অবহিত করে তার নির্দেশে সঙ্গীয় অফিসার ফোর্স দ্রুত ঘটনাস্থলে আসলে কতিপয় ব্যাক্তিদের গতিবিধি সন্দেহ হলে পুলিশ তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করে।
পরে তারা র্যাব সদস্য দাবি করলে তাদের আইডিকার্ড বা কোন জেলার কোন ইউনিটে চাকুরি করে তার সঠিক উত্তর দিতে না পারায় বন্দর থানা পুলিশ আলমগীর হোসেন, আল মামুন সরদার, এনামুল হক ও শফিকুল ইসলাম নামে ৪ ভূয়া র্যাব সদস্যদের গ্রেপ্তার করে।
পরে গ্রেপ্তারকৃতদের দেহ ও তাদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাস তল্লাশি চালিয়ে কালো রং এর হ্যান্ডকাপ ,১টি খেলনার সাদৃশ্য ওয়াকিটকি, ১টি ইলেকট্রিক শক দেওয়ার যন্ত্র, ১টি গাড়ী থামানো সিগন্যাল লাইট, ৪টি র্যাবের কটি ও ড্রাইভারের সিটের নিচে থেকে ২টি স্কেচটেপ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ লিয়াকত আলী গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, মহাসড়কে ডাকাতি প্রস্তুতি সময় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা রুজু করে গ্রেপ্তারকৃতদের ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ প রস ত ত এল ক র
এছাড়াও পড়ুন:
পরকীয়া ও ছিনতাইয়ের জালে প্রাণ গেল সায়েদুরের
ঢাকার ধামরাইয়ে অটোরিকশা চালক সায়েদুর রহমান হত্যা ও অটোরিকশা ছিনতাইয়ের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা (পিবিআই)। দুই বছর আগে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় সদর আলী ও আলমগীর নামে দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পিবিআই ঢাকা জেলা কার্যালয়ে মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পরকীয়া সম্পর্ক ও অর্থসংকটের জটিল টানাপোড়েন থেকেই এ হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাত। আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।
গত ২০২৩ সালে ২৮ নভেম্বর সকালে ধামরাইয়ের বাইশাকান্দার কেষ্টখালী গ্রামের জনৈক ফজলে মাহবুবের ধানক্ষেতের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয় অজ্ঞাতনামা এক পুরুষের লাশ। এই ঘটনায় ধামরাই থানার এসআই আব্দুল জব্বার বাদী হয়ে ধামরাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয় এসআই পাভেল মোল্লাকে।
তদন্তে সনাক্ত হয় অজ্ঞাত লাশের পরিচয়। তার নাম সায়েদুর রহমান। পেশায় অটোরিকশা চালক। পরবর্তীতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার পিবিআইতে ন্যস্ত হয় এবং এসআই আনিসুর রহমান মামলাটি তদন্ত করেন।
পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার কুদরত-ই-খুদা জানান, তথ্য-প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের হত্যা ও অটো ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সদর আলী ওরফে সোহরাবকে (৪৭) গ্রেপ্তার করে আদালতে মাধ্যমে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আসামি সদর আলী ওরফে সোহরাবের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঘটনার মূল আসামি আলমগীরকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন তারা।
পিবিআই বলছে, আসামিদের জবানবন্দি পর্যালোচনায় জানা যায় যে, আসামি সদর আলী ওরফে সোহরাব (৪৭) ও আলমগীর (২৫) এবং আসামি জুয়েল একই বাসায় পাশাপাশি রুমে বসবাস করতো। আলমগীর এবং জুয়েল অবিবাহিত ছিল। পরবর্তীতে সদর আলী ওরফে সোহরাব (৪৭) এর স্ত্রী ও আসামি জুয়েলের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক তৈরি হয় এবং জুয়েল, আলমগীরের সহায়তায় সদর আলীর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে যায়।
পরে আসামি সদর আলী ভিকটিম সায়েদুর রহমানের স্ত্রীর সাথে পরকীয়ার সম্পর্কের চেষ্টা করে এবং আলমগীরও ভিকটিম সায়েদুর রহমানের স্ত্রীর সাথে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়াতে চায়। সদর আলীর স্ত্রী জুয়েলের সাথে ছয় মাস থাকার পর আবার সদর আলীর কাছে ফিরে আসে।
নগদ টাকার প্রয়োজন হলে সদর আলী সদর আলী, আলমগীর ও জুয়েল অটোরিকশা চালক সায়েদুর রহমানের অটোরিকশা ছিনতাই করে বিক্রির পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা সায়েদুর রহমানকে ফুসলিয়ে গান শোনার অজুহাতে বাইরে নিয়ে যায়। ফেরার পথে ধামরাই থানাধীন কেষ্টখালি গ্রামের নির্জন স্থানে গামছা দিয়ে মুখ, হাত ও পায়ে রশি বেঁধে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করে মৃতদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
হত্যাকাণ্ডের পর তারা সায়েদুর রহমানের অটোরিকশা ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে এবং উক্ত টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে।
এ বিষয়ে পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খুদা, পিপিএম-সেবা বলেন, “দায়িত্ব পাওয়ার পর আমরা ঘটনার বিষয়ে প্রকাশ্য ও গোপনে তদন্ত শুরু করি। এক পর্যায়ে তথ্য-প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামী সদর আলী ও আলমগীদ্বয়কে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করি। আসামীদ্বয় বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। নগদ টাকার প্রয়োজনে পরিকল্পিতভাবে আসামীদ্বয় ভিকটিমকে হত্যা করে তার অটোরিকশা ছিনতাই করে বিক্রি করেছে।”
ঢাকা/সাব্বির/এস