ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের বক্তব্য ‘অযৌক্তিক’: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 8th, October 2025 GMT
পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে ‘সম্পূর্ণ অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করে বলেছেন, “বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন সম্পূর্ণভাবেই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।”
বুধবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তৌহিদ বলেন, “আমি ওই বক্তব্যকে তাদের বিষয় বলে মনে করি না, এটি বাংলাদেশের সম্পূর্ণ অভ্যন্তরীণ বিষয়, আর এ ধরনের মন্তব্য একেবারেই অযৌক্তিক।”
আরো পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে অস্থিরতার ইন্ধনের অভিযোগ অস্বীকার ভারতের
সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর বিএসএফের, সবাই খুলনার
ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সম্প্রতি বলেন, “নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ও অংশগ্রহণমূলক হলে ভারত বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনে যেই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখবে।”
ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা রাষ্ট্রপতির চিঠি, তুরস্কের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা এবং বিদেশে ভিসা-সংক্রান্ত নানা জটিলতাসহ সমসাময়িক বেশ কিছু ইস্যু নিয়েও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন। খবর বাসসের।
রাষ্ট্রপতির পাঠানো বলে উল্লিখিত একটি চিঠি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তৌহিদ জানান, তিনি চিঠিটি পেয়েছেন, তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চান না।
তৌহিদ বলেন, “তিনি (রাষ্ট্রপতি) শুধু তার অনুভূতি প্রকাশ করেছেন, এ বিষয়ে আমি আর কিছু বলতে চাই না।”
তিনি জানান যে চিঠিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার অনেক পরে তার হাতে পৌঁছায়।
বিদেশি মিশনগুলো থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি অপসারণের বিষয়ে কোনো আইন বা সরকারি নির্দেশনা জারি হয়েছে- এমন দাবিও তিনি স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের একজন সাবেক মন্ত্রীর বাসায় তিন বিদেশি রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তৌহিদ বলেন, “কোনো ব্যক্তির বাসায় যাওয়া অপরাধ নয়। কূটনীতিকরা সাধারণভাবে যে কারও বাসায় যেতে পারেন। তবে সে সাক্ষাতের আলোচ্য বিষয় ও সম্ভাব্য ফলাফল স্বাভাবিকভাবেই দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।”
তুরস্কের সঙ্গে সম্ভাব্য সামরিক সহযোগিতা প্রসঙ্গে তৌহিদ বলেন, “এটি দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের স্বাভাবিক দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগের অংশ।”
‘তুরস্কের উল্লেখযোগ্য সামরিক প্রযুক্তি আছে। আমাদের ইতোমধ্যে অনেক দেশের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা রয়েছে এবং তা আরো সম্প্রসারিত করা উচিত। এটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক একটি বিষয়।”
পাকিস্তানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে বাংলাদেশি নিহত হওয়ার প্রতিবেদন প্রসঙ্গে তিনি সতর্ক করে বলেন, “এ ধরনের দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটনা হতে পারে। বাংলাদেশ কোনো সংঘাতে অংশ নিচ্ছে না, এবং আমরা কোনোভাবেই চাই না আমাদের নাগরিকেরা বিদেশি কোনো অভিযানে জড়াক।”
ভিসা-সংক্রান্ত জটিলতা বিষয়ে তৌহিদ জানান, কিছু দেশে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও শ্রমিকদের জন্য ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকার এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছে।
“শিক্ষাভিসার চাহিদা অনেক বেশি। উদাহরণস্বরূপ, প্রায় ৮০ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছে, কিন্তু তারা বছরে মাত্র ২ হাজার আবেদন প্রক্রিয়াকরণ করতে পারে,” বলেন তিনি।
তৌহিদ জানান, বাংলাদেশ জার্মান সরকারের কাছে শিক্ষার্থী কোটার সংখ্যা অন্তত ৯ হাজারে উন্নীত করার অনুরোধ জানিয়েছে, যা বর্তমানে পাকিস্তানের জন্য নির্ধারিত কোটার সমান।
তিনি বলেন, “সরকার বিকল্প দূতাবাসের মাধ্যমে ভিসা প্রক্রিয়া সহজতর করার উপায় খুঁজছে, যাতে জট ও সেবা-সংকট নিরসন করা যায়।”
তবে তিনি স্বীকার করেন, “জাল নথি ও অনিয়মিত অভিবাসনের কারণে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
উপদেষ্টা বলেন, “এমনকি প্রকৃত আবেদনকারীরাও এখন সমস্যায় পড়ছেন। আমাদের প্রথমেই নিজেদের ভেতরের ত্রুটি ঠিক করতে হবে।”
ঢাকা/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত হ দ বল ন র ষ ট রপত উপদ ষ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে বলাৎকারের অভিযোগ মাদ্রাসা শিক্ষক আটক, গণপিটুনি
সিদ্ধিরগঞ্জে দশ বছরের এক মাদরাসা ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে এক শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাটি প্রকাশ পেলে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী অভিযুক্ত শিক্ষক ও মাদরাসার প্রিন্সিপালকে গণপিটুনি দেয়।
বুধবার (৮ অক্টোবর) রাতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৯নং ওয়ার্ডের জালকুড়ি ইসলামিয়া ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার ৩ অক্টোবর রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই মাদরাসার শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম (২৭) ভয়-ভীতি দেখিয়ে তৃতীয় তলার বাথরুমে নিয়ে দশ বছরের এক ছাত্রকে বলাৎকার করেন।
ঘটনাটি পরদিন ছাত্রটি মাদরাসার প্রিন্সিপাল মিজানুর রহমানকে জানালে তিনি কাউকে কিছু না বলতে ভয় দেখান বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঘটনাটি বুধবার রাতে স্থানীয়দের মধ্যে জানাজানি হলে ক্ষিপ্ত এলাকাবাসী রাত পৌনে ৯টার দিকে অভিযুক্ত শিক্ষক ও প্রিন্সিপালকে ধরে গণপিটুনি দেয়।
খবর পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। এলাকাবাসী উত্তেজিত ছিল। অপ্রিতিকর পরিস্থিতি এড়াতে অভিযুক্ত শিক্ষককে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় বইছে। স্থানীয়রা অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।