গাজা শান্তি পরিকল্পনায় সম্মত হামাস-ইসরায়েল, আগামী কয়েকদিনে যা ঘটবে
Published: 9th, October 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার রাতে এক ঘোষণায় বলেছেন, ইসরায়েল ও হামাস গাজা শান্তি চুক্তির প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে সম্মত হয়েছে।
ট্রাম্প জানান, এর মাধ্যমে গাজায় হামাস কর্তৃক বন্দী সকল জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং ইসরায়েল নিজেদের সেনাদের নির্ধারণ করা একটি সীমানায় সরিয়ে আনবে।
আরো পড়ুন:
গাজা শান্তি চুক্তি নিয়ে যা বলছেন বিশ্বনেতারা
গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি ‘বিশ্বের জন্য একটি মহান দিন’: ট্রাম্প
এদিকে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েল কর্তৃক বন্দী কিছু ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।
আগামী কয়েক দিনে যা ঘটবে-
বৃহস্পতিবার
ইসরায়েলি সরকার গাজা শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তাবের ওপর সংসদে ভোট গ্রহণের জন্য জেরুজালেম সময় দুপুর ২টায় বৈঠক করবে। প্রস্তাবিটি আনুষ্ঠানিকভাবে সংসদে অনুমোদিত হলে, যুদ্ধবিরতি অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং ইসরায়েলি সেনারা একটি সম্মত রেখায় প্রত্যাহার শুরু করবে।
প্রথম পাঁচ দিন ৪০০টি করে ত্রাণ ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেবে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
শুক্রবার
বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএস নিউজকে হোয়াইট হাউজের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার শেষ করতে সম্ভবত ২৪ ঘন্টারও কম সময় লাগবে।
এটি সম্পন্ন হলে, গাজায় তাদের বন্দী থাকা জিম্মিদের মুক্তি দিতে হামাসের ৭২ ঘণ্টা সময় শুরু হবে।
সোমবার
হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তা সিবিএসকে বলেছেন, সোমবার থেকে জিম্মিদের মুক্তি শুরু হবে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আশা করছে। তবে, তারা বলেছে, সম্ভব হলে হামাস আরো আগেই জিম্মিদের মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এ ঘটনায় ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হন বলে দাবি করে ইসরায়েল। জিম্মি করা হয় ২৫১ জনকে। তাদের মধ্যে ৪৭ জন এখনো গাজায় রয়েছেন। এর মধ্যে ২৫ জন আর বেঁচে নেই বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
এদিকে ইসরায়েলে হামাসের হামলার দিন থেকেই গাজায় টানা নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছেন দেশটির সেনারা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য, গত দুই বছরে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় অন্তত ৬৭ হাজার ১৭৩ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২০ হাজার ১৭৯টি শিশু।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
ডিপো থেকে তেল চুরি তদন্তে কমিটি করেছে জ্বালানি বিভাগ
রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি যমুনা অয়েলের ফতুল্লা ডিপো থেকে তেল চুরির ঘটনা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। এর আগে ‘সরকারি ডিপো থেকে পৌনে ৪ লাখ লিটার ডিজেল গায়েব’ শিরোনামে ১ অক্টোবর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল প্রথম আলো।
একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রস্তাবিত কমিটি করে গতকাল সোমবার অফিস আদেশ জারি করেছে জ্বালানি বিভাগ। এতে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা সংস্থার প্রধানকে একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি মনোনয়নের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অফিস আদেশে বলা হয়, যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ফতুল্লা ডিপো থেকে তেল চুরি–সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর সঙ্গে প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদনের অনুলিপিও যুক্ত করা হয়েছে।
কমিটির কার্যপরিধিতে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে দায় নির্ধারণ করার কথা বলা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ রোধকল্পে সুপারিশ প্রদান করবে কমিটি। এতে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি), যমুনা অয়েল কোম্পানি, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে একজন করে প্রতিনিধি রাখার কথা বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, জ্বালানি তেল চুরি ও অপচয় রোধে ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন নির্মাণ করেছে সরকার। এ পাইপলাইনে তেল সরবরাহ চালু হয়েছে গত জুনে। চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় মূল টার্মিনাল থেকে সরাসরি তেল আসছে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায়। এর মধ্যেও যমুনা অয়েল কোম্পানির ফতুল্লা ডিপোয় দুই দফায় গায়েব হয়ে গেছে ৩ লাখ ৭৫ হাজার লিটার ডিজেল।
তেল গায়েবের বিষয়টি ইতিমধ্যে আমলে নিয়ে ফতুল্লা ডিপোর ২২ ও ২৩ নম্বর ট্যাংকের সক্ষমতা পুনরায় যাচাই করতে নির্দেশনা দিয়েছে যমুনা অয়েল কোম্পানি। একই সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করতে একটি কমিটি করা হয়েছে।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর যমুনার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো অপারেশন বিভাগের এক চিঠি বলছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইনের মাধ্যমে ২৪ জুন তেল সরবরাহ শুরু হয়। ফতুল্লা ডিপোতে তেল গ্রহণ সমাপ্ত হয় ৪ জুলাই। এতে ২ লাখ ৬২ হাজার ৮০৪ লিটার তেল ক্ষতি হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে ১৪ সেপ্টেম্বর তেল আসা শুরু হয়, যা শেষ হয় ২২ সেপ্টেম্বর। এবার ক্ষতি হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৬১৪ লিটার।
যমুনার চিঠিতে আরও বলা হয়, ট্যাংকে গভীরতা অনুযায়ী তেলের পরিমাণগত পার্থক্য রয়েছে। তাই পুনরায় সক্ষমতা যাচাই করতে ঠিকাদারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর আরেকটি চিঠিতে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এতে পাইপলাইন কোম্পানির একজনকেও রাখা হয়েছে। কমিটি ইতিমধ্যে ফতুল্লা পরিদর্শন করেছে। সবকিছু যাচাই-বাছাই করে দেখছে। এ সপ্তাহের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে যমুনার ফতুল্লা ডিপোয় তেল চুরির ঘটনা তদন্তে ২ অক্টোবর মহাব্যবস্থাপককে (বণ্টন ও বিপণন) প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে বিপিসি। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা তাদের।
আজ মঙ্গলবার বিপিসির চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান প্রথম আলোকে বলেন, জ্বালানি তেল চুরি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত মোটামুটি শেষের দিকে। শিগগিরই এ নিয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।
আরও পড়ুনসরকারি তেলের ডিপো থেকে পৌনে ৪ লাখ লিটার ডিজেল গায়েব০১ অক্টোবর ২০২৫