আন্দোলনরত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন।

রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে  সচিবালয়ে তারা বৈঠকে  বসেন। 

বৈঠকে যাওয়া প্রতিনিধিদলে আছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মাঈন উদ্দিন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলওয়ার হোসেন আজিজী, যুগ্ম সদস্য সচিব মো.

রফিকুল ইসলাম, মো. আবু তালেব সোহাগ, আশরাফুজ্জামান হানিফ, অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন, তোফায়েল সরকার, শান্ত ইসলাম, প্রকৌশলী আবুল বাশার, আজিজুর রহমান আজম এবং যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন হেলালী, হাবিবুল্লাহ রাজু ও মো. মিজানুর রহমান।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া দেওয়াসহ তিন দফা দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন তারা।  এ কর্মসূচিতে সারা দেশ থেকে হাজারো শিক্ষক-কর্মচারী অংশ নিয়েছেন। বিপুলসংখ্যক শিক্ষক-কর্মচারীর উপস্থিতির কারণে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। 

গত ৩০ সেপ্টেম্বর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়ার ভাতা ৫০০ টাকা বাড়িয়ে এক হাজার টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা নির্ধারণ করার বিষয়ে সম্মতি দেয় অর্থ বিভাগ। এরপর এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে আপত্তি শুরু হয়। শিক্ষকেরা বলে আসছেন মাত্র ৫০০ টাকা বাড়িভাড়া বৃদ্ধি শিক্ষকদের জন্য ‘লজ্জার বিষয়’। তাঁরা মূল বেতনের অন্তত ২০ শতাংশ হারে (ন্যূনতম তিন হাজার টাকা) বাড়িভাড়া দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

এর আগে ১৩ আগস্ট এক শিক্ষক সমাবেশে শিক্ষা উপদেষ্টা বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বাড়িভাড়া ২০ শতাংশ, চিকিৎসাভাতা ১৫০০ টাকা এবং উৎসবভাতা ৭৫ শতাংশ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে বাস্তবায়নের কোনো অগ্রগতি না থাকায় শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ হন। এর মধ্যে ৫ অক্টোবর শিক্ষক দিবসে অর্থ মন্ত্রণালয় মাত্র ৫০০ টাকা বাড়িভাড়া বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন জারি করলে ক্ষোভ আরো বাড়ে।

ঢাকা/এএএম/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৫০০ ট ক

এছাড়াও পড়ুন:

সম্পদ ও সন্তান লাভের জন্য প্রার্থনা

জীবনের এমন অনেক মুহূর্ত আসে যখন মনে হয়, সবকিছু যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। আয়ের উৎস শুকিয়ে যাওয়া, পরিবারের উদ্বেগ বাড়তে থাকা বা জীবনে বরকতের অভাব—এসব চাপে মানুষের মন ভারী হয়ে ওঠে। ইসলামে এমন সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এমন একটি দোয়া মহানবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর সেবক আনাস ইবনে মালিক (রা.)-এর জন্য করেছিলেন। এই দোয়া শুধু ধন-সম্পদ ও সন্তানের বৃদ্ধি চায় না, বরং সবকিছুতে আল্লাহর বরকত কামনা করে।

দোয়ার উৎস ও প্রেক্ষাপট

হাদিসে বর্ণিত, আনাস (রা.)-এর মা উম্মে সুলাইম নবীজিকে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার এই সেবক আনাসের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।’ তখন নবীজি (সা.) দোয়া করেন: ‘আল্লাহুম্মা আকসির মালাহু ওয়া ওয়ালাদাহু, ওয়া বারিক লাহু ফীমা আ'তাইতাহু।’

এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং পৌত্রাদি মিলিয়ে তিনি ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।আরও পড়ুনতাকওয়া মুমিনের সবচেয়ে বড় সম্পদ৩০ জুন ২০২৫

অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তার ধন-সম্পদ ও সন্তান বাড়িয়ে দাও এবং তুমি যা দান করেছ, তাতে তার জন্য বরকত দান করো। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৩৪৪)

আনাস (রা.) তখন মাত্র দশ বছরের একটি ছেলে, যিনি নবী (সা.)-এর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং তাঁর তিনি পৌত্রাদি মিলিয়ে ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন (সহিহ মুসলিম থেকে বর্ণিত)। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।

দোয়ার উদ্দেশ্য শুধু ধন নয়, বরকত

এই দোয়ার সৌন্দর্য এতে যে এটি ধন-সম্পদের পাশাপাশি বরকতের জন্য প্রার্থনা করে। ইসলামে ধনকে শুধু সঞ্চয় নয়, বরং আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে দেখা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯)

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে ধর্মের দাবি১৯ মে ২০২৫ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯

আধুনিক জীবনে এর প্রাসঙ্গিকতা আরও বেশি। অর্থনৈতিক সংকট, চাকরির অনিশ্চয়তা বা পরিবারের চাপে অনেকে কষ্ট পান। কিন্তু এই দোয়া স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সত্যিকারের সমৃদ্ধি আল্লাহর রহমতে। সন্তানের ক্ষেত্রেও তাই—সন্তান লাভের সঙ্গে তাদের সুস্থতা, শান্তি ও ইমানের বরকত চাওয়া জরুরি।

আজকের দিনে, যখন পরিবারের আকার ছোট হচ্ছে এবং অর্থের চাপ বাড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধর্মীয় অনুশীলন (যেমন দোয়া) মানসিক চাপ কমায় এবং জীবনে ইতিবাচকতা বাড়ায়। ইসলামি ঐতিহ্যে এই দোয়া শুধু ব্যক্তিগত নয়, পরিবারের জন্যও ব্যবহার করা যায়।

দোয়ার সঙ্গে সদকা দেওয়া, কোরআন তিলাওয়াত এবং হালাল উপার্জনের চেষ্টা করুন—এগুলো বরকতের দরজা খোলে।

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ