চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাজারে বাসের চাপায় প্রাণ হারিয়েছে ৮ বছর বয়সী শিশু মার্জিয়া ও তার নানি নাজমা বেগম (৪৫)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে হাজীগঞ্জ পশ্চিম বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত মার্জিয়া লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বিগা ডালি গ্রামের প্রবাসী মানিকের মেয়ে। তার নানি নাজমা বেগম ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৩ নম্বর সুবিদপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর বড় হাজিবাড়ির মনির হোসেনের স্ত্রী।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঢাকা থেকে চাঁদপুরগামী ‘পদ্মা’ পরিবহনের একটি বাস বেপরোয়া গতিতে এসে পথচারী নানি-নাতনিকে চাপা দেয়। স্থানীয় লোকজন দ্রুত তাঁদের উদ্ধার করে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে মারা যায় মার্জিয়া। পরে নানিকে কুমিল্লা নেওয়ার পথে তিনিও মারা যান।

বাসটির এক যাত্রী বলেন, কুমিল্লা বিশ্বরোড থেকে ছাড়ার পরই চালক দ্রুতগতিতে বাস চালাচ্ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে পুরো পথে চালকের সঙ্গে যাত্রীদের তর্ক-বিতর্ক হয়। দুর্ঘটনার মুহূর্তেও তিনি যাত্রীদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় লিপ্ত ছিলেন। ওই সময়েই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি দুর্ঘটনায় পড়ে। পরে উত্তেজিত জনতা বাসটি আটক করে চালককে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

আটক চালক শাহরাস্তির আলীপুর গ্রামের আবদুল জব্বারের ছেলে আবদুল হান্নান। হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, বাসের চালককে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঈশ্বরদীতে হামলার ঘটনায় বিবৃ‌তি দিয়েছেন বিএন‌পি

‘পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্বাচনী প্রচারণাকালে বিএনপি নেতাকর্মী ও নিরীহ সাধারণ জনতার উপর স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর অস্ত্রধারী কর্মীরা প‌রিক‌ল্পিত হামলা করেছেন’ উল্লেখ ক‌রে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানি‌য়ে‌ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।

বৃহস্প‌তিবার (২৭ নভেম্বর) রা‌তে দল‌টির সি‌নিয়র যুগ্ম মহাস‌চিব অ‌্যাড‌ভো‌কেট রুহুল ক‌বির রিজভী স্বাক্ষ‌রিত এক বিবৃ‌তি‌তে বলা হয়, “ঈশ্বরদীতে নির্বাচনী প্রচারণাকালে বিএনপি নেতাকর্মী ও নিরীহ সাধারণ জনতার উপর স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর অস্ত্রধারী কর্মীরা পরিকল্পিত হামলা চা‌লি‌য়ে অর্ধ শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।”

বিবৃতিতে বলা হয়, “জামায়াতে ইসলামী মনোনীত স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী আবু তালেব মন্ডল স্বয়ং এই আক্রমণে নেতৃত্ব দিয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারকালে জামায়াত নেতাকর্মীরা তাদের সহজাত ধর্মীয় প্রলোভন ও জান্নাতের টিকেট বিক্রির মত আপত্তিকর বিষয়কে নির্বাচনী প্রচারের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করায় ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষ তার প্রতিবাদ করলে জামায়াত কর্মীরা তাদের উপর মারমুখী আক্রমণ করে। 

‘পরবর্তীতে বিএনপির শান্তিপূর্ণ প্রচাররত নেতাকর্মীরা অতর্কিতে বিনা প্ররোচনায় তাদের আক্রমণের শিকার হন। দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় প্রকাশিত ছবিতে জামায়াত কর্মী তুষারকে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে আক্রমণরত দেখা গেছে। অথচ দুয়েকটি গণমাধ্যমে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রকাশ করছে। সহিংসতায় এই ঘটনার মাধ্যমে দলটির উগ্রতার নগ্ন চিত্র দেশবাসীর সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিএনপি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক চর্চার প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। 

‘অপরদিকে অযৌক্তিক দাবী দাওয়ার মাধ্যমে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিঘ্নিত করার অপচেষ্টা জনগণ প্রত্যাখান করায় মরিয়া এই দলটি এখন সশস্ত্র আক্রমণের ঘৃন্য পথ বেছে নিয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ দল শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। লক্ষ কোটি সমর্থকের দল বিএনপির এই সংযম ও ঔদার্যকে দুর্বলতা মনে করা ঠিক হবে না। শত উস্কানিতেও সংযম ও ধৈর্য প্রদর্শনে বিএনপি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, কারণ বিএনপি জানে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনিশ্চিত হলে দেশের মানুষের বহুল প্রত্যাশিত গণতান্ত্রিক উত্তরণের স্বপ্ন নিঃশেষিত হয়ে যাবে।”

বিবৃতিতে সব শেষে বলা হয়, “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত ও বিচারের আওতায় এনে আগামী জাতীয় নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সরকারি পদক্ষেপের জোর দাবি জানাচ্ছে।”

ঢাকা/নঈমুদ্দিন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ