বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাইতংয়ে ইটভাটা উচ্ছেদে অভিযানে যাওয়ার পথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ইটভাটার শ্রমিকসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, বিজিবির ওপর হামলা এবং ট্রাকসহ ৬টি গাড়িও ভাঙচুর হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল নয়টার দিকে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের মানিকপুর সড়কে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়। ওই সময় ইটভাটার শ্রমিকেরা ওই সড়কে এসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বাধা দেন। এসব নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে বাহিনীর সদস্যদের সংঘর্ষ হয়। বেলা দেড়টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত অভিযান না চালিয়েই ফিরে আসে পরিবেশ অধিদপ্তর।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাইতং ও চকরিয়া উপজেলার মানিকপুর এলাকায় অন্তত ৩১টি অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় আইন না মেনেই নির্মাণ করায় পরিবেশ অধিদপ্তর এসব ভাটা উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজওয়ান উল ইসলাম ও লামা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুবায়েত আহমেদের নেতৃত্বে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান শুরু করে। তবে চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের বাদশার টেক এলাকায় পৌঁছালে ইটভাটার শ্রমিকেরা জড়ো হয়ে বাধা দেন।

শ্রমিকেরা সড়কে শুয়ে ইটভাটা উচ্ছেদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এ সময় সেনাবাহিনী, র‍্যাব, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে চাইলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে বিজিবি ও পুলিশের ৭-৮ জন ও ১২-১৩ জন শ্রমিক আহত হন। এ ঘটনায় ইটভাটার ৮ শ্রমিককে আটক করা হয়েছে।

শ্রমিকদের দাবি, ফাইতং এলাকার ইটভাটা ভেঙে ফেললে ১০ থেকে ১৫ হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়বেন। তাই শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।

জানতে চাইলে লামা উপজেলার সহকারী ম্যাজিস্ট্রেট রুবায়েত আহমেদ বলেন, ইটভাটার মালিক ও শ্রমিকেরা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা করেছেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ি ভাঙচুর করেছেন। এতে অনেকে আহত হয়েছেন। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: রক ষ ক র ইটভ ট র উপজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

ধানমন্ডি ৩২ নম্বর–সংলগ্ন মিরপুর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক, সতর্ক অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়ের দিন রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙতে গিয়েছিলেন একদল বিক্ষোভকারী। সেনাবাহিনী ও পুলিশ তাঁদের বাধা দিয়েছে। এ নিয়ে সেখানে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ওই এলাকাসংলগ্ন মিরপুর সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে দিনভর সংঘর্ষের পর অবশেষে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।

আজ সোমবার রাত আটটার পর মিরপুর থেকে নিউমার্কেটগামী সড়কটি খুলে দেওয়া হয়। আর রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিউমার্কেট থেকে মিরপুরগামী সড়কটি খুলে দেওয়া হয়।

সরেজমিন দেখা যায়, মিরপুর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হলেও ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এলাকায় বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর বাড়ির সামনের সড়কটিতে ছোট ছোট ইটের টুকরো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তবে বিক্ষোভকারীদের কাউকে দেখা যায়নি। পরে রাত ১১টার দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সড়ক পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। সড়কটির প্রবেশমুখে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। সড়কটি দিয়ে কাউকে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি এলাকাটিতে বিজিবির বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছেন।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের ধানমন্ডি অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার জিসানুল হক রাতে ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বিক্ষোভকারীদের সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে দিয়েছি। যান চলাচল শুরু হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। তবে রাতেও পুলিশের সতর্ক অবস্থান থাকবে।’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গতকাল জুলাই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ড হয়। সাবেক আইজিপি (পুলিশ মহাপরিদর্শক) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের হয় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড (তিনি রাজসাক্ষী বা অ্যাপ্রুভার ছিলেন)।

এ রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রোববার দিবাগত রাত থেকেই বিভিন্ন দল, সংগঠন, প্ল্যাটফর্ম ও ব্যক্তি পৃথক কর্মসূচি ঘোষণা করে। এর মধ্যে অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের ওই বাড়িটি ভাঙার ঘোষণা দেন। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে শেখ হাসিনার ভাষণ দেওয়াকে কেন্দ্র করে বাড়িটির অর্ধেকের বেশি অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাড়িটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

রাত ১০টার পর নিউমার্কেট-মিরপুর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লামায় ইটভাটায় অভিযানকালে সংঘর্ষ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ আহত
  • এবার কান্দিরপাড়ে পাশাপাশি কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি বিএনপির দুই পক্ষের
  • আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নে দৃশ্যমান পদক্ষেপ চাই
  • ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • ধানমন্ডি ৩২ নম্বর–সংলগ্ন মিরপুর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক, সতর্ক অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
  • ধানমন্ডি ৩২: সাউন্ড গ্রেনেড ফাটার পর ছত্রভঙ্গ বিক্ষোভকারীরা
  • সরকারের প্রস্তুতি ভালো থাকায় নাশকতা হয়নি
  • ‘৩২ নম্বর ধূলিসাৎ না করা পর্যন্ত ফিরব না’
  • শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়: গোপালগঞ্জে মিছিল, সড়ক অবরোধের চেষ্টা