জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, “রাস্তায় শিক্ষকদের যেভাবে পেটানো হয়েছে, এটি কোনো সভ্য রাষ্ট্রীয় চরিত্র হতে পারে না। অনতিবিলম্বে এই হীন কাজের জন্য সরকারকে ক্ষমা চাইতে হবে। যাদের গ্রেপ্তার করেছেন, তাদের দ্রুত ছেড়ে দিতে হবে।”

রবিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের অবস্থান কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করে তিনি এসব কথা বলেন।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “আমি যদি শিক্ষকদের প্রথম শ্রেণির নাগরিক না করি, তাহলে কীভাবে প্রত্যাশা করি, তারা প্রথম শ্রেণির নাগরিক গড়ে তুলবেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা ছিল, তারা পুরনো পথে হাঁটবে না, বরং তারা হবে শিক্ষাবান্ধব সরকার। কিন্তু আমরা দেখলাম, এই সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা হয়েছেন প্রমোশনবান্ধব সরকার। এই সরকারের প্রধান কাজ হলো পোস্টিং দেওয়া। হাসিনার আমলে যারা রাস্তায় এসে তার পক্ষে স্লোগান দিয়েছিল অর্থের বিনিময়ে তাদের পদায়ন অব্যাহত আছে।”

তিনি বলেন, “অত্যন্ত দুঃখের বিষয়— আমাদের দেশের শিক্ষক যারা আছেন, তারা ১২ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে অনেকে চাকরি শুরু করেন। আমার পরিচিত একজন শিক্ষক আছেন, ৩২ বছর ধরে চাকরি করেন। এই সময় পরে ওনার বেতন হয়েছে ২২ হাজার টাকা। এক কেজি ইলিশ মাছের দাম ২ হাজার ৮০০ টাকা। বেতনের ২০ শতাংশও বাড়িভাড়া দেওয়া হয় না।”

এনসিপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, “বিদেশে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত হচ্ছে শিক্ষা। আর বাংলাদেশে সবার খাওয়া-দাওয়া শেষ করে যদি কিছু থাকে, তাহলে তা শিক্ষকদের দেওয়া হয়। শিক্ষকদের বেতন না দিয়ে আন্তর্জাতিক মানের পড়াশোনা আশা করা রাষ্ট্রীয় প্রহসন। শিক্ষকদের সব সময় পরিপাটি হয়ে সমাজে থাকতে হয়। অন্য মানুষের মতো তারা থাকে না, কারণ শিক্ষকরা সমাজে উদাহরণ। কিন্তু, তাদের বেতন মাসে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। পরিপাটি-ফিটফাট থাকলেও মাসের শেষ দশ দিন শিক্ষকদের হীনমন্যতা নিয়ে চলতে হয়।”

স্বাস্থ্য উপদেষ্টার উদ্দেশে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “স্বাস্থ্য উপদেষ্টা যখন অসুস্থ হন, তখন তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিতে গেলেন। অথচ, তার উচিত ছিল দেশের মানুষ যেখানে চিকিৎসা নেয়, সেখানে চিকিৎসা নেওয়া। নির্লজ্জের মতো তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিতে গিয়েছেন।”

ঢাকা/রায়হান/রফিক 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষকদ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সম্পদ ও সন্তান লাভের জন্য প্রার্থনা

জীবনের এমন অনেক মুহূর্ত আসে যখন মনে হয়, সবকিছু যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। আয়ের উৎস শুকিয়ে যাওয়া, পরিবারের উদ্বেগ বাড়তে থাকা বা জীবনে বরকতের অভাব—এসব চাপে মানুষের মন ভারী হয়ে ওঠে। ইসলামে এমন সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এমন একটি দোয়া মহানবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর সেবক আনাস ইবনে মালিক (রা.)-এর জন্য করেছিলেন। এই দোয়া শুধু ধন-সম্পদ ও সন্তানের বৃদ্ধি চায় না, বরং সবকিছুতে আল্লাহর বরকত কামনা করে।

দোয়ার উৎস ও প্রেক্ষাপট

হাদিসে বর্ণিত, আনাস (রা.)-এর মা উম্মে সুলাইম নবীজিকে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার এই সেবক আনাসের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।’ তখন নবীজি (সা.) দোয়া করেন: ‘আল্লাহুম্মা আকসির মালাহু ওয়া ওয়ালাদাহু, ওয়া বারিক লাহু ফীমা আ'তাইতাহু।’

এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং পৌত্রাদি মিলিয়ে তিনি ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।আরও পড়ুনতাকওয়া মুমিনের সবচেয়ে বড় সম্পদ৩০ জুন ২০২৫

অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তার ধন-সম্পদ ও সন্তান বাড়িয়ে দাও এবং তুমি যা দান করেছ, তাতে তার জন্য বরকত দান করো। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৩৪৪)

আনাস (রা.) তখন মাত্র দশ বছরের একটি ছেলে, যিনি নবী (সা.)-এর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং তাঁর তিনি পৌত্রাদি মিলিয়ে ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন (সহিহ মুসলিম থেকে বর্ণিত)। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।

দোয়ার উদ্দেশ্য শুধু ধন নয়, বরকত

এই দোয়ার সৌন্দর্য এতে যে এটি ধন-সম্পদের পাশাপাশি বরকতের জন্য প্রার্থনা করে। ইসলামে ধনকে শুধু সঞ্চয় নয়, বরং আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে দেখা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯)

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে ধর্মের দাবি১৯ মে ২০২৫ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯

আধুনিক জীবনে এর প্রাসঙ্গিকতা আরও বেশি। অর্থনৈতিক সংকট, চাকরির অনিশ্চয়তা বা পরিবারের চাপে অনেকে কষ্ট পান। কিন্তু এই দোয়া স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সত্যিকারের সমৃদ্ধি আল্লাহর রহমতে। সন্তানের ক্ষেত্রেও তাই—সন্তান লাভের সঙ্গে তাদের সুস্থতা, শান্তি ও ইমানের বরকত চাওয়া জরুরি।

আজকের দিনে, যখন পরিবারের আকার ছোট হচ্ছে এবং অর্থের চাপ বাড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধর্মীয় অনুশীলন (যেমন দোয়া) মানসিক চাপ কমায় এবং জীবনে ইতিবাচকতা বাড়ায়। ইসলামি ঐতিহ্যে এই দোয়া শুধু ব্যক্তিগত নয়, পরিবারের জন্যও ব্যবহার করা যায়।

দোয়ার সঙ্গে সদকা দেওয়া, কোরআন তিলাওয়াত এবং হালাল উপার্জনের চেষ্টা করুন—এগুলো বরকতের দরজা খোলে।

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ