লুইস দিয়াস একাই যেন পুরো নাটকের নায়ক। দুই গোল করে দলকে এগিয়ে নেওয়া, তারপর লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ার পরও বায়ার্ন মিউনিখকে শেষ পর্যন্ত জয়ের পথেই রেখেছেন তিনি। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে ১০ জনের দল নিয়েও পার্ক দে প্রিন্সে জার্মান জায়ান্টরা ২-১ গোলে হারিয়েছে প্যারিস সেন্ট জার্মেইনকে (পিএসজি)।

দিয়াসের জোড়া গোলেই বায়ার্ন নিয়ন্ত্রণে ছিল ম্যাচের প্রথমার্ধজুড়ে। কিন্তু প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগেই তার বিতর্কিত লাল কার্ডে পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়ে। দ্বিতীয়ার্ধে পিএসজি বদলি খেলোয়াড় জোয়াও নেভেসের গোলে ব্যবধান কমালেও দৃঢ় রক্ষণ আর দারুণ শৃঙ্খলায় ম্যাচের বাকি সময়টা সামলে নেয় বায়ার্ন। এই জয়ের ফলে টানা ১৬ ম্যাচ অপরাজিত থেকে মৌসুমের দুর্দান্ত ধারাবাহিকতা ধরে রাখল তারা।

গোলের ব্যবধানে আর্সেনালকে পিছনে ফেলে তালিকার শীর্ষে উঠেছে বায়ার্ন মিউনিখ। অন্যদিকে পিএসজি পেয়ে গেল এ মৌসুমে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় তাদের প্রথম পরাজয়ের স্বাদ। মোটেও সুখকর নয় তাদের জন্য। 

ম্যাচের শুরুটাই ছিল বায়ার্নের ঝড়ো। চতুর্থ মিনিটেই সার্জ গনাব্রির চমৎকার ব্যাকফ্লিক পাসে বল পেয়ে মাইকেল ওলিসে গোলমুখে ছুটে যান। তার শট ঠেকান পিএসজি গোলরক্ষক লুকাস শেভালিয়ে। কিন্তু ফিরতি বল ঠেকাতে পারেননি। দিয়াস বুলেটগতিতে শট নিয়ে গোল করেন। মৌসুমের নবম গোলটা তখন তার নামের পাশে লেখা হয়ে যায়।

এরপর বায়ার্নের আত্মবিশ্বাস যেন আরও বেড়ে যায়। পিএসজি বারবার বল হারায়, ছন্দ খুঁজে পায় না। একসময় ভিএআরের সিদ্ধান্তে ওসমান ডেম্বেলের গোল বাতিল হয় অফসাইডের কারণে। সেই হতাশার মধ্যেই ৩২তম মিনিটে আবারও বাজিমাত দেন দিয়াস। মারকিনিয়োসকে বল থেকে বঞ্চিত করে বিদ্যুৎগতিতে ডি-বক্সে ঢুকে ডান পায়ে দারুণ শটে জালের নিচের কোণা দিয়ে বল জালে জড়ান (২-০)!

বিরতির আগেই আরও গোল পেতে পারত বায়ার্ন। ইয়োসিপ স্টানিশিচের গোল অফসাইডে বাতিল হয়। আর জোশুয়া কিমিখের দূরপাল্লার শট সামান্য বাইরে দিয়ে যায়।

তবু নাটক তখনও বাকি। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের সপ্তম মিনিটে আশরাফ হাকিমির ওপর ট্যাকলের জন্য দিয়াসকে প্রথমে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। পরে ভিএআরের পরামর্শে দেখেন মনিটরে রিপ্লে, সিদ্ধান্ত বদলে হলুদ নয়, সরাসরি লাল কার্ড দেন! মাঠ ছাড়েন দিয়াস। আর ম্যাচে নতুন মাত্রা যোগ হয়। 

দ্বিতীয়ার্ধে ১০ জন নিয়ে বায়ার্ন নামলে খেলার গতি কিছুটা কমিয়ে দেয় তারা। পিএসজি তখন আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু বল দখলে আধিপত্য পেলেও তারা তেমন সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না। ৬৫তম মিনিটে খভিচা কভারাটসখেলিয়ার নিচু শট সহজেই ধরেন ম্যানুয়েল নয়ার। কিছুক্ষণ পর ভিতিনহার শটও ফিরিয়ে দেন এই জার্মান গোলরক্ষক।

অবশেষে ৭৪তম মিনিটে পিএসজি গোল পায়। লি কাং-ইনের নিখুঁত ক্রস থেকে নেভেসের হেডে বল জড়ায় জালে। কিন্তু বাকি সময়টা বায়ার্নের রক্ষণভাগ ছিল পাথরের মতো দৃঢ়। শেষ মুহূর্তে আরও একবার কাছাকাছি এসেছিল পিএসজি। কিন্তু নেভেসের হেড সামান্য বাইরে দিয়ে গেলে শেষ হয় তাদের সব আশা। 

শেষ বাঁশি বাজতেই বায়ার্ন খেলোয়াড়রা যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচে। লাল কার্ড, চাপ, আর শীর্ষ প্রতিপক্ষ; সব সামলে তারা দেখিয়ে দিল কেন এখনো ইউরোপের সবচেয়ে ভয়ংকর দলগুলোর একটি তারা।

ঢাকা/আমিনুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প এসজ প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

১০ জন নিয়েও চ্যাম্পিয়ন পিএসজিকে হারাল বায়ার্ন

লুইস দিয়াস একাই যেন পুরো নাটকের নায়ক। দুই গোল করে দলকে এগিয়ে নেওয়া, তারপর লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ার পরও বায়ার্ন মিউনিখকে শেষ পর্যন্ত জয়ের পথেই রেখেছেন তিনি। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে ১০ জনের দল নিয়েও পার্ক দে প্রিন্সে জার্মান জায়ান্টরা ২-১ গোলে হারিয়েছে প্যারিস সেন্ট জার্মেইনকে (পিএসজি)।

দিয়াসের জোড়া গোলেই বায়ার্ন নিয়ন্ত্রণে ছিল ম্যাচের প্রথমার্ধজুড়ে। কিন্তু প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগেই তার বিতর্কিত লাল কার্ডে পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়ে। দ্বিতীয়ার্ধে পিএসজি বদলি খেলোয়াড় জোয়াও নেভেসের গোলে ব্যবধান কমালেও দৃঢ় রক্ষণ আর দারুণ শৃঙ্খলায় ম্যাচের বাকি সময়টা সামলে নেয় বায়ার্ন। এই জয়ের ফলে টানা ১৬ ম্যাচ অপরাজিত থেকে মৌসুমের দুর্দান্ত ধারাবাহিকতা ধরে রাখল তারা।

গোলের ব্যবধানে আর্সেনালকে পিছনে ফেলে তালিকার শীর্ষে উঠেছে বায়ার্ন মিউনিখ। অন্যদিকে পিএসজি পেয়ে গেল এ মৌসুমে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় তাদের প্রথম পরাজয়ের স্বাদ। মোটেও সুখকর নয় তাদের জন্য। 

ম্যাচের শুরুটাই ছিল বায়ার্নের ঝড়ো। চতুর্থ মিনিটেই সার্জ গনাব্রির চমৎকার ব্যাকফ্লিক পাসে বল পেয়ে মাইকেল ওলিসে গোলমুখে ছুটে যান। তার শট ঠেকান পিএসজি গোলরক্ষক লুকাস শেভালিয়ে। কিন্তু ফিরতি বল ঠেকাতে পারেননি। দিয়াস বুলেটগতিতে শট নিয়ে গোল করেন। মৌসুমের নবম গোলটা তখন তার নামের পাশে লেখা হয়ে যায়।

এরপর বায়ার্নের আত্মবিশ্বাস যেন আরও বেড়ে যায়। পিএসজি বারবার বল হারায়, ছন্দ খুঁজে পায় না। একসময় ভিএআরের সিদ্ধান্তে ওসমান ডেম্বেলের গোল বাতিল হয় অফসাইডের কারণে। সেই হতাশার মধ্যেই ৩২তম মিনিটে আবারও বাজিমাত দেন দিয়াস। মারকিনিয়োসকে বল থেকে বঞ্চিত করে বিদ্যুৎগতিতে ডি-বক্সে ঢুকে ডান পায়ে দারুণ শটে জালের নিচের কোণা দিয়ে বল জালে জড়ান (২-০)!

বিরতির আগেই আরও গোল পেতে পারত বায়ার্ন। ইয়োসিপ স্টানিশিচের গোল অফসাইডে বাতিল হয়। আর জোশুয়া কিমিখের দূরপাল্লার শট সামান্য বাইরে দিয়ে যায়।

তবু নাটক তখনও বাকি। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের সপ্তম মিনিটে আশরাফ হাকিমির ওপর ট্যাকলের জন্য দিয়াসকে প্রথমে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। পরে ভিএআরের পরামর্শে দেখেন মনিটরে রিপ্লে, সিদ্ধান্ত বদলে হলুদ নয়, সরাসরি লাল কার্ড দেন! মাঠ ছাড়েন দিয়াস। আর ম্যাচে নতুন মাত্রা যোগ হয়। 

দ্বিতীয়ার্ধে ১০ জন নিয়ে বায়ার্ন নামলে খেলার গতি কিছুটা কমিয়ে দেয় তারা। পিএসজি তখন আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু বল দখলে আধিপত্য পেলেও তারা তেমন সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না। ৬৫তম মিনিটে খভিচা কভারাটসখেলিয়ার নিচু শট সহজেই ধরেন ম্যানুয়েল নয়ার। কিছুক্ষণ পর ভিতিনহার শটও ফিরিয়ে দেন এই জার্মান গোলরক্ষক।

অবশেষে ৭৪তম মিনিটে পিএসজি গোল পায়। লি কাং-ইনের নিখুঁত ক্রস থেকে নেভেসের হেডে বল জড়ায় জালে। কিন্তু বাকি সময়টা বায়ার্নের রক্ষণভাগ ছিল পাথরের মতো দৃঢ়। শেষ মুহূর্তে আরও একবার কাছাকাছি এসেছিল পিএসজি। কিন্তু নেভেসের হেড সামান্য বাইরে দিয়ে গেলে শেষ হয় তাদের সব আশা। 

শেষ বাঁশি বাজতেই বায়ার্ন খেলোয়াড়রা যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচে। লাল কার্ড, চাপ, আর শীর্ষ প্রতিপক্ষ; সব সামলে তারা দেখিয়ে দিল কেন এখনো ইউরোপের সবচেয়ে ভয়ংকর দলগুলোর একটি তারা।

ঢাকা/আমিনুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ