বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ভালোভাবে হয় না। সমস্যাটি নতুন নয়, অনেক আগে থেকেই এমন হয়ে আসছে। এটা কাঠামোগত সমস্যা। খণ্ডিতভাবে দেখে, খণ্ডিত উদ্যোগ নিয়ে সমস্যাটির সমাধান হবে না। শিক্ষার মানোন্নয়ন ও বৈষম্য কমানো দরকার।

ধনী ও সচ্ছল পরিবারের সন্তানেরা ভালো শিক্ষা পাবে, নিম্নবিত্তের সন্তানেরা পাবে না, সেটা হতে পারে না। শিক্ষার জন্য সম্পদের সংস্থান কোথা থেকে হবে, সেটার পথ খোঁজা দরকার। সব মিলিয়ে খাত ধরে একটি বড় ধরনের পর্যালোচনা হতে হবে। সেটা কয়েক দিন বা মাসের বিষয় নয়। পর্যালোচনাটি দরকার গভীর ও বিস্তৃত।

আরও পড়ুনবিদ্যালয়ে যেনতেন পড়াশোনা, ভরসা কোচিং ও গৃহশিক্ষক২ ঘণ্টা আগে

বর্তমান সরকার ১১টি বিষয়ে সংস্কার কমিশন করেছে। শিক্ষা খাত নিয়ে কোনো সংস্কার কমিশন করা হয়নি। প্রাথমিক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি কমিটি করেছিল। সেই কমিটির প্রধান ছিলাম আমি। আমরা প্রতিবেদন সরকারের কাছে দিয়েছি। সেখানে বিভিন্ন সুপারিশ রয়েছে। কিন্তু সেটা নিয়ে তেমন কোনো কাজ হয়নি। খণ্ডিতভাবে দু-একটি সুপারিশ হয়তো বাস্তবায়ন হয়ে থাকতে পারে।

২০১০ সালে শিক্ষানীতি হয়েছে। তবে তা অনেকাংশে বাস্তবায়ন হয়নি। কারণ, সরকারগুলো কর্তৃত্ব ধরে রাখতে চায়। বিগত ৫৪ বছরে কোনো সরকারই শিক্ষা নিয়ে তেমন কিছু করেনি। বর্তমান সরকার অন্তত একটা সূচনা করতে পারত। সেটাও করেনি।

শিক্ষা খাত আমাদের রাজনৈতিক ব্যর্থতার একটি উদাহরণ। এ খাতের বড় ধরনের সংস্কার দরকার। অতীতের সরকারগুলো যেমন এ খাত নিয়ে কাজ করেনি, তেমনি ভবিষ্যতের সরকার সংস্কার করবে, সে আশাও করতে পারছি না। তবু আশা নিয়ে থাকতে হবে।

মনজুর আহমদ: শিক্ষাবিদ ও ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক।

[মতামত লেখকের নিজস্ব]

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন সরক র দরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সরেজমিনে পাবনার মানসিক হাসপাতাল: ‘অমানবিকতা’র নানা গল্প জমা যেখানে

রোগীর ফাইলে মো. সাইদ হোসেনের বয়স ৬৫ বছর। তাঁর ঠিকানা পাবনার মানসিক হাসপাতালের ৪ নম্বর ওয়ার্ড। ৩০ অক্টোবর দুপুরে গিয়ে দেখা গেল, খালি গায়ে শুধু ডায়াপার পরা সাইদ মেঝেতে ময়লা-জীর্ণ তোশকে শুয়ে আছেন। তোশক ও বালিশে কভার নেই। বাঁ হাতটি বাঁকা করে বুকের কাছে ধরে রেখেছেন। মাথার কাছে একটি প্লেটে কিছু ভাত লেগে শুকিয়ে আছে। কিছু ভাত মাথার কাছে তোশকে পড়ে আছে।

১৯৯৬ সালের লালচে হয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছিঁড়ে যাওয়া এ হাসপাতালের রোগী ভর্তির ফরমে আবু সাইদের বয়স লেখা ছিল ৩৬ বছর। সেখানে সাইদের বাড়ির ঠিকানা (পাবনা), স্বজনের নাম আছে। তবে এত বছরেও সাইদকে কেউ বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য আসেননি। চিকিৎসকদের বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সাইদ সুস্থ আছেন বহুদিন ধরে। এর পরও হাসপাতালে থাকার জন্য তিনি একজন রোগী হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছেন।

পাবনার মানসিক হাসপাতালের শয্যায় রোগী

সম্পর্কিত নিবন্ধ