‘ডাকসু ক্যাফেটেরিয়া’ বলে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলাভবন ক্যাফেটেরিয়াতে ২০ টাকার খাবারের (তেহারি/খিঁচুড়ি) সঙ্গে মেনুতে পরীক্ষামূলকভাবে নতুন তিনটি প্যাকেজ যুক্ত করা হয়েছে। ভর্তুকি দিয়ে এসব প্যাকেজগুলোর দাম কমানোর দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।

প্যাকেজগুলো হচ্ছে ভাত-সবজি-মুরগীর মাংস-ডাল (৫৫ টাকা), ভাত-সবজি-ডিম-ডাল (৪০ টাকা) এবং ভাত-সবজি-ডাল (২৫ টাকা)। 

আরো পড়ুন:

৫ দা‌বি‌তে দুই দিনের নতুন কর্মসূ‌চি জামায়া‌তের

চাকসু নির্বাচন: ১১৬২ মনোনয়নপত্র বিতরণ

সোমবার (১৩ অক্টোবর) সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মোজাম্মেল হক ও আকাশ আলী এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই কলা ভবন এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীদের খাবারের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ক্লাসের ফাঁকে দুপুরে আশেপাশে কোথাও ভালো খাবার পাওয়া যায় না। অনাবাসিক নারী শিক্ষার্থীরা আরো বেশি সমস্যায় পড়েন। কারণ হলের ক্যান্টিনগুলোতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের ঢোকার সুযোগ নেই। কলাভবন ক্যাফেটেরিয়ার ২০ টাকায় যে খাবার দেওয়া হয়, এর পরিমাণ খুবই অল্প। এটা খেয়ে একবেলা কাটানো কষ্টসাধ্য। খাবারের এই নতুন তিনটি আইটেম যুক্ত করাটা নিঃসন্দেহে দরকারি উদ্যোগ।

বিবৃতিতে তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল– ভর্তুকি দিয়ে সুলভ মূল্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টিমান সম্পন্ন খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। সম্প্রতি তিনটি প্যাকেজের মাধ্যমে অনেকটা মানসম্মত খাবার নিশ্চিত হয়েছে। কিন্তু সুলভ মূল্য নিশ্চিত করা হয়নি। এতে ভর্তুকি দেওয়া হয়নি। এর থেকে কম দামে প্রায় কাছাকাছি মানের খাবার হলের ইজারাভিত্তিক ক্যান্টিন বা দোকানেও পাওয়া যায়।

এই ক্যাফেটেরিয়াটি তো প্রশাসনিক তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। এখানে রুম ভাড়া, কর্মচারীর বেতন ইত্যাদি আনুষঙ্গিক খরচ বিশ্ববিদ্যালয়ই বহন করে। ইজারাদার লাভ করেন, ব্যবসা করেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তো আর ব্যবসায়ী নন, তাদের লাভ করার প্রশ্ন আসে না। প্রশাসনের পক্ষে, ভর্তুকি নিশ্চিত করে কম দামে এই খাবারের ব্যবস্থা করা সম্ভব। ২০ টাকা দামের খাবারের পরিমাণ যেহেতু খুবই অল্প, তাই নতুন প্যাকেজের খাবার স্থায়ীভাবে পরিবেশিত হলে ধীরে ধীরে এই বেশি দামের খাবার খেতে হাজার হাজার শিক্ষার্থী বাধ্য হবে।

নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে আরো যুক্ত করেন, শিক্ষার্থীদের অনেকেই টিউশন করে পড়াশোনার খরচ যোগাড় করেন। শিক্ষার আনুষঙ্গিক খরচ দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই বর্ধিত খরচ বহন করতে হিমশিম খাচ্ছে। এর ওপর খাবারের খরচ বাড়লে তা শিক্ষার্থীদের জন্যে নতুন ভোগান্তি সৃষ্টি করবে।

প্রশাসনের প্রতি আহ্বান– কলা ভবন ক্যাফেটেরিয়াতে পরীক্ষামূলকভাবে চলমান খাবারে ভর্তুকি দিয়ে সুলভ মূল্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টিমান সম্পন্ন খাবারের ব্যবস্থা করুন। শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানাই– আপনারা এই যৌক্তিক দাবিতে ঐক্যবদ্ধভাবে সোচ্চার হন।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ বব দ য র ব যবস ভর ত ক পর ম ণ

এছাড়াও পড়ুন:

জাবিতে হলের নির্মাণ খরচের নথিপত্র চেয়ে প্রকল্প কার্যালয়ে তালা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) নির্মিত ছয়টি আবাসিক হলের নির্মাণকাজের সব খরচের নথিপত্র দেওয়ার দাবিতে প্রকল্প কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো প্রশাসনিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় প্রকল্প কার্যালয়ের ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন জাকসুর দুজন প্রতিনিধিসহ ছয়টি হলের সংসদের প্রতিনিধিরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ পায় বিশ্ববিদ্যালয়। এই প্রকল্পের আওতায় ১০ তলাবিশিষ্ট ছয়টি হল নির্মাণ করা হয়। ২০২৩ সালে এসব হল উদ্বোধন করা হয়।

নির্মিত আবাসিক হলগুলো নিয়ে প্রকল্পের শুরু থেকেই ডিপিপি জালিয়াতি, তৎকালীন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকে অর্থ প্রদান, অব্যবস্থাপনাসহ আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ছিল।

সম্প্রতি ভূমিকম্পের পর নতুন হলগুলোর দেয়ালে ফাটল ও বিভিন্ন ফ্লোরে পলেস্তারা খসে পড়ার ঘটনায় নতুন করে দুর্নীতির বিষয়টি সামনে আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে হলের নির্মাণ খরচের নথিপত্র চেয়ে প্রকল্প কার্যালয়ে তালা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ, হলভবনের নিরাপত্তা এবং শিক্ষার্থীদের জীবনের প্রশ্নে কোনো তথ্য গোপন করা চলবে না। দায়িত্বপ্রাপ্তরা হলের নির্মাণ খরচের নথিপত্র প্রকাশ করলে তবেই প্রকল্প অফিসের তালা খোলা হবে।

তাদের দাবি, প্রকল্পের সয়েল টেস্ট রিপোর্ট, স্ট্রকচারাল ডিজাইন, অথরিটি অ্যাপ্রুভাল শিট, আর্থিক হিসেব, ফেজ ওয়ানের ডিপিপি শিডিউল, কনস্ট্রাকশন শিডিউল, কনস্ট্রাকশন কোম্পানির ডিটেইলস, তদারক কমিটির তালিকা, টেন্ডার দরপত্রের তথ্য পাবলিক করতে হবে।

এ বিষয়ে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হল সংসদের ভিপি সিফাতুল্লাহ বলেন, ‘‘সকাল থেকে বিক্ষোভ করলেও সাড়ে ৪ ঘণ্টা পরে পিডি দাবি শুনতে আসেন। এটা খুবই দুঃখজনক। ভূমিকম্প হয়ে গেছে বেশ কিছুদিন। এখন পর্যন্ত তারা দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা যখন নির্মাণ খরচের নথিপত্রের জন্য এসেছি। তারা বিলম্ব করছে। এতেই বোঝা যাচ্ছে, প্রশাসন কিছু ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।’’

ঢাকা/আহসান/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ