যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর এবং ইসরায়েলি সেনারা সম্মত মোতায়েন লাইনে ফিরে যাওয়ার পর হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি দক্ষিণ গাজা থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে। শুক্রবার দ্য গার্ডিয়ান এ তথ্য জানিয়েছে।

গাজায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মিশরের শার্ম আল শেখে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে তিন দিনের পরোক্ষ আলোচনা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে একটি চুক্তির বিষয়ে সমঝোতা হয়। এই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ২০ জন জীবিত জিম্মি এবং ২৮ জনের মৃতদেহ ফেরত দেবে হামাস। এর বিনিময়ে ইসরায়েল প্রায় ২০০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে। শুক্রবার ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিমুক্তি চুক্তি অনুমোদন করেছে। এরপর থেকেই গাজার কিছু অংশ থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করে ইসরায়েল। পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি চুক্তি শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুরে কার্যকর করা হয়েছে।

ইসরায়েলি আরবি ভাষার সামরিক মুখপাত্র আভিচায় আদরাই জানিয়েছেন, গাজার বাসিন্দারা নির্দিষ্ট রুট দিয়ে উত্তর দিকে ফিরে যেতে পারেন। একই সাথে তাদেরকে বেইত হানুন এবং রাফাহ সীমান্ত ক্রসিংয়ের মতো এলাকা থেকে দূরে থাকার সতর্ক করে দিয়েছেন, যেখানে সেনারা অবস্থান করছে। 

যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার ঘোষণার সাথে সাথে, ফিলিস্তিনিদের একটি বিশাল দল উত্তর দিকে গাজা শহরের দিকে ছুটে যেতে শুরু করে, যা এই অঞ্চলের বৃহত্তম নগর এলাকা। গাজা শহরে ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের ফলে উত্তর গাজায় বসবাসকারী প্রায় পাঁচ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন এবং তাদের অনেকেই তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে আগ্রহী ছিলেন।

গাজা শহরের শেখ রাদওয়ান এলাকার ৪০ বছর বয়সী ইসমাইল জায়েদা বলেন, “ঈশ্বরের ধন্যবাদ আমার বাড়ি এখনো দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু জায়গাটি ধ্বংস হয়ে গেছে, আমার প্রতিবেশীদের বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে, পুরো জেলা ধ্বংস হয়ে গেছে।”

এই যুদ্ধবিরতির সাথে সাথে অবরুদ্ধ উপত্যকার পাঁচটি ক্রসিং দিয়ে গাজায় মানবিক ও চিকিৎসা সহায়তার প্রবেশ শুরু হবে। ইসরায়েলি আর্মি রেডিও অনুসারে, ইসরায়েল প্রতিদিন ৬০০টি ত্রাণ ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেবে, যা যুদ্ধ-পূর্ববর্তী স্তরের প্রায় সমান।
 

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

পাবনার বেড়ায় স্পিডবোটে এসে বাজারে ডাকাতি, আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা

পাবনায় স্পিডবোটে এসে নদীসংলগ্ন বাজারে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে বেড়া উপজেলার যমুনাপাড়ের নাকালিয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে। বাজারের ৪টি দোকান থেকে প্রায় ২৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে পালিয়ে যায় ডাকাত দল। এর আগেও ঠিক একই কায়দায় এই বাজারে দু–তিনবার ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সদর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে যমুনা নদীর পাড়ে নাকালিয়া বাজারের অবস্থান। গতকাল সোমবার রাত তিনটার দিকে ওই বাজারে একটি বড় স্পিডবোটে ১৫ থেকে ২০ জনের ডাকাত দল আসে। ডাকাতেরা স্পিডবোট থেকে পাড়ে নেমে সেখানে থাকা লোকজনদের কাছে নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দেয়। এরপর সেখানে থাকা দুজন বাজার পাহারাদার ও দুজন ব্যবসায়ীর হাত-পা বেঁধে মুঠোফোনসহ সবকিছু কেড়ে নেয়। ঘাট নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর ডাকাত দল কয়েক ভাগে ভাগ হয়ে বাজারের দোকানগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তারা তালা ভেঙে স্বপন কুণ্ডু ও অলোক শীলের সোনার দোকানে এবং মো. আবদুল্লাহর কাপড়ের ও বাসুদেব কুণ্ডুর মুদিদোকান থেকে বিভিন্ন মালামাল লুট করতে শুরু করে। দোকানমালিকেরা জানান, ৪টি দোকান থেকে প্রায় ২৫ লাখ টাকার মালামাল, সোনার গয়না ও অর্থ নিয়ে গেছে ডাকাতেরা।

সোনার দোকানের মালিক স্বপন কুণ্ডু বলেন, ‘আমার দোকানে ২০০ ভরি রুপা, ২ ভরি সোনা ও প্রায় ২৫ হাজার টাকা ছিল। ডাকাতেরা এর সবকিছু লুট করে নিয়ে গেছে। আমার দোকানের প্রায় সাত লাখ টাকার মালামাল তারা নিয়ে গেছে। আমি একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেলাম।’

মুদিদোকানি কার্তিক কুণ্ডু বলেন, ‘২০১৭ সালেও আমাদের দোকানে ডাকাতি হয়েছিল। ওই সময় যেভাবে স্পিডবোটে এসে ডাকাতি হয়েছিল, এবারও ঠিক একই কায়দায় হলো। আমাদের দোকানের তালা ভেঙে ডাকাতেরা অন্তত দুই লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।’

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, এর আগে ২০১৪ সালের ২ মার্চ ও ২০১৭ সালের ৫ মার্চ স্পিডবোটে এসে ডাকাত দল এই বাজারের বিভিন্ন দোকানে ডাকাতি করে। ওই দুই সময়ে ১৫ থেকে ২০টি করে দোকানে ডাকাতি হয়েছিল। সে সময় ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ডাকাতদের ধরে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া গেলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়তো আর হতো না। এ ছাড়া আগের ডাকাতির ঘটনার পর থেকেই বাজারের ব্যবসায়ীরা সেখানে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু ব্যবসায়ীদের সেই দাবি আজও পূরণ হয়নি।

নাকালিয়া বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বাজারটি নদীর ধারে। ডাকাতেরা সহজেই স্পিডবোটে এসে ডাকাতি করে পালিয়ে যায়। আগের ডাকাতির পরও কোনো ব্যবস্থা হয়নি, তাই আবারও একই ঘটনা ঘটল। আমরা দীর্ঘদিন ধরে এখানে একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবিটি আমলে নিচ্ছে না।’

বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম হাবিবুল ইসলাম বলেন, ‘আগের ডাকাতির ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানা নেই। তবে এবারের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এই বাজারে যাতে নিয়মিত পুলিশি টহলের ব্যবস্থা করা যায়, সে বিষয়টি অবশ্যই দেখব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ খতিয়ে দেখছে ভারত’
  • শাকিবের নায়িকা রহস্য
  • ওসির পদায়নও হবে লটারিতে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • চেলসির কাছে পাত্তা পেল না বার্সেলোনা
  • টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের গ্রুপে কারা
  • যশোর প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া, মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ
  • মধ্যরাতে শিক্ষার্থীকে মেসে ডেকে নিয়ে নির্যাতন, প্রতিবাদে সহপাঠীদের অবস্থান
  • জুলাইয়ের হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন
  • রাজশাহীতে পুকুর ভরাট বন্ধে অভিযান, পুনঃখননের উদ্যোগ
  • পাবনার বেড়ায় স্পিডবোটে এসে বাজারে ডাকাতি, আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা