দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রামের একটি বাড়ির শোবার ঘর থেকে সীমা আক্তার (২৭) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার সকালে উপজেলার খট্টা মাধবপাড়া ইউনিয়নের সাতকুড়ি গ্রাম থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

মৃত সীমা আক্তার ওই গ্রামের রমিন ইসলামের স্ত্রী। তাঁর সাত ও দেড় বছর বয়সী দুটি সন্তান আছে। স্বামী রমিন ইসলাম রাজধানী ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। পারিবারিক কলহের জেরে গতকাল শনিবার রাতে দোলনার শিকলে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি ‘আত্মহত্যা’ করেছেন বলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানিয়েছেন। তবে সীমার স্বজনদের দাবি, তাঁকে হত্যার পর মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়।

পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মৃতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জেরে গতকাল রাতে সীমার সঙ্গে তাঁর শাশুড়ি রোকেয়া বেগমের ঝগড়া হয়। পরে রাতের খাবার না খেয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে নিজের ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন সীমা। আজ সকালে মেয়ে মরিয়মের (৭) ঘুম ভেঙে গেলে সে মাকে বিছানায় দেখতে না পেয়ে খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে লাগানো দোলনায় ওড়না পেঁচিয়ে মাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় সে। তখন চিৎকার দিয়ে ঘরের দরজা খুলে দাদা-দাদিকে ডাক দেয়। পরে দাদা-দাদি ঘরে ঢুকে সীমাকে মৃত অবস্থায় ঝুলে থাকতে দেখেন।

তবে সীমা আক্তারের স্বজনেরা দাবি করেছেন, তিন দিন ধরে সীমার সঙ্গে তাঁর শাশুড়ির ঝগড়া হয়। বাড়ির সামনে রাস্তায় ফেলে মারধরও করেছেন। মারধর করে আগে একবার হাত ভেঙে দিয়েছিলেন। গতকাল রাতে ঝগড়ার পর আজ সীমাকে হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়। তাঁরা সীমার শাশুড়িকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হক বলেন, আজ সকালে উপজেলার সাতকুড়ি গ্রাম থেকে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক সুরতহালে তাঁর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য দুপুরে মরদেহ দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর হত্যা নাকি আত্মহত্যা, সেটা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

মাতৃস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণে নারায়ণগঞ্জ ডিসির কার্যকর উদ্যোগ

নারায়ণগঞ্জ জেলা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল ডায়াথার্মি মেশিন নষ্ট থাকায় সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ হয়ে যায়। এত বিপাকে পড়ে হাসপাতালে আগত রোগীরা এবং ব্যাহত হয় চিকিৎসা সেবা।

বিষয়টি গত ৫ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় উপস্থাপন করেন উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, এখানে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির পাশাপাশি প্রতি মাসে প্রায় ৪০০ গর্ভবতী নারীর সেবা, ৩০টি স্বাভাবিক প্রসব এবং ৪ থেকে ৫টি সিজারিয়ান সেকশন পরিচালিত হয়।

পরে সমস্যার গুরুত্ব অনুধাবন করে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা জেলা পরিষদ থেকে দ্রুততম সময়ে একটি ডায়াথার্মি মেশিন উপহার হিসেবে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের হাতে এ মেশিন তুলে দেন। এ উদ্যোগের মাধ্যমে জেলার মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবার মান আরও উন্নত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন জেলা প্রশাসক। 

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, মায়ের স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে সন্তানের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে না। তাই মাতৃস্বাস্থ্যের প্রতি সবসময় বিশেষ গুরুত্ব দিই; ভবিষ্যতেও দেব।

স্বাস্থ্যকর্মীদের তিনি অনুরোধ জানান, মায়েদের অনেকেই অসহায় ও অশিক্ষিত। তাদের প্রতি আন্তরিকতা দেখিয়ে কাজ করবেন, যেন তাদের স্বাস্থ্যসেবা কোনোভাবেই ঝুঁকির মধ্যে না পড়ে।

তিনি আরও জানান, কেন্দ্রের চাহিদা অনুযায়ী গ্লুকোমিটার ও রক্তচাপ মেশিনও দ্রুত সরবরাহ করা হবে। 

এসময় উপস্থিত ছিলেন, সিভিল সার্জন ডা. এ এফ এম মুশিউর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: আলমগীর হোসেন, নারায়ণগঞ্জ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: শহিদুল ইসলাম, সদর পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো: বোরহান উদ্দিন, এমসিএইচএফপি সদরের মেডিকেল অফিসার ডা. জাফরিন যুবাইয়া সুরভী, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু ও জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাও. মঈনুদ্দিন আহমেদসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিবৃন্দ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ